ATM জালিয়াতি: এতো সতর্ক থাকা সত্ত্বেও যদি ATM থেকে ১০০ টাকা তুললেও বেরিয়ে আসে ৫০০ টাকা, তাহলে কেমন লাগে? সত্যিই এমন ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে লাখ লাখ টাকার গড়মিল ধরা পড়েছে! এই এটিএম জালিয়াতির ঘটনা (ATM Withdrawal Fraud) নিয়ে এখন ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক এর বিস্তারিত তথ্য।
ATM থেকে টাকা তোলার ঘটনার বিবরণ
গত ২৯ এপ্রিল, ২০২৫, উত্তর-পূর্ব দিল্লির হর্ষ বিহার এলাকায় একটি এটিএমে টাকা লোড করার সময় একটি চমকপ্রদ জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ১০০ টাকার নোটের ট্রেতে রাখা হয়েছিল ৫০০ টাকার ২০০০টি নোট, আর ৫০০ টাকার ট্রেতে রাখা ছিল ১০০ টাকার নোট। এই ট্রেগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে সামান্য টেনে বের করা হয়েছিল, যাতে ৫০০ টাকার ট্রেতে থাকা ১০০ টাকার নোট আটকে যায় এবং গ্রাহকের হাতে না আসে। ফলে, কেউ যখন ১০০ টাকা তুলতে গিয়েছেন, তার পরিবর্তে বের হয়েছে ৫০০ টাকার নোট!
এই ATM Fraud জালিয়াতির ফলে ১১২ জন গ্রাহক অতিরিক্ত ৮ লক্ষ টাকা তুলে নিয়েছেন। ঘটনাটি প্রকাশ পায় ১ মে, যখন কোম্পানির একজন কর্মচারী এটিএমে নগদ লোডিং এবং অডিটের জন্য যান। তিনি লেনদেনের রেকর্ড এবং নগদ ব্যালেন্স পরীক্ষা করে সন্দেহজনক কিছু লক্ষ্য করেন।
জালিয়াতির পদ্ধতি: কীভাবে হয়েছে এই কারচুপি?
পুলিশের ধারণা, এই জালিয়াতি সঠিক পরিকল্পনা করে করা হয়েছিল। দুটি এটিএম কর্মচারী, যারা টাকা লোডের দায়িত্বে ছিলেন, তারা এই কারচুপির সঙ্গে জড়িত। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নোটের ট্রেগুলোকে বদলে দেওয়া হয়েছিল — ১০০ টাকার ট্রেতে রাখা হয়েছিল ৫০০ টাকার নোট, আর ৫০০ টাকার ট্রেতে রাখা হয়েছিল ১০০ টাকার নোট।
সব খবর
পরিচিতদের মাধ্যমে লাভ
অভিযোগ, এই দুই কর্মচারী তাদের ১১২ জন পরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে এই সুবিধা নিয়েছেন, যারা অতিরিক্ত টাকা তুলেছেন। কোম্পানির অভিযোগ, এই দুই কর্মচারী ষড়যন্ত্র করে এই জালিয়াতি করেছেন। তবে একজন কর্মচারী দাবি করেছেন, তিনি অসুস্থ থাকায় এবং তাড়াহুড়োয় ভুলবশত এই নোটের অদলবদল করেছেন।
পুলিশের তদন্ত
ঘটনাটি তদন্ত করার জন্য পুলিশ এখন এটিএমের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে। কোম্পানির ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের অভিযোগের ভিত্তিতে দুই কর্মচারীর বিরুদ্ধে এফআইআরও দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ এই জালিয়াতিকে পরিকল্পিত কাণ্ড হিসেবে দেখছে এবং নিচের বিষয়গুলো ভালো করে যাচাই করছে:
- কর্মচারীদের ভূমিকা: দুই কর্মচারীর পূর্বের কাজকর্ম এবং তাদের দেয়া বক্তব্য যাচাই করা হচ্ছে।
- সিসিটিভি ফুটেজ: টাকা লোডের সময়ের ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
- পরিচিত ব্যক্তিদের তালিকা: যাঁরা অতিরিক্ত টাকা তুলেছেন, তাদের পরিচয় এবং কর্মচারীদের সঙ্গে সম্পর্ক খুঁজে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ATM Withdrawal Fraud-র তদন্ত এখনও চলছে। এই ঘটনার পেছনে অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
কোম্পানির ক্ষতি ও অভিযোগ
যে কোম্পানি এটিএমে টাকা লোডের দায়িত্বে ছিল, তারা ২৯ এপ্রিল দুই কর্মচারীকে ৩১ লক্ষ টাকা লোড করতে পাঠিয়েছিল। কিন্তু এই ATM Fraud-এর কারণে কোম্পানির ৮ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
কোম্পানির ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ দ্রুত তদন্ত শুরু করেছে। কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটিএম জালিয়াতি কেবল একটা ভুল নয়, বরং একদম পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। তাই তারা পুলিশের কাছে দ্রুত তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি তুলেছে।


