ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ফসলি জমিতে হাঁস যাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নারী-শিশুসহ প্রায় অর্ধশত মানুষ আহত হয়েছেন। মূলত, এটি ছিল পুরোনো শত্রুতার জের, যা হাঁস যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বড় সংঘর্ষে রূপ নেয়। শুক্রবার (২৮ মার্চ) বিকেলে উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের ঘুজিয়াখাইল গ্রামে আরাফাত উল্লাহ্র বিলাতী ও রেনু মিয়ার চিড়ার গোষ্ঠীর মধ্যে কয়েক দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতরা নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের ঘুজিয়াখাইল গ্রামে আরাফাত উল্লাহ্র বিলাতী গোষ্ঠী ও রেনু মিয়ার চিড়ার গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। মাসখানেক আগে জমিতে হাঁস ধান খাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এর জেরে উভয়পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা-মোকদ্দমাও করেছে।
শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর, পূর্ব শত্রুতার জেরে ফুটবল হারানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে পূর্বপাড়ার চিড়ার গোষ্ঠীর সামসু মিয়ার সঙ্গে বিলাতী গোষ্ঠীর জমসেদ মিয়া ও তার ছেলেদের তর্কাতর্কি হয়। কথা কাটাকাটির বিষয়টি দ্রুত দুই গোষ্ঠীর অন্যদের মাঝেও ছড়িয়ে পড়ে, আর মুহূর্তেই তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। একপর্যায়ে দফায় দফায় হামলা-পাল্টা হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নারী ও শিশুসহ প্রায় অর্ধশত মানুষ আহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে চাতলপাড় ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য খায়রুল ইসলাম পাঠান বলেন, “বিলাতী ও চিড়ার গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। মাত্র এক মাস আগেও জমিতে হাঁস যাওয়াকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষ হয়েছিল। গ্রামে এ নিয়ে একাধিকবার সালিশ বসানো হয়েছে, কিন্তু কোনো পক্ষই বিরোধ মেটাতে রাজি হয়নি। ফলে পরিস্থিতি বারবার উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।”
সংঘর্ষের বিষয়ে ঘুজিয়াখাইল পূর্বপাড়ার বিলাতী গোষ্ঠীর আরাফাত উল্লাহ্ বলেন, “এক মাস আগে জমির ফসল নিয়ে বিরোধের জেরে রেনু মিয়ার লোকজন আমাদের গোষ্ঠীর আয়দর আলীকে মারধর করেছিল। সে ঘটনায় আমরা মামলা করেছিলাম। বৃহস্পতিবার তারা ওই মামলায় জামিন নেয়, আর পরদিন শুক্রবার হঠাৎ করেই আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।”
চিড়ার গোষ্ঠীর রেনু মিয়া বলেন, প্রথম রোজার দিন জমিতে হাঁস যাওয়াকে কেন্দ্র করে পূর্বপাড়ার সাদেক মিয়ার সঙ্গে আয়দর আলীর ঝগড়া হয়। পরে তারা আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করে। আমরাও মামলার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম, কিন্তু বিরোধ না বাড়ানোর মানসিকতা নিয়ে আমরা শেষ পর্যন্ত এসবে যাইনি। বিষয়টি নিয়ে গ্রামে একাধিকবার সালিশও হয়েছিল, কিন্তু সমাধান হয়নি। শুক্রবার মসজিদের মধ্যে ফুটবল হারানো নিয়ে সামসু মিয়ার সঙ্গে জমসেদ মিয়া ও তার ছেলেদের তর্ক হয়। পরে জমসেদ মিয়ার লোকজন আমাদের ওপর হামলা করে।
নাসিরনগর থানার ওসি মো. খায়রুল আলম সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “প্রায় এক মাস আগে জমিতে হাঁস যাওয়াকে কেন্দ্র করে ঘুজিয়াখাইল গ্রামের বিলাতী ও চিড়ার গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। সেই পুরনো বিরোধের জেরে আজ আবার সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।”
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join JKNEWS24 Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join NEWS24 |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |