Kolkata Metro Ticket New Rule: কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ গত ১৯ নভেম্বর একটি নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে। নির্দেশিকা অনুযায়ী, নর্থ-সাউথ লাইনের ১৫টি স্টেশনে দিনের নির্দিষ্ট সময়ে নগদ লেনদেন পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। সেই সময়ে যাত্রীরা শুধুমাত্র ইউপিআই বা অন্য কোনও ডিজিটাল পেমেন্ট পদ্ধতির মাধ্যমে টিকিট কাটতে পারবেন।
কলকাতা মেট্রো ধীরে ধীরে স্টেশনগুলির টিকিট লেনদেন পুরোপুরি ডিজিটাল করার পরিকল্পনা করছে। আনন্দবাজার পত্রিকার একটি রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৯ নভেম্বর মেট্রো কর্তৃপক্ষ একটি নির্দেশিকা জারি করেছে।
নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, নর্থ-সাউথ লাইনের ১৫টি স্টেশনের টিকিট কাউন্টারগুলিতে নির্দিষ্ট সময়ে নগদ লেনদেন বন্ধ রাখা হবে। ওই সময় শুধুমাত্র ইউপিআই (UPI) বা অন্যান্য ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে টিকিট কাটার সুবিধা পাওয়া যাবে। যাত্রীরা চাইলে স্বয়ংক্রিয় টিকিট ভেন্ডিং মেশিন থেকেও টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক শুরু হয়েছে।
কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী, ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত পাইলট প্রোজেক্ট হিসেবে ডিজিটাল লেনদেনের এই নতুন নিয়ম কার্যকর থাকবে। প্রকল্পটি শুরু হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে। কিন্তু এরই মধ্যে যাত্রীদের নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
যাত্রীদের অভিযোগ:
অনেকেই মেট্রোর যাত্রী ‘টেক-স্যাভি’ নন, ফলে ডিজিটাল লেনদেন করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন। আবার যারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে অভ্যস্ত, তারাও কিছুটা বিরক্ত। কারণ একাধিক টিকিট কাটতে গেলে বারবার কিউআর কোড স্ক্যান করতে হচ্ছে, যা সময়সাপেক্ষ।
অটোমেটিক ভেন্ডিং মেশিনের চ্যালেঞ্জ:
স্বয়ংক্রিয় টিকিট ভেন্ডিং মেশিন থেকেও সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। এই মেশিনে টিকিটের নির্দিষ্ট মূল্য দিতে হয়, কারণ অতিরিক্ত টাকা দিলে তা ফেরত পাওয়ার কোনও ব্যবস্থা নেই। ফলে অনেক যাত্রী এই নিয়মে অসন্তুষ্ট।
দেশজুড়ে ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতার মধ্যেও, মেট্রোর টিকিট সংক্রান্ত নতুন নিয়ম যাত্রীদের মধ্যে বিরাট অস্বস্তি তৈরি করেছে। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের তথ্যানুযায়ী, দেশে মোট লেনদেনের মাত্র ২০ শতাংশই ডিজিটাল মাধ্যমে হয়ে থাকে। তা সত্ত্বেও, কলকাতা মেট্রোর ডিজিটাল লেনদেনের উপর জোর দেওয়া যাত্রীদের জন্য বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার যতীন দাস পার্ক স্টেশনে পরিস্থিতি পরিদর্শনে আসেন মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার পি উদয়কুমার রেড্ডি। সেখানে তিনি যাত্রীদের তীব্র প্রশ্নের মুখে পড়েন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আরপিএফ কর্মীদের হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল।
মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি অনুযায়ী, প্রায় ৩৩ শতাংশ লেনদেন বর্তমানে ডিজিটাল মাধ্যমে হচ্ছে। তবে অভিযোগ উঠেছে, ভবিষ্যতে মেট্রো টিকিট কাউন্টার পুরোপুরি বন্ধ করার প্রস্তুতি হিসেবেই এই নতুন নিয়ম চালু করা হয়েছে। যাত্রীদের উপর ডিজিটাল লেনদেন চাপিয়ে দেওয়ার এই পদক্ষেপ নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে।