ফাস্ট ফুড বা জাংক ফুড পছন্দ করেন না—এমন মানুষ পাওয়া সত্যিই কঠিন! ছোট থেকে বড়, সবাই কমবেশি এই খাবারের ভক্ত। কিন্তু আসল প্রশ্ন হলো, জাংক ফুড কি সত্যিই আমাদের শরীরের জন্য ভালো? নিয়মিত জাংক ফুড খেলে শরীরে কী ধরনের প্রভাব পড়ে? চলুন, জেনে নেওয়া যাক!
Table of Contents
জাংক ফুড স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দেয়?
এক গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত জাংক ফুড খাওয়ার ফলে স্মৃতিশক্তি কমে যেতে পারে! হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন ড. ডাবলু টেলার কিম্বার্লি ও তার দল, যা প্রকাশিত হয়েছে নিউরোলজি জার্নালে।
গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত জাংক ফুড খাওয়া শুধু ওজন বাড়ায় না, বরং শরীরের আরও নানা ক্ষতি করতে পারে। এটি স্থূলতা, হৃদরোগসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়ানোর পাশাপাশি মস্তিষ্কের ওপরও খারাপ প্রভাব ফেলে। নতুন তথ্য অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ধরে জাংক ফুড খেলে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে!
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, যেসব খাবার বেশি প্রক্রিয়াজাত করা হয়, সেগুলো ধীরে ধীরে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আলট্রা প্রসেসড খাবার খেলে স্ট্রোকের ঝুঁকি প্রায় ৮ শতাংশ বাড়ে, আর জাংক ফুড নিয়মিত খেলে এই ঝুঁকি বেড়ে দাঁড়ায় ১০ শতাংশে! সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হলো, এতে স্মৃতিশক্তি হ্রাসের সম্ভাবনাও ১৬ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।
প্রক্রিয়াজাত খাবার কী?
যেসব খাবার তৈরির সময় স্বাদ ও টেক্সচার বাড়ানোর জন্য মেশিনের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রক্রিয়া করা হয়, সেগুলোকে বলা হয় অতিপ্রক্রিয়াজাত খাবার। এই প্রক্রিয়ার ফলে খাবারের প্রাকৃতিক ফাইবার, প্রোটিন এবং খনিজ উপাদান অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়। সাধারণত আলুর চিপস, সোডা, এনার্জি ড্রিংক, চিকেন নাগেটস, ইনস্ট্যান্ট স্যুপ মিক্স, কেচাপসহ আরও অনেক জনপ্রিয় খাবার এই তালিকায় পড়ে।
🔴 প্রতিনিয়ত সর্বশেষ খবর পেতে এখনই Google-এ সার্চ করুন “JKNEWS24 Bangla”। পাশাপাশি, আরও দ্রুত আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন JKNEWS24 WhatsApp Channel — প্রতিদিনের গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ এক ক্লিকে পৌঁছে যাবে আপনার মোবাইলে!
Q1. স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর উপায়?
সুস্থ থাকতে দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় ফল, শাকসবজি ও গোটা শস্য রাখুন। এগুলো শরীরকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ ও আঁশ সরবরাহ করে। প্রোটিনের উৎস হিসেবে বেছে নিন মাছ, মটরশুটি ও চামড়াবিহীন মুরগি, যেগুলো কম চর্বিযুক্ত এবং হৃদ্স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো। পাশাপাশি, আপনি কী পান করছেন সেটিও সমান গুরুত্বপূর্ণ—পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং অতিরিক্ত অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন, কারণ এটি বিভ্রান্তি, মনোযোগের ঘাটতি এবং স্মৃতিশক্তি হ্রাসের কারণ হতে পারে।
Q2. না খেলে কি স্মৃতিশক্তির ক্ষতি হয়?
গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘ সময় ধরে উপবাস করলে শরীরে মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ১০ দিন ধরে উপবাস রাখলে শরীরে তীব্র দুর্বলতা, অস্বাভাবিক ইলেক্ট্রোএনসেফালোগ্রাম (EEG) এবং স্মৃতিশক্তি ও সতর্কতা হ্রাস দেখা যায়। আবার, যদি ১০ দিন ধরে প্রতিদিন মাত্র ৪২০ কিলোক্যালরি কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করা হয়, তাহলেও মস্তিষ্কে একই ধরনের অস্বাভাবিক EEG প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
Q3. কলা খেলে কি স্মৃতিশক্তি বাড়ে?
কলা শুধু শক্তির উৎস নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত উপকারী। এতে রয়েছে ট্রিপটোফ্যান, একটি গুরুত্বপূর্ণ অ্যামিনো অ্যাসিড, যা শরীরে গিয়ে সেরোটোনিনে রূপান্তরিত হয়। সেরোটোনিন মস্তিষ্কে “হ্যাপি হরমোন” হিসেবে কাজ করে, যা মেজাজ উন্নত করে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও, কলায় থাকা বিভিন্ন ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান জ্ঞানীয় ক্ষয় রোধে সহায়তা করে, ফলে স্মৃতিশক্তি হ্রাসের ঝুঁকি কমে যায়।
Q4. ডিম খেলে কি স্মৃতিশক্তি বাড়ে?
পরিমিত পরিমাণে আস্ত ডিম খাওয়া সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কদের জ্ঞানীয় ক্ষমতা উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ডিম খাওয়া ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমাতে এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে ভূমিকা রাখতে পারে।
