লাইসেন্স ছাড়া টোটো চলবে না: টোটো (Electric rickshaw) আজকের দিনে যোগাযোগ ব্যবস্থার এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে। শহর, শহরতলি, এমনকি গ্রামের মাটিতেও টোটোর দৌড়ঝাঁপ লক্ষ করা যায়। আরামদায়ক আসন, সাশ্রয়ী ভাড়া—এই দুইয়ের সমন্বয়ে টোটো এখন সাধারণ মানুষের যাতায়াতের প্রথম পছন্দ।
তবে, এই টোটো পরিষেবা নিয়ে মাঝেমধ্যেই নানা ধরনের অভিযোগ শোনা যায়। রাস্তার উপর দখল করে টোটোর ছুটে চলা থেকে শুরু করে ট্র্যাফিক সমস্যার কারণ হয়ে ওঠা—এমন অনেক বিষয়ই প্রশাসনের নজরে এসেছে। এই সমস্যা মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে টোটো পরিষেবা নিয়ে বড় মাপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
যদি আপনি একজন টোটো চালক হন বা প্রতিদিন টোটোতে চড়েন, তাহলে এই প্রতিবেদনটি আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন? আর তা কেমনভাবে প্রভাব ফেলবে সাধারণ মানুষের ওপর? বিস্তারিত জানতে আমাদের সঙ্গেই থাকুন।
টোটো নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত প্রশাসনের
এখন নিশ্চয়ই ভাবছেন, টোটো নিয়ে রাজ্য প্রশাসন কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে? তাহলে জানিয়ে রাখি, এবার থেকে টোটোগুলির রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর মানে, প্রতিটি টোটোকে বৈধ নথি থাকতে হবে। এখানেই শেষ নয়, টোটো চালকদের জন্য আলাদা করে লাইসেন্স রাখাও আবশ্যিক করা হয়েছে। প্রশাসন জানিয়েছে, এর মাধ্যমে যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি টোটো পরিষেবার মানোন্নয়ন করা হবে। তবে, যাঁরা এই নির্দেশ মানবেন না, তাঁদের জন্য প্রশাসনের তরফে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। কোনো চালক যদি নিয়ম না মানেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাই সমস্যা এড়াতে নিয়ম মেনে চলাই একমাত্র পথ।
জেলা জুড়ে বেড়ে চলেছে টোটোর দৌরাত্ম
সব টোটোর রেজিস্ট্রেশন এবং চালকদের লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করার নির্দেশিকা ইতিমধ্যেই জারি করা হয়েছে। এই বিষয়ে বাঁকুড়ার আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক ইন্দ্রনীল চক্রবর্তী জানিয়েছেন, “টোটোর রেজিস্ট্রেশন ও চালকদের লাইসেন্স করানোর জন্য সদ্য দফতরের নির্দেশিকা এসেছে। আমরা এই নিয়ে কাজ শুরুর পরিকল্পনা করছি। পাশাপাশি, টোটোর জন্য নির্দিষ্ট রুটও তৈরি করা হবে।”
টোটো চালকদের অনুমতি দেওয়ার আগে তাঁদের জন্য কমপক্ষে ১০ দিনের একটি প্রশিক্ষণ ও পরীক্ষা নেওয়া হবে। এর মাধ্যমে চালকদের দক্ষতা যাচাই করা হবে এবং তাঁদের নিয়ম মেনে চলার বিষয়ে সচেতন করা হবে।
অন্যদিকে, বাঁকুড়া শহরে টোটো চালানোর জন্য প্রায় ১৩০০টি আবেদন জমা পড়েছে বলে জানিয়েছেন বাঁকুড়ার উপপুরপ্রধান হিরালাল চট্টরাজ। তবে শহরের রাস্তায় ২,০০০ টোটো চলাচল করলে যানজট ও দুর্ঘটনার আশঙ্কা নিয়ে বাসিন্দারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
প্রশাসনের এই উদ্যোগ একদিকে যেমন শহরের টোটো পরিষেবা নিয়মের মধ্যে আনতে সাহায্য করবে, তেমনই রাস্তায় শৃঙ্খলা বজায় রাখার চ্যালেঞ্জও তৈরি করবে। আপনাদের কী মনে হয়? এত সংখ্যক টোটো রাস্তায় চললে যানজট সামলানো সম্ভব হবে?