তারাপীঠে ভিক্ষা করছিলেন প্রাক্তন BJP নেতা, সাহায্যে এগিয়ে এলেন শুভেন্দু অধিকারী! একসময় বঙ্গ বিজেপির স্বাস্থ্য পরিষেবা সেলের প্রতিষ্ঠাতা ও আহ্বায়ক ছিলেন ইন্দ্রজিৎ সিনহা, যাকে সবাই ‘বুলেট দা’ নামে চিনতেন। একসময় এলাকায় দাপটের সঙ্গে রাজনীতি করতেন। মুকুল রায়, দিলীপ ঘোষ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়দের মতো হেভিওয়েট নেতাদের সঙ্গে ছিল ওঠাবসা। অর্থ, প্রতিপত্তি—কোনো কিছুরই অভাব ছিল না তাঁর জীবনে। কিন্তু সময় বদলেছে, আর এখন পরিস্থিতি ঠিক উল্টো। একসময়ের প্রভাবশালী এই নেতা আজ দিন কাটাচ্ছেন ভিক্ষা করে! তারাপীঠে ভিক্ষা করার সেই দৃশ্য প্রকাশ্যে আসতেই চমকে ওঠেন অনেকেই। তবে এই কঠিন সময়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বঙ্গ বিজেপির দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
একসময় দলের ক্ষমতাশালী নেতা ছিলেন ইন্দ্রজিৎ সিনহা। কোনো কর্মী-সমর্থক অসুস্থ হলেই তিনি ছুটে যেতেন, রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানোর দায়িত্ব নিজেই নিতেন। দিনের পর দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তিনি, তাই সবাই তাঁকে ‘বুলেট দা’ নামে চিনত। কিন্তু এখন সেই বুলেট দাই কঠিন বাস্তবের মুখোমুখি। প্রায় দুই বছর ধরে দুরারোগ্য ক্যান্সারে ভুগছেন তিনি। প্রথমে টিউমার ধরা পড়লেও পরে জানা যায়, সেটি ক্যান্সারে রূপ নিয়েছে। চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল দূরের কথা, থাকার মতো একটা ঠিকানাও নেই। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, তারাপীঠ মহাশ্মশানে বসে ভিক্ষা করেই খাবারের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে তাঁকে। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন বিজেপির বঙ্গ দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এবার ইন্দ্রজিৎ সিনহার ভরণপোষণের দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি তারাপীঠের এক ব্যবসায়ী সাগর মণ্ডল ইন্দ্রজিৎ সিনহার দুর্দশার কথা ফেসবুকে তুলে ধরেন। তাঁর পোস্টে ইন্দ্রজিৎ সিনহার বর্তমান পরিস্থিতি এবং কঠিন বাস্তবের চিত্র স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সেই পোস্ট সামনে আসতেই বঙ্গ বিজেপি মহলে আলোড়ন পড়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে নেওয়া হয় বড় পদক্ষেপ। জানা গেছে, বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর উদ্যোগে গতকাল রাত ১২টার সময় ইন্দ্রজিৎ সিনহাকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তাঁকে মিডিকা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং সেখানে চিকিৎসা চলছে।
সাগর মণ্ডল তাঁর ফেসবুক পোস্টে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করেন। তিনি লেখেন, বুলেট দার সঙ্গে দ্বিতীয় ছবিতে যে ছেলেটিকে দেখছেন, তার সঙ্গে পরিচয় না করালে মানবিকতার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে। এই যুবকের নাম মিলন লেট, তিনি তারাপীঠেরই একজন স্থায়ী বাসিন্দা। সাধারণত মহাশ্মশানের সংলগ্ন এলাকায় লটারি বিক্রি করেন মিলন। কিন্তু গত দু’মাস ধরে তিনি ইন্দ্রজিৎ সিনহাকে নিজের কাছে রেখেছিলেন। থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন এবং খাবারের সংস্থানও করেছিলেন। সাগর মণ্ডল লেখেন, “ধন্যবাদ দিয়ে মিলনের মানবতাকে ছোট করতে চাই না। আমি শুধু কামনা করি, জগৎ জননী তারামায়ের কৃপায় মিলনের মতো মানুষের অন্তরে মানবিকতা আরও জাগ্রত হোক।