কেউ গিয়েছিলেন ছেলেকে কাশ্মীরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখাতে, আবার কেউ নববিবাহিত জীবন শুরু করতে হানিমুনে গিয়েছিলেন। কিন্তু গত মঙ্গলবার পহেলগাঁওয়ের সেই সবুজ ঘাসে মোড়া বুগিয়ালটি যেন এখন এক ভয়াবহ স্মৃতি হয়ে রইল। সেখানে এখন রক্তের দাগ যেন এখনও রয়ে গেছে। বিগত কয়েক বছরে জম্মু ও কাশ্মীর কখনোই এমন ভয়ংকর জঙ্গি হামলার সাক্ষী হয়নি। এমন করে রক্তাক্ত হয়নি উপত্যকা, যেখানে ঝাউবন, বরফের পাহাড় এবং অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্যের মাঝে একে-৪৭-এর গর্জন শুনে শিউর হতে হয়। গতকাল পহেলগাঁওয়ে এই জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন, যাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো জীবনের সবচেয়ে সুখময় মুহূর্তে ছিলেন।
সূত্রের খবর, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় প্রায় ৮-১০ জন সন্ত্রাসবাদী জড়িত থাকতে পারে। তাদের মধ্যে ৫-৭ জন হতে পারে পাকিস্তানের। স্থানীয় যে ক’জন ছিল, তারাও নিয়ন্ত্রণরেখআ পেরিয়ে ওপার থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে৷ মূলত স্থানীয় ওই যুবকদের সাহায্যেই হত্যালীলা চালানোর পরে জঙ্গিরা পাহাড়ের জঙ্গলে পালিয়ে যেতে পেরেছে বলে মনে করা হচ্ছে৷
পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলার কয়েক ঘণ্টা কেটে গেলেও পরিস্থিতি এখনও সংকটময়। মনে করা হচ্ছে, আশপাশের জঙ্গলের মধ্যে এখনও জঙ্গিরা লুকিয়ে থাকতে পারে, এবং তাদের খোঁজে সেনা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ইতিমধ্যেই জম্মু ও কাশ্মীরে পৌঁছে গেছেন। আজ, বুধবার তিনি আহতদের সাথে হাসপাতালে দেখা করতে যাবেন এবং ঘটনাস্থলও আকাশপথে পরিদর্শন করবেন। তাঁর এই সফরের মাধ্যমে সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আরও উৎসাহিত করা হবে।
জম্মু-কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় মঙ্গলবারের জঙ্গিহানার ঘটনায় অন্তত ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রধারী হামলাকারীরা সংখ্যায় ছিল পাঁচ-ছ’জন। ঘটনাচক্রে, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সের ভারত সফর এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সৌদি আরব সফরের সময়টিকেই হামলার জন্য বেছে নিয়েছে সন্ত্রাসবাদীরা। পাক জঙ্গিগোষ্ঠী লশকর-ই-ত্যায়বার ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ) মঙ্গলবার রাতে ঘটনার দায় স্বীকার করেছে।