নারীর সাজের অন্যতম অনুষঙ্গ হচ্ছে লিপস্টিক। লিপস্টিক ঠোঁটের পাশাপাশি মুখের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয়। অনেকের ধারণা, ঠোঁটে প্রতিদিন লিপস্টিক লাগালে ঠোঁট কালো হয়ে যায়।
তবে চিকিৎসকরা বলছেন, কিছু কিছু লিপস্টিকে এমন কিছু রাসায়নিক উপাদান থাকে, যা আমাদের ঠোঁটের মতো সংবেদনশীল অঙ্গের ক্ষতি করতে পারে। তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই — সব লিপস্টিক কিন্তু ক্ষতিকর নয়। লিপস্টিক মাখলে কার ঠোঁটে ক্ষতি হবে, তা অনেকটাই নির্ভর করে যিনি ব্যবহার করছেন তার ঠোঁটের স্বাস্থ্যের ওপর। যেসব সমস্যা থাকলে গাঢ় রঙের লিপস্টিক ব্যবহার না করায় ভালো-
শুষ্ক ঠোঁটের সমস্যা : শুষ্ক ঠোঁটের সমস্যা অনেকের কাছেই বেশ পরিচিত। কিছু লিপস্টিক এমন থাকে, যেগুলো ব্যবহার করলে ঠোঁট আরও শুকিয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে যাদের ত্বক এমনিতেই শুষ্ক, তাদের জন্য এই সমস্যা একটু বেশি ভোগান্তির হয়ে দাঁড়ায় — ঠোঁট ফেটে যায়, টান টান লাগে, এমনকি ব্যথাও হতে পারে। তবে সব লিপস্টিক কিন্তু এমন নয়। যেসব লিপস্টিকের উপাদানে প্রাকৃতিক তেল বা মাখন থাকে — যেমন শিয়া বাটার, কোকো বাটার, কিংবা ভিটামিন ই — সেগুলো ঠোঁটকে নরম আর আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে।
অ্যালার্জি : যাদের ত্বক সংবেদনশীল বা নানা রকম রাসায়নিকের প্রতি অ্যালার্জি রয়েছে, তাদের লিপস্টিক ব্যবহারে একটু বাড়তি সতর্কতা দরকার। কারণ সব লিপস্টিকেই একই ধরনের উপাদান থাকে না — কিছু কিছু উপাদান ত্বকে র্যাশ, চুলকানি বা জ্বালাভাবের কারণ হতে পারে। তাই নতুন কোনো ব্র্যান্ডের লিপস্টিক বা প্রসাধনী ব্যবহার করার আগে ‘প্যাচ টেস্ট’ করে নেওয়া খুব জরুরি।
কালচে ছোপ : ঠোঁটে কালচে দাগ বা ছোপ পড়া একটা সাধারণ সমস্যা, যার পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। কারও ক্ষেত্রে এটা জিনগত, আবার কারও ক্ষেত্রে শারীরিক নানা কারণে এমন হতে পারে। রোদে বেশি বের হলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিও ঠোঁটের রঙ বদলে দিতে পারে। তাই শুধুই লিপস্টিক ব্যবহারের জন্য এমন হচ্ছে— এমনটা ভাবার দরকার নেই।
কী করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে?
হাইড্রেশন : ঠোঁটের আর্দ্রতা বজায় রাখতে পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে। ত্বকের জন্য নিরাপদ, অতিবেগুনি রশ্মি থেকে সুরক্ষা দিতে পারে এমন ‘লিপবাম’ ব্যবহার করতে হবে।
এক্সফোলিয়েশন : ঠোঁট নরম আর স্বাস্থ্যজ্জ্বল রাখতে হলে মাঝে মাঝে এক্সফোলিয়েশনটা খুবই দরকার। এতে ঠোঁটের ওপর জমে থাকা মৃত কোষগুলো সহজে উঠে যায়, আর ঠোঁটও হয়ে ওঠে মসৃণ ও প্রাণবন্ত। তবে হ্যাঁ, স্ক্রাব ব্যবহার করার সময় একটু সাবধান থাকতে হবে। স্ক্রাবের দানা যেন খুব শক্ত না হয়—নইলে ঠোঁটে ছোট ছোট কাটা পড়ে যেতে পারে বা ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে।
প্রাইমার : লিপস্টিক দেওয়ার আগে ঠোঁটে প্রাইমার ব্যবহার করা একেবারে ভুলে গেলে চলবে না!এই ছোট্ট স্টেপটাই কিন্তু ঠোঁটকে অনেক বড় ক্ষতি থেকে বাঁচাতে পারে। লিপস্টিকে থাকা কিছু রাসায়নিক উপাদান নিয়মিত ব্যবহারে ঠোঁটে কালচে দাগ ফেলে দিতে পারে।