অবশেষে পরিকল্পনা অনুযায়ী রাজ্যে আজ থেকে শুরু হল SIR বা ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়া। ২০০২ সালের পর এই প্রথমবার বাংলায় SIR অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তাই সেই বছরের ভোটার তালিকাকেই এবার ভিত্তি হিসেবে ধরেছে নির্বাচন কমিশন। তবে শুরু থেকেই এই SIR নিয়ে রাজ্যে একের পর এক বিতর্ক দানা বেঁধেছে। অভিযোগ উঠছে, এই প্রক্রিয়াকে ঘিরে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, যার জেরে ইতিমধ্যেই আত্মঘাতী হয়েছেন ৭ জন। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়েছে যে, মাথাভাঙ্গার (Mathabhanga) এক গ্রামে স্থানীয়দের বাধার মুখে পড়ে শেষমেশ কাজ ফেলে সেখান থেকে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন দু’জন BLO কর্মী।
বাঁধার মুখে পড়লেন মাথাভাঙ্গার ২ বিএলও (Mathabhanga)
আজ, মঙ্গলবার থেকেই রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে বাড়ি বাড়ি ঘুরে এনুমারেশন ফর্ম বিলির কাজ। সকাল থেকেই তাই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন বিএলও-রা। কিন্তু সেই ব্যস্ততার মধ্যেই মাথাভাঙ্গায় ফের উত্তেজনা ছড়াল SIR নিয়ে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুরে মাথাভাঙ্গা ১ ব্লকের পচাগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের ডাংকোবা গ্রামে বিএলও হিসেবে কাজ করতে যান মামনি খাতুন ও আর্জুমান খাতুন। তাঁদের গ্রামে ঢুকতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, গ্রামবাসীদের বাধার মুখে পড়ে দুই বিএলও শেষ পর্যন্ত কাজ না করেই ফিরে যেতে বাধ্য হন। এর ফলে ওই এলাকার SIR কার্যত ব্যাহত হয়েছে। শুধু তাই নয়, SIR-এর বিরোধিতা জানিয়ে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা পথ অবরোধও করেন।
কেন এই বাঁধা স্থানীয়দের?
মাথাভাঙ্গায় (Mathabhanga) আজ বুথ লেভেল অফিসারদের কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা সরব হন। তাঁদের অভিযোগ, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় গ্রামের দুটি বুথে যেখানে ৮৪৬ জন ভোটারের নাম ছিল, বর্তমানে সেই সংখ্যাটি নেমে এসেছে মাত্র ৪২১-এ। বাকি নামগুলো বাদ পড়েছে বলে দাবি তাঁদের। গ্রামবাসীদের স্পষ্ট বক্তব্য, এই বাদ পড়া নামগুলির তালিকা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। যতদিন তাঁদের এই দাবি পূরণ না হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত বিএলও-রা যতবার গ্রামে আসবেন, ততবারই তাঁদের কাজে বাধা দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, গ্রামবাসীরা প্রশাসনের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, এর আগেও দু’বার পথ অবরোধ করে প্রতিবাদ জানানো হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও উদ্যোগ বা সুরাহা মেলেনি।
এদিনের পথ অবরোধের জেরে মাথাভাঙ্গা–চ্যাংড়াবান্ধা রোডের দুই প্রান্তে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়েছে, বহু যানবাহন মাঝরাস্তায় আটকে পড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন যাত্রী ও চালকেরা। খলিলুর রহমান নামের এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘২০০২ সালে আমরা ভোট দিয়েছি, অথচ এখন আমাদের নাম ভোটার তালিকায় নেই। তিন মাস আগে বিষয়টি জানিয়ে প্রশাসনকে ডেপুটেশন দিয়েছিলাম। তখন আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল ৪ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ তালিকা নিয়ে কাজ শুরু হবে। কিন্তু অসম্পূর্ণ তালিকা নিয়েই SIR প্রক্রিয়া শুরু করতে এসেছে প্রশাসন। তাই এই প্রক্রিয়া মানব না।”
সব খবর
🔴 প্রতিনিয়ত সর্বশেষ খবর পেতে এখনই Google-এ সার্চ করুন “JKNEWS24 Bangla”। পাশাপাশি, আরও দ্রুত আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন JKNEWS24 WhatsApp Channel — প্রতিদিনের গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ এক ক্লিকে পৌঁছে যাবে আপনার মোবাইলে!


