JKNEWS24 BANGLA নিউজ ডেস্কঃ ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক উত্তপ্ত? ভারতীয় বিমানবাহিনী রাজস্থানে ভারত-পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সীমান্তরেখা বরাবর বিশাল এক সামরিক মহড়া শুরু করতে যাচ্ছে। মঙ্গলবার (৬ মে) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই মহড়া বুধবার রাত ৯টা থেকে শুরু হয়ে শুক্রবার ভোর ৩টা পর্যন্ত চলবে।
ভারতীয় বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা শিগগিরই একটি পূর্বনির্ধারিত নিয়মিত প্রশিক্ষণ মহড়া পরিচালনা করতে চলেছে। এই মহড়ার সময়সীমা আগেভাগেই ঠিক করা ছিল এবং এটি রুটিন ট্রেনিং-এর অংশ। তবে মহড়ার সময় সীমান্তের কাছাকাছি যেসব বিমানবন্দর রয়েছে, সেগুলোর উড্ডয়ন ও অবতরণ কিছু সময়ের জন্য সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হবে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, এটি একটি পূর্বনির্ধারিত নিয়মিত প্রশিক্ষণ অনুশীলন হলেও, কাশ্মীরের পেহেলগাম হামলার পরবর্তী উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে এই মহড়াকে অনেকেই শক্তি প্রদর্শনের বার্তা হিসেবে দেখছেন।
খবরে জানা গেছে, সামরিক মহড়ার পাশাপাশি গোটা দেশজুড়ে প্রায় ৩০০টি স্থানে ‘সিভিল ডিফেন্স’ বা বেসামরিক প্রতিরক্ষা অনুশীলন শুরু হয়েছে—যা সত্যিই অনেক বছর পর ঘটছে। এমন আয়োজন ১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর এই প্রথম দেখা যাচ্ছে। এই ধরনের মহড়া মূলত সংবেদনশীল ও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা যেমন সেনাঘাঁটি, তেল শোধনাগার, পারমাণবিক কেন্দ্র এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামোর আশপাশে চালানো হচ্ছে।
এর আগে আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো বৈঠক করেছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, পহেলগাম হামলার পর কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে, তা নিয়ে বিভিন্ন স্তরে চলছে আলোচনা—আর সেই প্রক্রিয়ারই অংশ এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকগুলো।
এদিকে পাকিস্তান জানিয়েছে, তারা সোমবার সফলভাবে ‘ফাতাহ’ নামের একটি দেশীয়ভাবে তৈরি ভূমি-থেকে-ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে যার পাল্লা ১২০ কিমি পর্যন্ত। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের দাবি, এই মিসাইল পরীক্ষা তাদের ‘যুদ্ধের কার্যক্ষমতা যাচাইয়ের’ অংশ ছিল এবং এটি ‘এক্সারসাইজ ইন্ডাস’ নামের একটি সামরিক মহড়ার অন্তর্ভুক্ত।
এই মহড়ার নামকরণই অনেক কিছু বলে দিচ্ছে—এটা শুধুই একটি অনুশীলন নয়, বরং কৌশলগত বার্তা বহন করছে, এমনটাই মনে করছেন অনেকেই। কারণ এর পেছনে সাম্প্রতিক ভূরাজনৈতিক টানাপোড়েনও জড়িত।
দিল্লির পক্ষ থেকে ইন্দাস পানি চুক্তি স্থগিত করার পর ইসলামাবাদ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এমনকি পাকিস্তান একে ‘যুদ্ধের ঘোষণা’ বলেও আখ্যা দেয়। এই উত্তেজনার আবহেই ভারত পরপর একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে এবং উন্নত প্রযুক্তির জলতলের মাইনও পরীক্ষা করেছে, যা শত্রু জাহাজের শব্দ, চৌম্বকীয় তরঙ্গ ও চাপের তারতম্য চিনে নিতে পারে।
এরই মাঝে ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ঘটে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা, যাতে প্রাণ হারান ২৬ জন নিরীহ পর্যটক। এই হামলার জন্য ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করলেও, ইসলামাবাদ পাল্টা দাবি করেছে—এটি আসলে ভারতের নিজস্ব ‘ফলস ফ্লাগ’ অপারেশন।