জাকারবার্গের দাবি: ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ সম্প্রতি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (সিআইএ) বা অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলো হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজ পড়তে পারে। তাঁর মতে, যদি কোনো ব্যবহারকারীর স্মার্টফোন বা ডিভাইস তাদের হাতে যায়, তাহলে সেই ডিভাইসের তথ্য বা বার্তাগুলি সরাসরি অ্যাকসেস করা সম্ভব। সম্প্রতি ‘দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্স’ পডকাস্টে এই দাবিটি করেন তিনি। সেখানে তিনি মার্কিন সরকারের নজরদারি এবং এনক্রিপশন ব্যবস্থার দুর্বলতা নিয়ে আলোচনা করেন।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের আয়োজন নিয়ে রোগানের এক প্রশ্নের উত্তরে এই মন্তব্য করেছেন ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। টাকার কার্লসন যিনি তিন বছর ধরে ব্যর্থ হওয়ার পর অবশেষে পুতিনের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান। তবে কার্লসন অভিযোগ করেন, তার এই প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত করার জন্য মার্কিন কর্তৃপক্ষ—বিশেষ করে এনএসএ এবং সিআইএ—দায়ী। তিনি দাবি করেন, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা তার ব্যক্তিগত যোগাযোগে হস্তক্ষেপ করেছে।
জাকারবার্গ স্পষ্টভাবে বলেন, হোয়াটসঅ্যাপের এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন কারণে ব্যবহারকারীর মেসেজের বিষয়বস্তু মেটা সার্ভারের মাধ্যমে পড়া বা দেখা সম্ভব নয়। তবে এই ফিচার ডিভাইসে থাকা ডেটা সুরক্ষিত রাখে না। তিনি আরও বলেন, এনক্রিপশন এমনভাবে কাজ করে যে পরিষেবা পরিচালনাকারী কোম্পানি মেসেজের বিষয়বস্তু দেখতে পারে না। তবে তিনি স্বীকার করেছেন, যদি কর্তৃপক্ষ ডিভাইসে থাকা দুর্বলতাগুলোর সুবিধা গ্রহণ করে, তবে এই সুরক্ষা বাইপাস করা সম্ভব হতে পারে।
সরাসরি ডেটার অ্যাকসেস পায় স্পাইওয়্যার টুলস
মার্ক জাকারবার্গ স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, পেগাসাসের মতো স্পাইওয়্যার টুলগুলো গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর জন্য ডিভাইসের ডেটা সরাসরি অ্যাকসেস করতে সাহায্য করে। এই টুলগুলো কোনো যোগাযোগে হস্তক্ষেপ না করেও এনক্রিপ্টেড মেসেজ পড়তে, ছবি দেখতে এবং কলের ইতিহাস পর্যন্ত অ্যাকসেস করতে সক্ষম।
এটি ডিজিটাল যোগাযোগ প্ল্যাটফর্মগুলোর সম্ভাব্য ঝুঁকি এবং নিরাপত্তার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলে ধরে। ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা রক্ষা করতে এই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও উন্নত করার প্রয়োজনীয়তা জোরালোভাবে তুলে ধরা হয়েছে। বর্তমানে ডিজিটাল যুগে, যেখানে প্রতিনিয়ত নতুন চ্যালেঞ্জ সামনে আসছে, ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে।
ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা রক্ষায় বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। জাকারবার্গ জানান, তারা ‘ডিসঅ্যাপিয়ারিং মেসেজেস’ নামে একটি সুবিধা চালু করেছে, যার মাধ্যমে মেসেজগুলো নির্দিষ্ট সময় পর মেসেজগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে মুছে যায়। এর ফলে ডিভাইসে সংবেদনশীল ডেটার পরিমাণ কমে যায়।
২০২১ সালে এফবিআইয়ের (এফবিআই) একটি নথি প্রকাশ পেয়েছে। এই নথি থেকে বোঝা যায়, এজেন্সিগুলো হোয়াটসঅ্যাপ এবং আইমেসেজের মতো প্ল্যাটফর্মে এনক্রিপ্টেড মেসেজে কিছুটা প্রবেশ করতে পারে। যেমন—ক্লাউড ব্যাকআপ বা ডিভাইস অ্যাকসেসের মাধ্যমে।
তথ্যসূত্র: নিউজবাইট ও উইওনিউজ