বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার নোবেল শান্তি পুরস্কার ২০২৫ (Nobel Peace Prize 2025) এ বছর অর্জন করেছেন এক সাহসী নারী – ভেনেজুয়েলার গণতন্ত্র রক্ষার প্রতীক মারিয়া কোরিনা মাচাদো (Maria Corina Machado)। নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি জানিয়েছে, একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধেও তিনি অবিচল থেকেছেন এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই চালিয়ে গেছেন। মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার এই নিরন্তর প্রচেষ্টাই তাঁকে এনে দিয়েছে বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ সম্মান, নোবেল শান্তি পুরস্কার।
কে এই মারিয়া কোরিনা মাচাদো?
বেশ কয়েকটি রিপোর্টে জানা গিয়েছে, মারিয়া কোরিনা মাচাদো একজন ভেনেজুয়েলার রাজনীতিবিদ এবং শিল্প প্রকৌশলী, যিনি বর্তমানে দেশের প্রধান বিরোধী নেত্রী হিসেবে পরিচিত। তবে তাঁকে শুধু রাজনীতিবিদ বললে ভুল হবে, কারণ তিনি ভেনেজুয়েলার গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম প্রধান মুখ। দীর্ঘদিন ধরেই দেশের একনায়ক নিকোলাস মাদুরোর সরকারের বিরুদ্ধে তিনি সরব, মানবাধিকার রক্ষা ও স্বাধীন নির্বাচনের দাবিতে অক্লান্তভাবে লড়ে যাচ্ছেন। তাঁর এই দৃঢ় অবস্থান ও সাহসী নেতৃত্ব তাঁকে শুধু ভেনেজুয়েলাতেই নয়, সারা বিশ্বের গণতন্ত্রপ্রেমীদের কাছে এক অনুপ্রেরণার প্রতীক করে তুলেছে।
প্রসঙ্গত, মারিয়া কোরিনা মাচাদো একসময় ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট প্রার্থীও ছিলেন। কিন্তু সরকারের তীব্র চাপে তাঁকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে বাধ্য করা হয়। তবুও তিনি থেমে যাননি; বরং আরও দৃঢ়ভাবে সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছিলেন। তাঁর অটল মনোবল ও নেতৃত্বে একসময় বিভক্ত বিরোধী দলগুলি একত্রিত হয়ে নতুন উদ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নেমেছিল। তাঁর এই অদম্য লড়াইই আজ তাঁকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের যোগ্য করে তুলেছে।
কেন তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হল?
প্রসঙ্গত, নোবেল কমিটি জানিয়েছে, ভেনেজুয়েলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা এবং একনায়কতন্ত্র থেকে শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রামের জন্যই ২০২৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে মারিয়া কোরিনা মাচাদোকে। নোবেল কমিটির চেয়ারম্যানও উল্লেখ করেছেন, মাচাদো রাজনৈতিক বিরোধীদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি এমন একজন নেত্রী, যিনি শুধু লড়াই করেননি, বরং মানুষের মধ্যে আশার আলো জ্বালিয়েছেন এবং গণতন্ত্রের পথে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছেন।
সব খবর
প্রসঙ্গত, ভেনেজুয়েলা বর্তমানে রাজনৈতিক আর অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত। একদিকে সরকারের কড়া দমননীতি, অন্যদিকে নাগরিকদের অধিকারের চেষ্টা নিয়ে আন্দোলন দিনের পর দিন দেশটিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। আর এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে মাচাদো সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এজন্যই তাঁকে বিশ্বের সর্বোচ্চ সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে।


