রহান, কলকাতা: বছর ঘুরলেই বঙ্গে ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। তাই তড়িঘড়ি শুরু হয়ে গিয়েছে নির্বাচনের ব্যাপক প্রস্তুতি। কিন্তু তার আগেই SIR বা ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন কর্মসূচি নিয়ে বিতর্ক চরম আকার ধারণ করেছে (SIR Hearing)। যদিও সব বিতর্ক কাটিয়ে এইমুহুর্তে SIR প্রক্রিয়ায় এনুমারেশন পর্বের কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন SIR শুনানিতে (SIR Hearing) কী কী নথি নিয়ে যেতে হবে।
SIR সংক্রান্ত শুনানিতে দরকার কোন কোন নথি? (SIR Hearing)
জানা গিয়েছে, এখনও SIR সংক্রান্ত নানা আলোচনা আর প্রশ্নে সাধারণ মানুষ বেশ ধন্দে রয়েছেন—বিশেষ করে শুনানিতে ডাকলে আধার কার্ড ছাড়া কোন কোন নথি নিয়ে যাওয়া বাধ্যতামূলক, সেই প্রশ্নটাই সবচেয়ে বেশি ঘুরে বেড়াচ্ছে। এবার সেই জট খুলে স্পষ্ট জানিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন। তারা জানিয়েছে, যদি কোনও ভোটার কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারের কর্মী হন, অথবা পেনশনপ্রাপ্ত হন, তাহলে সেই পরিচয়পত্রও প্রমাণ হিসেবে নেওয়া হবে। পাশাপাশি জন্মসনদ, পাসপোর্ট, জাতিগত সার্টিফিকেট, সরকারের দেওয়া জমির নথি, বাড়ির দলিল বা পরচা, স্বীকৃত বোর্ড বা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট—এমনকি মাধ্যমিকের সার্টিফিকেটও এই তালিকায় গ্রহণযোগ্য নথির মধ্যে পড়ে।
দেখাতে হবে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি
এছাড়াও জানা গেছে, SIR সংক্রান্ত শুনানিতে ডাক পেলে ভোটাররা রাজ্য সরকারের দেওয়া পার্মানেন্ট রেসিডেন্স সার্টিফিকেট বা স্থানীয় প্রশাসনের তৈরি ফ্যামিলি রেজিস্টার সঙ্গে নিতে পারবেন। যে সব রাজ্যে ইতিমধ্যেই NRC চালু হয়েছে, সেখানে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির নথিও প্রমাণ হিসেবে দেখানো যাবে। বনাঞ্চলে বসবাসকারী ভোটারদের ক্ষেত্রে বন অধিকার শংসাপত্র গ্রহণযোগ্য নথির তালিকায় রাখা হয়েছে। এর পাশাপাশি, ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগে ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, LIC বা স্থানীয় প্রশাসনের যে কোনও সরকারি নথিও পরিচয়প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা হবে বলে কমিশন জানিয়েছে।
ভুল নথি পেশে দিতে হবে জরিমানা
SIR নিয়ে মানুষের আরেকটি বড় প্রশ্ন হল—যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে জাল নথি জমা দেয়, তাহলে তার শাস্তি কী হতে পারে? এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৩৩৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী নথি জাল করার প্রমাণ পাওয়া গেলে সর্বোচ্চ ৭ বছর পর্যন্ত জেল এবং জরিমানা হতে পারে। পাশাপাশি কারও নাম যদি খসড়া ভোটার তালিকায় না থাকে এবং শুনানিতেও ডাক না আসে, তাহলে ফর্ম ৬-এর Annexure 4 ফিলআপ করে নতুন করে নাম তোলার আবেদন করতে হবে। প্রয়োজন মনে করলে এরপর ERO সংশ্লিষ্ট ভোটারকে সাক্ষ্যের জন্য ডাকতে পারেন।
প্রসঙ্গত, গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার রাতেই ডেডলাইন মেনে সুসম্পন্ন হয়েছে এনুমারেশন পর্ব। ওইদিনই সকালে ২৫টি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারি এজেন্সির কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন সিইও মনোজ আগরওয়াল, বিশেষ রোল পর্যবেক্ষক সুব্রত গুপ্ত-সহ কমিশনের শীর্ষকর্তারা। মূলত রাজ্যে নির্বাচনের আগে নিয়মিত নজরদারি, তথ্য সংগ্রহ এবং প্রস্তুতি নিয়ে পারস্পরিক যোগাযোগ আগাম ঝালিয়ে নিতেই এই বৈঠক।








