ওড়িশার কটক শহরে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার জেরে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে (Cuttack Violence)। শুক্রবার রাত থেকেই শহরের কয়েকটি সংবেদনশীল এলাকায় ৩৬ ঘণ্টার কার্ফু জারি করেছে প্রশাসন, যাতে পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে না যায়। সূত্র অনুযায়ী, দুর্গাপুজোর বিসর্জন মণ্ডপে এক মিছিল চলাকালীন সময়ে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের একটি বাইক র্যালির সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এরপরই শুরু হয় ব্যাপক হিংসা ও ভাঙচুর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রায় ২৫ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৮ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
কীভাবে ঘটল এই ঘটনা?
পুলিশ কমিশনার এস দেবদত্ত সিং জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় এক বিসর্জন মিছিলে ব্যক্তিগত বিবাদের জেরে বচসা শুরু হয়, যার জেরে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এরপর রবিবার কটকে অনুমোদন ছাড়াই একটি VHP বাইক র্যালি বের হয়, যা সংবেদনশীল এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল। ওই এলাকায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর আশঙ্কা থাকায় পুলিশ র্যালি থামানোর চেষ্টা করে, তখনই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। র্যালিতে অংশগ্রহণকারীরা পুলিশের দিকে পাথর ছুঁড়ে মারতে শুরু করে, আর পুলিশ লাঠিচার্জ করলে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।
এর জেরে পুলিশ কমিশনার ঘোষণা করেছে, রবিবার রাত 10টা থেকে 36 ঘণ্টা পর্যন্ত কার্ফু জারি থাকবে। তবে স্বাস্থ্যসেবা, দুধ, সবজি সরবরাহ, ছাত্র-ছাত্রী আর অফিস যাত্রীরা কার্ফুর আওতায় পড়বে না। এমনকি উড়িষ্যা পুলিশের ডিজিপি জানিয়েছেন, শান্তি নষ্ট করতে যারা এগোবে, তাদের বিরুদ্ধেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, এর আগে উড়িষ্যা সরকার কটকে 24 ঘন্টার জন্য ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিল। পাশাপাশি হোম ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, মিথ্যা ও উত্তেজনা ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক অশান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। তাই রবিবার সন্ধ্যা 7টা থেকে সোমবার সন্ধ্যা 7টা পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ রাখা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন
এদিকে, উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী মোহন মাঝি জনগণকে শান্ত ও সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “কটক হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী শহর। এই শহরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিই তার গর্ব, আর তা রক্ষা করা আমাদের সবার দায়িত্ব।” মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, যারা এই সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর সঙ্গে যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সব খবর


