জরায়ুমুখ ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণ: প্রাথমিক অবস্থায় জরায়ুমুখ ক্যানসার ধরা পড়লে পুরোপুরি সেরে ওঠা সম্ভব। যদি প্রাথমিক অবস্থার উপসর্গ গুলো জানা থাকে। তবে একজন নারী দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে পারেন এবং বহু অনাকাঙ্ক্ষিত জটিলতা থেকে বাঁচতে পারেন। তাই সচেতন হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এমন কিছু লক্ষণ জেনে নিন, যা প্রাথমিক অবস্থায় ক্যানসার শনাক্ত করতে সাহায্য করতে পারে। এছাড়া বাড়ির বয়োজ্যেষ্ঠ নারীদেরও এই বিষয়ে সচেতন করে তুলুন।
জরায়ুমুখ ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণ
অন্যান্য উপসর্গের পাশাপাশি ক্যানসার আক্রান্ত একজন নারীর অস্বাভাবিক ক্লান্তিও দেখা দিতে পারে। তাই অল্প পরিশ্রমেই প্রচণ্ড ক্লান্তি অনুভব করার মতো উপসর্গকেও অবহেলা করার সুযোগ নেই।
জরায়ুমুখ অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ
দুবার মাসিকের মাঝের সময়টায় রক্তক্ষরণ হওয়া অস্বাভাবিক। যদিও নারীর মাসিক চক্রের সময়টা একেবারে নির্দিষ্ট থাকে না, দু-তিন দিন এদিক-ওদিক হতে পারে। কিন্তু চক্রের মাঝে কোনো সময় রক্তক্ষরণ হলে সেটি অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা উচিত। মেনোপজের পরও যদি কোনো সময় রক্তক্ষরণ হয়, তবে সেটিও অস্বাভাবিক এবং তা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন।
জরায়ু অস্বাভাবিক স্রাব
জরায়ুমুখ থেকে অস্বাভাবিক স্রাব নিঃসরণ হওয়াও হতে পারে ক্যানসারের লক্ষণ। এই ক্যানসারে গোলাপি, লালচে, বাদামি কিংবা মলিন বর্ণের স্রাব দেখা দিতে পারে। বিশেষত মেনোপজের পর এ ধরনের স্রাব দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
জরায়ুমুখ অস্বাভাবিক ব্যথা
জরায়ুমুখের ক্যানসারের ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক কোমরব্যথা হতে পারে। অনেক সময় এমন কষ্টদায়ক অনুভূতি হয় যেন কোমর টেনে ধরে রাখা হচ্ছে। ক্যানসার আক্রান্ত নারীরা এই ধরনের ব্যথায় ভুগতে পারেন। এবং জরায়ু মুখের আশপাশেও ব্যথা অনুভূত হতে পারে। এসব লক্ষণ যদি দেখা দেয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
যৌনমিলনের সময় অস্বাভাবিকতা
যৌনমিলনে অভ্যস্ত একজন নারী যদি হঠাৎ যৌনমিলনের সময় অস্বাভাবিক ব্যথা অনুভব করেন, তবে সেটি অস্বাভাবিক এবং গুরুতর বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। এ ধরনের ব্যথা বা discomfort উপেক্ষা করা উচিত নয়। এছাড়া জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্ত নারীর জন্য যৌনমিলনের পরে রক্তক্ষরণও একটি সাধারণ লক্ষণ হতে পারে।
আগেই জানুন এবং সচেতন হোন
যদি এসব লক্ষণের যেকোনোটি দেখা দেয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, কারণ এই ধরনের উপসর্গ কেবল ক্যানসারেরই নয়, অন্য অনেক কারণে হতে পারে। চিকিৎসক সঠিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে কারণ খুঁজে বের করে সঠিক চিকিৎসা দিতে পারবেন।
জরায়ুমুখ ক্যানসার আক্রান্ত বহু নারীর প্রাথমিক অবস্থায় কোনো লক্ষণই দেখা যায় না, তাই স্ক্রিনিংয়ের গুরুত্ব অপরিসীম। স্ক্রিনিং হল সুস্থ ব্যক্তির শরীরে ক্যানসারের উপস্থিতি খুঁজে বের করার একটি প্রক্রিয়া। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী, ৩০ বছর বয়স থেকেই একজন নারীর জরায়ুমুখ ক্যানসার স্ক্রিনিং শুরু করা উচিত। এটি কেবল জরায়ুমুখ ক্যানসারের জটিলতা থেকে নারীদের বাঁচাতে সহায়ক নয়, বরং দ্রুত সময়ে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগও তৈরি করে।