Home Remedies Of Gas Acidity: জীবনের গতি যত বাড়ছে, আমাদের খাবারের অভ্যাসও হয়ে উঠছে অনিয়মিত, যার প্রভাব পড়ছে শরীরের উপর। এরই মধ্যে একটি সাধারণ কিন্তু বিরক্তিকর সমস্যা হয়ে উঠেছে অ্যাসিডিটি। বেশিরভাগ সময় অস্বাস্থ্যকর খাবার, অনিয়মিত খাওয়ার সময়, অতিরিক্ত চিন্তা, ব্যায়ামের অভাব, বা ধূমপানই এর প্রধান কারণ। কিন্তু খুশির খবর হলো, এই সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য কিছু সহজ কিন্তু কার্যকরী পদক্ষেপ রয়েছে যা আপনাকে বদহজমের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
Table of Contents
অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি পাওয়ার ঘরোয়া উপায়
অ্যাসিডিটি এবং গ্যাস্ট্রিকের অস্বস্তি একটি সাধারণ হজম সমস্যার মধ্যে পড়ে, যা নানা কারণে হতে পারে—যেমন খারাপ খাদ্যাভ্যাস, স্ট্রেস, অথবা জীবনযাপনের ধরন। যদিও এই সমস্যা উপশম করার জন্য বাজারে অনেক ওষুধ পাওয়া যায়, তা নিয়মিতভাবে খাওয়া শরীরের জন্য দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর হতে পারে। তবে কিছু সহজ এবং প্রাকৃতিক ঘরোয়া প্রতিকার রয়েছে, যা অ্যাসিডিটি এবং গ্যাস্ট্রিকের অস্বস্তি থেকে মুক্তি দিতে সহায়তা করতে পারে।
সময় মেনে খাবার খান
প্রতি দিন একসময়েই ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ এবং ডিনার করার চেষ্টা করুন। খাবারের পরিমাণ অল্প রাখুন, তবে বার বার খান। খাবারের মাঝে তিন-চার ঘণ্টার সময়ের ব্যবধান রাখলে খাবার হজম হওয়া সহজ হয়ে যাবে। এই ছোট ছোট পরিবর্তনগুলো আপনার হজম প্রক্রিয়াকে অনেক বেশি সুষম এবং সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।
চা-কফির বদলে গ্রিন টি পান করুন
চা বা কফি বাদ দিয়ে গ্রিন টি-তে ভরসা রাখুন। গ্রিন টি আপনার মেটাবলিজম বাড়িয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে। দুধ চা এড়িয়ে চলা ভালো, কারণ এতে অ্যাসিডিটি বাড়তে পারে। আর মাঝে মাঝে ডায়েট তালিকায় ডাবের পানি রাখতে ভুলবেন না, এটি শরীরের জন্য দারুণ উপকারী।
লেবুর রস দিয়ে গরম পানির সাথে দিন শুরু করুন
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন। এটি শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করবে এবং শরীরে পানির মাত্রাও ঠিক রাখতে সাহায্য করবে। এই অভ্যাসটি আপনার হজমকে উন্নত করতে এবং পুরো দিনের জন্য আপনি সতেজ অনুভব করবেন।
আপেল সাইডার ভিনেগার
অম্লীয় প্রকৃতি থাকা সত্ত্বেও আপেল সাইডার ভিনেগার পাকস্থলীর অ্যাসিডের মাত্রা ভারসাম্য রাখতে এবং অ্যাসিডিটি কমাতে সাহায্য করতে পারে। এক গ্লাস পানিতে এক থেকে দুই টেবিল চামচ কাঁচা এবং ফিল্টার না করা আপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে নিন। এটি খাবারের আগে বা গ্যাস্ট্রিকের অস্বস্তি দেখা দিলে পান করলে উপকারে আসবে। তবে মনে রাখবেন, জ্বালাপোড়া এড়াতে ভিনেগার সঠিকভাবে পাতলা করতে হবে। এটি পান করার আগে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
ওষুধ না খেয়েও কমাতে পারেন অ্যাসিডিটির সমস্যা
পুদিনা পাতা: পুদিনা পাতার রয়েছে বায়ুনিরোধক এবং পেট ঠান্ডা করার চমৎকার গুণ। এটি বুক ও পেটের জ্বালাপোড়া, পেট ফাঁপা এবং বমি ভাবও দ্রুত উপশম করতে সাহায্য করে। তাই যদি অ্যাসিডিটির কোনো লক্ষণ দেখা দেয়, তবে কয়েকটি পুদিনা পাতা মুখে নিয়ে চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে পারেন, অথবা এক কাপ পানিতে ৪-৫টি পুদিনা পাতা দিয়ে ফুটিয়ে খেতে পারেন। চাইলে একটু মধুও যোগ করতে পারেন, যা স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি আরও উপকারি হবে।
আদা: আদার রস পাকস্থলীর অ্যাসিড কমাতে খুবই সাহায্য করে। যদি অ্যাসিডিটির সমস্যা থাকে, তাহলে এক টুকরো আদা মুখে রাখতে পারেন, অথবা এক কাপ পানিতে কয়েক টুকরো আদা দিয়ে কিছু সময় ফুটিয়ে নিয়ে খেতে পারেন। আর যদি আরও সহজ করতে চান, তাহলে দিনে ২-৩ বার এক চা চামচ আদার রস খেলে অ্যাসিডিটির সমস্যায় অনেকটা মুক্তি পাবেন।
জিরে: পাকস্থলীর অ্যাসিড নিরপেক্ষ করে পেটের ব্যথা দূর করতে এবং হজমের কাজ সহজ করতে জিরে অত্যন্ত কার্যকরী। আপনি দেড় কাপ জলে এক চা চামচ জিরে, ধনে, মৌরী গুঁড়ো এবং সামান্য চিনি মিশিয়ে খালি পেটে খেতে পারেন। অথবা এক গ্লাস জলে সামান্য জিরে গুঁড়ো মিশিয়ে ফুটিয়ে ছেঁকে নিয়ে খাবারের পর খেতে পারেন।
লবঙ্গ: লবঙ্গ পাকস্থলীর অ্যাসিডিটি ও গ্যাস দূর করতে বেশ কার্যকরী। ২-৩টি লবঙ্গ মুখে রেখে চুষে খেলে বা সমপরিমাণ এলাচ ও লবঙ্গ গুঁড়ো উষ্ণ জলে মিশিয়ে খেলে অ্যাসিডিটির জ্বালা কমে যাবে এবং মুখের দুর্গন্ধও দূর হবে। এটি একটি সহজ এবং প্রাকৃতিক উপায় যা আপনার পেটের সমস্যাগুলি অনেকটা উপশম করতে সাহায্য করবে।