15 C
Kolkata
Monday, January 20, 2025

শিলিগুড়ির বই মেলাতে একেবারেই হতাশ উদ্যোক্তারাপাচ্ছেন না লেখক।

কুশল দাসগুপ্ত,শিলিগুড়ি: শিলিগুড়িতে পরপর দুটি বইমেলা হল। একটি শেষ হয়ে আরেকটি বইমেলা চলছে। আমাদের লেখকদের কাছে বইমেলা হল আসলে বার্ষিক পূজাপার্বণ। ফলে না চাইলেও বইমেলা বিষয়ে দু’-চারটি কথা কলমের ডগায় এসে যায়।

আমাদের হোয়াটসঅ্যাপটেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হোন -

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

আমরা ভাবি, বেসরকারি মেলায় সরকারের বাধ্যবাধকতা থাকে না। পরিবর্তন যেহেতু অপরিবর্তনীয়, বেসরকারি মেলায় সময়োপযোগী কিছু সদর্থক বদল আনা সম্ভব। কিন্তু বাস্তব চিত্র দেখি উলটো। বইমেলায় শাড়ি, গয়না এবং ক্রমবর্ধমান খাদ্যসামগ্রীর দোকান একত্রে বিস্ময় ও হতাশা উদ্রেক করে।

বইমেলায় বাণিজ্যিক তুলাদণ্ডে লক্ষ্মীর সঙ্গে সঙ্গে সরস্বতীর আবাহন থাকে। ফলে পুরোটাই বাজার ধরার লক্ষ্য হলে অতি দুঃখের বিষয়। যে মেলা উদ্বোধনে তাবড় লেখক-সাহিত্যিকরা এসেছেন, সুভাষ মুখোপাধ্যায় থেকে গতবার স্বপ্নময় চক্রবর্তী, সেখানে উদ্যোক্তারা লেখক খুঁজে পান না?

সরকারি মেলায় নানা রকমের বিধিনিষেধ, লাল ফিতের বিষয় থাকে, কিন্তু বেসরকারি মেলায় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকে মেলার সংগঠক বই বিক্রেতাদের ওপর। তাঁরা যদি লেখকদের বিষয়ে খোঁজখবর না রাখেন, তাহলে মেলাটা করেন কেন? বিশেষ কোনও প্রকাশনার দাস নন তাঁরা। ক্ষুদ্র পত্রপত্রিকা থেকে অবাণিজ্যিক গ্রন্থ, পত্রিকা একটি ভাষার পুষ্টি জোগায়। নিম্নবর্গের বিষয়ে রচিত লেখা পত্র, দলিত সাহিত্য- এসবের গুরুত্ব বইমেলা কর্তৃপক্ষকে বুঝতে হবে। সর্বাধিক বিক্রি তো একদা বটতলার বইও হত।

আমরা অনেকেই জানি সোশ্যাল মিডিয়ায় মন্তব্য, পছন্দ ইত্যাদি টাকা দিয়ে কেনা যায়। রবীন্দ্রনাথের জীবদ্দশায় তাঁর বইয়ের বিক্রি কেমন ছিল, উৎসাহী পাঠক খোঁজ নিতে পারেন। তাহলে তো এই বিচারে রবিঠাকুর সম্পূর্ণ বাদ!

মুখে আমাদের উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণ তথা কলকাতা দ্বারা বঞ্চিত, অবহেলিত ইত্যাদি বলবেন, আর বিশেষ উৎসবের সময় সেখান থেকেই কাউকে ধরেবেঁধে নিয়ে আসতে হবে, এমন দ্বিচারিতা শেষ হওয়া উচিত।

অন্যান্য মেলার বিষয়ে আমার বিশেষ কিছু বলার নেই। কিন্তু কলকাতা বইমেলার পর পশ্চিমবঙ্গে প্রথম বইমেলাটি হয় শিলিগুড়ি শহরে। আমার পিতৃদেব প্রয়াত হরেন ঘোষ মহাশয় দিনরাত এক করে এই মেলার পিছনে পড়ে থাকতেন। এখন এসব দেখেশুনে মনে হয়, তাতে তাঁর কিছু ব্যক্তিগত গৌরববৃদ্ধি হয়নি, নিজস্ব লেখালেখি ও পরিবারকে দেওয়া সময় নষ্ট হয়েছে।

এটি ব্যক্তিগত অসূয়ার বিষয় নয়, লেখকের বয়স এখানে বিচার্য বিষয়ও নয়, কী লিখছেন তিনি, সেটাই বড় কথা। যেখানে লিখিত আকারে কবিতা, গল্প- তাও আবার বাংলা ভাষায়, ধীরে ধীরে সংখ্যালঘুর শিল্প হয়ে উঠছে, সেখানে বড়-ছোট সব প্রকাশকরা প্রায় জীবন বাজি রেখে লড়াই করে যাচ্ছেন। সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে পাঠক বলে আর কিছু নেই, প্রত্যেকেই লেখক এবং বিনা পয়সায় সেখানে তাঁরা তাঁদের লেখাগুলি বিলিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে অনলাইনে অল্প টাকা দিয়ে বই পাওয়া যাচ্ছে। কিভাবে চলবে বইমেলা? তাই হতাশ উদ্যোক্তারা।

আমাদের হোয়াটসঅ্যাপটেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হোন -

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

JK Official
JK Official
বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত থাকার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেইসঙ্গে গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে JKNews24 এর সঙ্গে কাজ করছি। বিশেষ করে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ঘটনা, এবং সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে চর্চা ও বিশ্লেষণ করতে ভালোবাসি।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

24,000FansLike
3,000FollowersFollow
2,300SubscribersSubscribe

POPULAR POST

Top Collection