Aikyashree Scholarship: পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার পরিচালিত নানা ধরনের স্কলারশিপের মধ্যে অন্যতম একটি হলো ঐক্যশ্রী স্কলারশিপ (Aikyashree Scholarship)। আমাদের রাজ্যের বহু দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়ে পড়াশোনায় খুবই ভালো, কিন্তু অর্থের অভাবে অনেক সময়ই তারা উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণ করতে পারে না। সেই সমস্ত মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়াতেই রাজ্য সরকার চালু করেছে এই অসাধারণ স্কলারশিপ প্রকল্পটি।
এই স্কলারশিপ মূলত পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের (Minority Communities) ছাত্রছাত্রীদের জন্য। অর্থাৎ মুসলিম, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন এবং পার্সি সম্প্রদায়ের পড়ুয়ারা এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন। ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া গত ২৫ জুন থেকে শুরু হয়েছে। যেসব পড়ুয়ারা এই স্কলারশিপের জন্য যোগ্য, তারা যেন দেরি না করে সময়মতো আবেদন করে নেন।
Table of Contents
Aikyashree Scholarship 2025
২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের সংখ্যালঘু মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এই স্কলারশিপ এ আবেদন প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছাত্রছাত্রীরা যাতে স্কুলে যাওয়ার জন্য উৎসাহিত হয় এবং উচ্চশিক্ষা (Higher Education) গ্রহণ করে, তার জন্যই এই স্কলারশিপ (Minority Scholarships) শুরু করেছে রাজ্য সরকার (WB Govt.)। রাজ্যের সংখ্যা লঘু উন্নয়ন ও অর্থনিগম (WBMDFC) দ্বারা এই স্কলারশিপ পরিচালনা করা হয়। তাহলে চলুন, আর বেশি দেরি না করে স্কলারশিপ এ আবেদনের যোগ্যতা গুলি মিলিয়ে দেখে নেওয়া যাক।
ঐক্যশ্রী স্কলারশিপে আবেদনের যোগ্যতা
ঐক্যশ্রী স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হলে কিছু মূল যোগ্যতা অবশ্যই থাকতে হবে। নিচে সেগুলি তুলে ধরা হলো:
🔸 আবেদনকারীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
অর্থাৎ যিনি আবেদন করছেন, তার বাড়ি পশ্চিমবঙ্গেই হতে হবে।
🔸 শুধুমাত্র সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছাত্রছাত্রীরা এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
যেমন – মুসলিম, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন ও পার্সি সম্প্রদায়ের পড়ুয়ারা এই স্কিমের আওতায় আসবেন।
🔸 পরিবারের বার্ষিক আয় ২ লক্ষ টাকার মধ্যে হতে হবে।
অর্থাৎ যেসব পরিবারের বার্ষিক আয় ২ লক্ষ টাকার বেশি নয়, তারাই এই স্কলারশিপের জন্য উপযুক্ত বিবেচিত হবেন।
স্কলারশিপের শ্রেণীবিভাগ
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে এই স্কলারশিপ মূলত দুই ভাগে ভাগ করে দেওয়া হয়। প্রাথমিক ভাগ- প্রি মেট্রিক স্কলারশিপ (Pre-matric Scholarship), যেখানে দ্বিতীয় শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীরা আবেদন জানাতে পারে। অপরদিকে দ্বিতীয় ভাগ- পোস্ট ম্যাট্রিক স্কলারশিপ (Post-matric Scholarship), যেখানে একাদশ শ্রেণী থেকে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রী পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীরা আবেদন জানাতে পারবে।
ছাত্র-ছাত্রীদের যোগ্যতা অনুসারে ঐক্যশ্রী স্কলারশিপের পোস্ট ম্যাট্রিক স্কলারশিপ বিভাগটিকে আবারও দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১) ঐক্যশ্রী স্কলারশিপ
যে সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা পূর্ববর্তী পরীক্ষায় ৬০ শতাংশের কম নম্বর পেয়েছেন তাদের জন্য এই স্কলারশিপে আবেদনের সুযোগ থাকছে।
২) ঐক্যশ্রী স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট কাম মিনস স্কলারশিপ (SVMCM)
পূর্ববর্তী পরীক্ষায় ৬০ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর পেলে এই স্কলারশিপের বিভাগটিতে আবেদন জানানো যাবে।
ঐক্যশ্রী স্কলারশিপে আবেদন পদ্ধতি
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ঐক্যশ্রী জন্য আবেদন পুরোপুরি অনলাইনে করা যায়। এবছর আবেদন করার শেষ তারিখ আগস্টের ৩১। তাই যারা আবেদন করতে চান এবং যোগ্য, তাদের উচিত এই সময়ের মধ্যে দ্রুত আবেদন সম্পন্ন করা। আবেদন করার জন্য আপনাদের নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে:
১. সরকারি স্কলারশিপ পোর্টালে যান
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অফিসিয়াল স্কলারশিপ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন (wbmdfcscholarship.in)।
২. নিবন্ধন করুন
যদি আপনি নতুন ব্যবহারকারী হন, তবে মোবাইল নম্বর ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করুন।
৩. লগইন করুন
রেজিস্ট্রেশন করার পরে আপনার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।
৪. আবেদন ফর্ম পূরণ করুন
আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পরিবারের আয় এবং অন্যান্য তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করুন।
৫. দরকারি ডকুমেন্ট আপলোড করুন
শিক্ষাগত সনদপত্র, পরিচয়পত্র, পরিবারের আয় সনদ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র স্ক্যান করে আবেদন ফর্মের সাথে আপলোড করুন।
৬. আবেদন যাচাই করুন
সব তথ্য ঠিক আছে কিনা ভালো করে দেখে নিন।
৭. আবেদন জমা দিন
সবকিছু ঠিক থাকলে আবেদনটি সাবমিট করুন।
৮. আবেদনের প্রিন্টআউট সংরক্ষণ করুন
আপনার আবেদন সংক্রান্ত প্রমাণ হিসেবে আবেদন ফর্মের একটি প্রিন্টআউট সংরক্ষণ করে রাখুন।
উপসংহার
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছাত্রছাত্রীদের জন্য রাজ্য সরকারের একটি অভিনব উদ্যোগ ঐক্যশ্রী স্কলারশিপ প্রোগ্রাম। এখনো পর্যন্ত বিপুল পরিমাণে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছাত্রছাত্রীরা এই স্কলারশিপের মাধ্যমে সহায়তা পেয়ে চলেছেন। তাই যোগ্য ছাত্রছাত্রীরা এই বছরের জন্য আর অপেক্ষা না করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই মেধাবৃত্তি প্রকল্পে আবেদন সেরে ফেলুন।