দেশের অন্যতম ব্যস্ততম রেলস্টেশন শিয়ালদহ (Sealdah) প্রতিদিন লাখো যাত্রীর চলাচলের কেন্দ্রবিন্দু। গড়ে প্রায় ১৫ থেকে ১৮ লক্ষ মানুষ এই স্টেশন দিয়ে যাতায়াত করেন, আর সেই সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। যাত্রীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে ভারতীয় রেল নিয়মিত ট্রেনের সংখ্যা বাড়াচ্ছে, তবে সম্প্রতি যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে, তা হলো মহিলা যাত্রীদের সংখ্যা।
রেলের সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, শিয়ালদহ মেন, শিয়ালদহ উত্তর এবং শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার লোকাল ট্রেনে প্রতিদিন প্রচুর মহিলা যাত্রী যাতায়াত করছেন। তাদের যাত্রা আরও স্বচ্ছন্দ ও নিরাপদ করতে এবার এক নতুন উদ্যোগ নিতে চলেছে রেল।
মহিলা যাত্রীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে ভারতীয় রেল বেশ কিছু লাইনে চালু করেছিল মাতৃভূমি লোকাল, যা একেবারেই মহিলাদের জন্য নির্দিষ্ট ট্রেন। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না! কারণ, রেলপথে মহিলা যাত্রীদের সংখ্যা এতটাই বেড়েছে যে শুধুমাত্র মাতৃভূমি লোকাল দিয়ে আর চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না।
এই ক্রমবর্ধমান চাপ সামাল দিতে রেল কর্তৃপক্ষ এবার নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। এবার থেকে শিয়ালদহের প্রতিটি লোকাল ট্রেনে আরও একটি বগি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হবে। এর ফলে মহিলা যাত্রীরা আরও সহজে যাতায়াত করতে পারবেন, আর তাঁদের নিরাপত্তাও আরও জোরদার হবে।
পূর্ব রেলের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ভারতের অন্যতম ব্যস্ততম রেলওয়ে জংশন হল শিয়ালদহ ডিভিশন। বিশেষ করে অফিস টাইমে ভিড় থাকে চরমে—প্রতিটি লোকাল ট্রেনে গড়ে প্রায় ৩,০০০ যাত্রী ওঠেন! শিয়ালদহ ডিভিশনের লোকাল ট্রেন মূলত দুই ভাগে চলাচল করে—একটি অংশ ডায়মন্ড হারবার, নামখানা-সহ দক্ষিণের রুটে যায়, আর অন্যটি রানাঘাট, কৃষ্ণনগর, বনগাঁ, গেদে-সহ উত্তরের রুটে চলাচল করে। যাত্রীদের সুবিধার্থে, আপাতত প্রতিটি লোকাল ট্রেনের দুই প্রান্তে একটি করে মোট দুটি মহিলা কামরা রাখা হয়েছে, যেখানে শুধুমাত্র মহিলারাই উঠতে পারেন।
অন্যদিকে লোকাল ট্রেনের আর দু’প্রান্তের তৃতীয় কোচের অর্ধেক অংশেও মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত করে দেওয়া হচ্ছে। সবমিলিয়ে আগে যেখানে ৯ বগির ইএমইউ লোকাল ট্রেনগুলোতে দুটি কোচ মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত থাকত। এখন নতুন ১২ বগির ইএমইউ ট্রেনে সংরক্ষণের সংখ্যাটা তিন হবে। আর ভারতীয় রেলের এই নয়া উদ্যোগে বেশ খুশি মহিলা যাত্রীরা। তবে বগীর সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি ভারতীয় রেল সুরক্ষার দিকটাও বিবেচনা করেছে। জানা গিয়েছে অনেক সময়ই ট্রেনে পর্যাপ্ত আরপিএফ মোতায়েন থাকে না বলে অভিযোগ ওঠে। এবার তাই সেই বিষয়ে নজর দেবে রেল।