OBC Case: কলকাতা হাইকোর্ট সম্প্রতি ওবিসি সংরক্ষণ এবং কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ দিয়েছে, যা রাজ্যকে একটি নতুন পথের দিশা দেখিয়েছে। এই পর্যবেক্ষণের ফলে রাজ্যের ওবিসি তালিকায় থাকা পড়ুয়াদের ভর্তি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিচারপতি রাজশেখর মান্থা এবং বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে যে, ২০১০ সালের পর যে ৬৬টি সম্প্রদায়কে ওবিসি তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল, তাদের সংরক্ষণের আওতায় আনা যাবে না।
হাইকোর্টের মূল পর্যবেক্ষণ(OBC Case )
কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, রাজ্য সরকার এখন এক কঠিন দ্বিধার মুখোমুখি। একদিকে, ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে একটি স্পেশাল লিভ পিটিশন (SLP) দাখিল করেছে রাজ্য। আবার, ১৭ই জুনে কলকাতা হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে, তার বিরুদ্ধেও আরেকটি SLP জমা পড়েছে।
এই জটিল পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে কোনো বড়সড় পদক্ষেপ নেওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ তার মধ্যেই সময় চলে যাচ্ছে, এবং ভর্তি প্রক্রিয়াও বন্ধ রাখা সম্ভব নয়। সব মিলিয়ে, এক দিক সামলাতে গেলে আরেক দিক পড়ে যাচ্ছে চাপের মুখে—সরকার যেন সত্যিই এক উভয়সঙ্কটে পড়ে গেছে।
অনলাইন পোর্টালে নতুন ব্যবস্থা
ভর্তি প্রক্রিয়া যাতে স্বচ্ছ ও ঝামেলামুক্তভাবে চলে, সে জন্য হাইকোর্ট একটি নতুন নিয়ম এনেছে। এবার থেকে অনলাইনে ভর্তি পোর্টালে যখন আবেদন করবেন, তখন পড়ুয়াদের ওবিসি-এ বা ওবিসি-বি আলাদা আলাদা বিভাগে না গিয়ে শুধু ‘ওবিসি’ হিসেবেই নিজেদের পরিচয় দিতে হবে। এই নিয়মটি মূলত ২০১০ সালের আগে যেসব ৬৬টি সম্প্রদায় ওবিসি তালিকায় ছিল, তাদের জন্য প্রযোজ্য হবে।
এই নতুন ব্যবস্থার ফলে, যে সমস্ত পড়ুয়ারা ২০১০ সালের আগে ওবিসি তালিকাভুক্ত হয়েছিলেন, তারা কোনওরকম আইনি জটিলতা ছাড়াই ভর্তি হতে পারবেন। যদি সুপ্রিম কোর্ট বা হাইকোর্ট ভবিষ্যতে কোনও নতুন নির্দেশ দেয়, তাহলে উচ্চশিক্ষা দফতর প্রয়োজনে আবার পোর্টাল খুলে দেবে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজ্যের অবস্থান এবং আদালত অবমাননার মামলা
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায় মেনে চলার ব্যাপারে পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে, এই বিষয়ে একটি আদালত অবমাননার মামলাও দায়ের করা হয়েছে। সেই মামলায় রাজ্যের মুখ্য সচিবসহ অন্যান্য দায়িত্বশীলদের হলফনামা দিতে বলা হয়েছে।মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী জুলাই মাসে হওয়ার কথা।
ভবিষ্যতের পথ
কলকাতা হাইকোর্টের এই পর্যবেক্ষণের ফলে ভর্তি প্রক্রিয়া সরল হবে বলে আশা করা যায়। তবে, সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত রায়ের দিকে তাকিয়ে রয়েছে রাজ্য সরকার এবং পড়ুয়ারা। এখন দেখার বিষয়, এই নতুন ব্যবস্থা কীভাবে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রভাব ফেলে।