দুধ বা পানিতে হলুদ মিশিয়ে খেলে কি সত্যিই সৌন্দর্য বাড়ে, প্রকৃতপক্ষে, সৌন্দর্য শুধু উজ্জ্বল গায়ের রং, দীঘল চুল বা বাহারি চাকচিক্যের ব্যাপার নয়; এটা আসলে অন্তরাত্মার প্রশান্তি ও ভালো থাকার এক মিশ্রণ। অকৃত্রিম সৌন্দর্য পেতে হলে আমাদের জীবনধারা হতে হবে স্বাস্থ্যকর। পুষ্টিকর খাবারদাবার, পর্যাপ্ত তরল গ্রহণ, ঠিকঠাক ঘুম আর মানসিক শান্তি—যেকোনো একটির ব্যাঘাত ঘটলেই নষ্ট হতে পারে সৌন্দর্য। তবে, এসবের বাইরে নিয়মিত একটু যত্ন নেওয়া ও নিজের প্রতি ভালোবাসা দেখানোও প্রয়োজন।
হলুদ দিয়ে তৈরি করা পানীয় সত্যিই স্বাস্থ্যকর। এবং আয়ুর্বেদ মতে, হলুদ এমন এক উপাদান যা রক্তের প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি ত্বক ও চুলের সুস্থতার জন্যও উপকারী। তবে, এর মানে এই নয় যে হলুদ মেশানো পানীয় খেলে হঠাৎ করে কারো গায়ের রং বদলে যাবে বা চুল গজাবে। হারমনি স্পার আয়ুর্বেদিক রূপবিশেষজ্ঞ এমনটাই জানিয়েছেন, অর্থাৎ এই পানীয়টি মূলত স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, তবে সৌন্দর্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এর প্রভাব কিছুটা সীমিত।
সকালে খেতে পারেন হলুদ মেশানো পানি
হলুদকে এক ইঞ্চি করে কেটে ছোট ছোট টুকরা করে নিন। তারপর এক গ্লাস পানি, ৭-৮টি পুদিনাপাতা, এক টেবিল চামচ লেবুর রস এবং সামান্য বিটলবণ নিন। সব উপকরণ একসঙ্গে ব্লেন্ড করে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। চাইলে এক চা-চামচ মধুও যোগ করতে পারেন, যা পানীয়টির স্বাদ আরও মিষ্টি করবে। প্রতিদিন সকালে নাশতার আধা ঘণ্টা পর এই পানীয়টি খেয়ে নিন। এটি শুধু ত্বক ও চুলের সুস্থতা নয়, শরীরের সার্বিক সুস্থতাতেও সাহায্য করবে।
কিংবা রাতে দুধ-হলুদে তৈরি পানীয়
হলুদ বাটা নিন এক টেবিল চামচ বা এক ইঞ্চি করে ছোট ছোট টুকরা করে ব্লেন্ড করে নিন। এরপর এক গ্লাস উষ্ণ দুধে এই বাটা বা ব্লেন্ড করা হলুদ ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। চাইলে এক চা-চামচ মধুও যোগ করতে পারেন। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে এই পুষ্টিকর পানীয়টি খেলে তা আপনার শরীরকে আরাম দেবে এবং সুস্থতার জন্য সহায়ক হবে।
প্রচলিত সামাজিক ভাবনার জালে অনেকেই সৌন্দর্যের প্রকৃত অনুভূতিটা হারিয়ে ফেলেন। আপনি যাই ব্যবহার করুন বা সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য যেকোনো উপকরণ গ্রহণ করুন, তবুও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল আপনার অন্তরাত্মার যত্ন নেওয়া। সত্যিকারের সৌন্দর্য পেতে হলে, জীবনধারায় শান্তি আনা জরুরি। যন্ত্রের ওপর নির্ভরতা কমান, সময়মতো ঘুমান এবং সকালে প্রাতঃকৃত্য শুরু করুন। সময়ের সদ্ব্যবহার করুন, আপনার সম্পর্কগুলোকে গুরুত্ব দিন, আর জীবনকে উপভোগ করুন। পৃথিবীর সৌন্দর্য দেখুন, এবং মনে রাখুন—সত্যিকারের সৌন্দর্য একসময় আপনার কাছে নিজেই ধরা দেবে।