ভাইফোঁটার রাতে শিলিগুড়ির (Siliguri) এক বেসরকারি হাসপাতালে আচমকা আগুন লেগেছে, যা শহরে তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। আতঙ্কে পড়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসাধীন রোগীদের পরিবাররা। ঘটনায় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। দমকলের একাধিক ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। দমকল কর্মীরা জানিয়েছেন, আগুনের সূত্রপাত হয়েছে শর্ট সার্কিট থেকে। অল্পের জন্য অনেক রোগী প্রাণে বেঁচে গেলেও, ICU-তে থাকা এক কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন।
ঠিক কী ঘটেছে?
রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ভাইফোঁটার রাতে শিলিগুড়ির হাকিমপাড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে আচমকাই কালো ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা ও রোগীদের পরিবাররা তাদের প্রিয়জনদের নিয়ে হাসপাতাল চত্বর থেকে একে একে নিরাপদ দূরত্বে চলে যান। প্রবল ধোঁয়ায় হাসপাতাল চত্বর ঢেকে যায়, আর নার্স, কর্মী ও রোগীর পরিবাররা আতঙ্কিত হয়ে চিৎকার শুরু করেন। যেহেতু হাসপাতালের কাছে রয়েছে শিলিগুড়ি ডেপুটি পুলিশ কমিশনার রাকেশ সিংয়ের অফিস, তাই খবর পাওয়া মাত্রই শিলিগুড়ি থানার পুলিশ দমকল কর্মীদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
গাফিলতির অভিযোগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে
ফায়ার অফিসার অপূর্ব কুমার দাস বলেন, হাসপাতালের ডায়ালিসিস ইউনিটে অগ্নিকাণ্ডের উৎপত্তি। এদিকে হাসপাতালে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকলেও দীপাবলীতে ছুটির কারণে হাসপাতালে পর্যাপ্ত কর্মী ছিল না। ফলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকলেও কেউ তা পরিচালনা করতে পারেনি। অনেক কর্মী আবার নিজেরাই আতঙ্কে পালিয়ে যায়। তাই এই ঘটনায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। কিন্তু সেই অভিযোগ মানতে নারাজ কর্তৃপক্ষ। যদিও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট ভাবে কিছু না বললেও, বিভাস ভৌমিক নামে এক আধিকারিক বলেন , “সব আছে আমাদের নার্সিংহোমে। তবে কি হয়েছে না হয়েছে তা এখনই জানা হয়নি৷” এদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পরই জানা যায় যে আইসিইউ-তে থাকা এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তবে আগুন থেকে ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টের জেরেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে নাকি অন্য কারণে, তা এখনও জানা যায়নি।
ভয়ংকর অগ্নিকাণ্ডের কারণে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ পুলিশের সহযোগিতায় নীচের তলা থেকে কয়েকজন রোগীকে দ্রুত অন্যত্র সরিয়ে নেয় নিরাপত্তার স্বার্থে। পরে দমকলের দুটি ইঞ্জিন পৌঁছে কাজ শুরু করে। এদিকে অসংখ্য রোগীর পরিবার কোনো সাহায্য পাননি, যা নিয়ে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এক রোগীর পরিবারের সদস্য অমিত পাল বলেন, “আমি আমার বউ ও সন্তানকে নিজেই ওয়ার্ড থেকে সুরক্ষিত জায়গায় স্থানান্তরিত করেছি। কোনো হাসপাতালের কর্মীর সাহায্য পাইনি। উল্টে তারা নিজেই নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছিল।” এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে শিলিগুড়ি থানার পুলিশ।
সব খবর


