হাতে গোনা কয়েকটা মাস পরেই বাংলায় শুরু হতে চলেছে বিধানসভা নির্বাচন, আর তার আগে থেকেই রাজ্যজুড়ে শুরু হচ্ছে রাজনৈতিক তরজার পারদ চড়া। কালীপুজোর পরই শুরু হবে স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন প্রক্রিয়া, যা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে তোলপাড়। বিজেপি এই পদক্ষেপে সায় দিলেও, অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলির মতে এটি আসলে ঘুরপথে এনআরসি চালুর চেষ্টা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার এই বিষয়ে সরব হয়ে সতর্কবার্তাও দিয়েছেন। আর এবার সেই হুঁশিয়ারির জবাবে সরাসরি পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah), যা ঘিরে আরও বেড়েছে রাজনৈতিক উত্তেজনা।
মমতার হুঁশিয়ারির পাল্টা জবাব শাহের
কিছুদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, বাংলায় SIR প্রক্রিয়ায় যদি কারও নাম বাদ যায়, তিনি রাস্তায় নেমে আন্দোলন করবেন। সেই মন্তব্য ঘিরে ইতিমধ্যেই চর্চা শুরু হয়েছিল রাজনৈতিক মহলে। এবার সেই প্রসঙ্গেই মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। এক সাংবাদিক বৈঠকে তাঁকে যখন মমতার ওই মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হয়, তখন অমিত শাহ বলেন, “বিহারেও তো একই হুমকি দেওয়া হয়েছিল। তারপর কী হল? সবাই কাগজ জমা দিল, ভোটও হচ্ছে।” এরপর তিনি আরও একধাপ এগিয়ে জানান, “প্রথমে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা হবে, তারপর তাদের ভোটার তালিকা থেকে নাম মুছে ফেলা হবে, আর শেষে নির্বাসিত করা হবে। যাদের নাম বাদ যাবে বা যারা অনুপ্রবেশকারী, তাদের কোথায় পাঠানো হবে, কীভাবে পাঠানো হবে, সেটা সময়ই বলবে। আপনারা শুধু অপেক্ষা করুন।”
উপযুক্ত জবাব রাহুল গান্ধীকেও!
এদিন SIR নিয়ে শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দলকেই আক্রমণ করেননি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah), পাশাপাশি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তিনি। অমিত শাহ বলেন, “দেশে SIR এই প্রথমবার হচ্ছে না। ১৯৫৩ সালেই প্রথমবার এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। অর্থাৎ রাহুল গান্ধীর ঠাকুমার বাবা, ঠাকুমা, বাবা ও মায়ের সময়েও SIR হয়েছে।” এরপর তিনি আরও যোগ করেন, “SIR মানে ভোটার তালিকার শুদ্ধিকরণ। দীর্ঘ ১০ থেকে ১৫ বছর পর দেখা যায়, অনেকেই মারা গেছেন বা অন্যত্র চলে গিয়েছেন। তাঁদের নাম অনেক সময় দু’জায়গার ভোটার তালিকায় থেকে যায়। তাই এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেই ভুলগুলো সংশোধন করা জরুরি।”
যদিও বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বারংবার অভিযোগ তুলে আসছে যে, মুসলিমদের বেছে বেছে নাকি বাদ দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। সেই প্রসঙ্গেও এবার সরাসরি মুখ খুললেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, “মুসলমান অথচ অনুপ্রবেশকারী হলেও তাদের কি ভোটাধিকার থাকা উচিত? শুধু মুসলমান বলে তাদের কি অন্যায় অধিকার দেওয়া উচিত? রাহুল গান্ধী তাহলে প্রকাশ্যে একথা বলুন। অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে যারা ধর্মকে আনছে তারা ভুল করছে। তারা গণতন্ত্রের জন্য খুব বিপজ্জনক।”
সব খবর


