প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা: বর্ষা শুরু হওয়ার আগেই পশ্চিমবঙ্গের গৃহহীন মানুষের জন্য এক বড় সুখবর এসেছে। আবাস যোজনা (PMAY) বাংলার বাড়ি প্রকল্পের মাধ্যমে নবান্ন থেকে নির্দেশ এসেছে যেন দ্রুত তাদের মাথার ওপর ছাদ তৈরি করা হয়। ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পের আওতায় ১২ লক্ষের বেশি উপভোক্তার মধ্যে প্রায় ৯ লক্ষের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ সহায়তা পৌঁছে গেছে। বাকি তিন লক্ষ উপভোক্তার ক্ষেত্রেও দ্রুতই বাড়ি তৈরির জন্য দ্বিতীয় কিস্তি অর্থাৎ ৬০ হাজার টাকা পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বর্ষার সময় গৃহহীন দরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য জীবনযাপন খুবই কষ্টকর হয়ে ওঠে। তাই এই বছর বর্ষা শুরু হওয়ার আগেই বাড়ি নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা ও বাংলার বাড়ি প্রকল্প
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের জেলা স্তরের আধিকারিকদের নিয়ে ইতিমধ্যেই আবাস যোজনা ও বাংলার বাড়ির তালিকা ও ভর্তুকির টাকা দেওয়া নিয়ে কর্মকর্তাদের একটি বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকেই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাংলার বাড়ির দ্বিতীয় কিস্তির টাকা উপভোক্তাদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। পঞ্চায়েত দপ্তরের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, শীঘ্রই পাঠিয়ে দেওয়ার কথা। এছাড়াও জেলা স্তরের আধিকারিকদের দায়িত্ব থাকবে প্রতিটি উপভোক্তার কাজের অগ্রগতি তদারকি করা এবং উপভোক্তাদের সমস্যার সমাধান করা।
বাংলার বাড়ি প্রকল্পে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা কবে দেবে?
গত ২১ মে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরেই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের টাকা বিতরণ শুরু হয়েছে। উত্তরবঙ্গের একটি সরকারি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী নিজে উপস্থিত থেকে কয়েকজন যোগ্য উপভোক্তার হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রকল্পের টাকা তুলে দেন। তবে মনে রাখতে হবে, প্রথম কিস্তির টাকা পাওয়ার পর বাড়ির নির্মাণ কাজ যদি লিনটেল (জানালা ও দরজার উপরের বিম পর্যন্ত) পর্যন্ত সম্পূর্ণ করা যায়, তবেই মিলবে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা। তাই উপভোক্তাদের উদ্দেশ্যে বার্তা, যত দ্রুত সম্ভব কাজের অগ্রগতি দেখিয়ে পরবর্তী কিস্তির টাকা পাওয়ার সুযোগ নেওয়া উচিত।
সরকারি রিপোর্ট অনুসারে, ইতি মধ্যেই ১২ লক্ষ উপভোক্তার মধ্যে ১০ লক্ষের লিনটেল পর্যন্ত বাড়ি নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এদের মধ্যে গোটা রাজ্য জুড়ে ৯ লক্ষ উপভোক্তার ব্যাংক একাউন্টে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা। তবে যে সমস্ত উপভোক্তা এখনো পর্যন্ত এই কাজ শেষ করতে পারেননি, তাদেরকে অতি শীঘ্র এই কাজ শেষ করে সরকারি দপ্তরে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাড়ি তৈরির প্রথম ধাপের কাজের অগ্রগতি নিয়ে ইতিমধ্যেই তদারকি চলছে জেলা অধিকারীদের।
কত দূর এগিয়েছে বাংলার বাড়ির কাজ?
‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের কাজ ঠিকভাবে এগোচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত করতে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার একাধিক আধিকারিক নিয়মিত তদারকিতে রয়েছেন। তাঁরা শুধু কাগজে-কলমে কাজ নয়, সরাসরি উপভোক্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে, তাঁদের সমস্যা শুনে দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করছেন। সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী, এখনও প্রায় ৩ লক্ষ উপভোক্তা রয়েছেন, যাঁরা দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাননি। এই তালিকায় মালদা, মুর্শিদাবাদ এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সবচেয়ে এগিয়ে। জানা গেছে, এই জেলাগুলিতেই তুলনামূলকভাবে বেশি সংখ্যক উপভোক্তা শীঘ্রই ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পেতে চলেছেন।
এই প্রকল্পে আর্থিক বরাদ্দ
অপরদিকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের তরফেও অতিরিক্ত প্রশাসনিক নজরদারির জন্য তহবিল থেকে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। নবান্নের তরফে, সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (PMAY Awas Yojana) বাংলার বাড়ি প্রকল্পের ০.১৬ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ রয়েছে অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ফান্ডে। এটি মূলত বাংলার বাড়ি প্রকল্পের অগ্রগতি নজরদারি করার জন্য সরকারি আধিকারিকদের বাড়ি বাড়ি যাওয়ার খরচ বহন করছে।