পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নবান্ন থেকে নতুন ছুটির ঘোষণা এসেছে! দেশের প্রতিটি সরকারি কর্মচারীর জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ বার্ষিক ছুটি থাকলেও, কেন্দ্রীয় ছুটির বাইরে রাজ্য সরকার নিজের মতো গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোতে আলাদা ছুটির তালিকা তৈরি করে। এই তালিকায় কেন্দ্রীয় ছুটির সঙ্গে রাজ্যের বিশেষ অনুষ্ঠান বা দিবসের জন্যও ছুটি থাকে। তাই সরকারি কর্মচারীরা এসব ছুটির দিন দেখে আগে থেকেই ঘুরে আসার পরিকল্পনা করেন। এবার জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে নবান্ন অতিরিক্ত ছুটির ঘোষণা করেছে। কেন এই ছুটি দেওয়া হচ্ছে? সরকারি অফিস কতদিন বন্ধ থাকবে? আর এই ছুটি কারা উপভোগ করতে পারবেন? সবকিছুই জানুন এখনই বিস্তারিত।
জুনে আবার ছুটি ঘোষণা করল নবান্ন
বোনাস ছুটি ঘোষণা নবান্নের
প্রতিমাস নির্দিষ্ট কিছু ছুটির বাইরে সরকারি কর্মচারীদের জন্য আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ ছুটির ব্যবস্থা থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব ছুটি রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলের বিশেষ পূজা-পার্বণের উপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়। এই সময় ওই নির্দিষ্ট এলাকার সরকারি অফিস বা কার্যালয় বন্ধ রাখার নির্দেশ আসে। তাছাড়া, রাজ্যের বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে আলাদা আলাদা বাড়তি ছুটিও সরকারি কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ থাকে, যা স্থানীয় উৎসব বা অনুষ্ঠান অনুসারে পরিবর্তিত হতে পারে।
তবে এবারে সেই সমস্ত পূজা পার্বন বা অনুষ্ঠান বাদে উপরি একটি ছুটির ঘোষণা (Holiday) করল নবান্ন। তবে হঠাৎ করে কেন বছরের মাঝখানে এমন ছুটির ঘোষণা? ছুটির খবরে খুশি হওয়ার সাথে সাথে অবাক হয়েছেন একাধিক মানুষ। কবে এই ছুটি পাবেন সেই বিষয়ে জানতে ইচ্ছে করছে তো? এই রাজ্যের সরকারি কর্মচারীরা ২০২৫ সালের জুন মাসেই পেতে চলেছেন এই দুর্দান্ত ছুটির সুযোগ। ক্যালেন্ডারে নেই অথচ কোন পুজো পার্বণের দিনও নয়, তাহলে কেন এই ছুটি? আসলে কোন পুজোপার্বণ বা অনুষ্ঠান ছাড়াই নবান্নের এই ছুটি ঘোষণার পিছনে রয়েছে এক বিশেষ কারণ।
কী কারণে ছুটি ঘোষণা করল নবান্ন?
পশ্চিমবঙ্গে আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। তার আগেই রাজ্যে উপনির্বাচন হচ্ছে। আগামী ১৯ জুন, অর্থাৎ এই বৃহস্পতিবার নদীয়ার কালীগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নবান্ন থেকে জানানো হয়েছে, যাতে ওই এলাকায় নির্বিঘ্নে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হতে পারে এবং সবাই নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন, তার জন্য সেইদিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এই নির্দেশনা নির্বাচন কমিশনের প্রেস নোট (নং ECI/PN/220/2025, তারিখ ২৫ মে, ২০২৫) থেকে এসেছে।
কাদের জন্য থাকবে এই বোনাস ছুটি?
নবান্নের তরফ থেকে উল্লেখিত নির্বাচনের জন্য ইতিমধ্যেই অফিসিয়াল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে জানানো হয়েছে, আগামীকাল অর্থাৎ ১৯ জুন ওই নির্বাচনী এলাকার সমস্ত সরকারি অফিস ও প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এর ফলে এলাকায় থাকা সবাই, এমনকি সরকারি কর্মচারীরাও সহজে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। এই ছুটির ঘোষণা করা হয়েছে Negotiable Instruments Act, 1881-এর ২৫ নং ধারা অনুযায়ী।
নদীয়া জেলার কালীগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সরকারি অফিস, সরকারী সংস্থা, কর্পোরেশন, বোর্ড, স্থানীয় প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ওই দিন সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। যারা কালীগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের স্থায়ী বাসিন্দা এবং ভোটের তালিকায় নাম রয়েছে, তারা সকলেই ওই দিনে ছুটিতে থাকবেন। এমনকি কর্মসূত্রে বাইরে থাকা যারা, তাদেরকেও ১৯ জুন সমবেত ছুটি দেওয়া হবে। এই ছুটির ঘোষণা করা হয়েছে Representation of the People Act, 1951-এর ১৩৫বি(১) ধারা অনুযায়ী। এই নিয়মে এলাকার বাসিন্দা শ্রমিকরাও ছুটির আওতায় থাকবেন।
উপসংহার
এর পাশাপাশি নির্বাচনের প্রক্রিয়া গভীর রাত পর্যন্ত যদি চলে, সেই ক্ষেত্রেও পোলিং অফিসারদের অতিরিক্ত একদিন অর্থাৎ ২০শে জুন, ২০২৫ তারিখে ছুটি দেওয়া হতে পারে। তবে পরিস্থিতির উপর নির্ভর করেই পরবর্তী ছুটি ঘোষণা করা হবে। শুক্রবারের ছুটি মঞ্জুর হলে পরপর তিনদিন ছুটি পাবেন পোলিং অফিসাররা।