দিনের পর দিন মধ্যবিত্তের পকেটে চাপ দিয়ে লাগামছাড়া বাড়ছিল সোনা ও রুপোর দাম (Gold and Silver Price)। তবে বুধবার সকালেই সোনার দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। মঙ্গলবার সোনার দাম ৫ শতাংশের বেশি পতন রেকর্ড করেছিল, যা ২০২০ সালের আগস্টের পর প্রায় পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতন হিসেবে গণ্য হচ্ছে। বুধবার পর্যন্ত দাম আরও কমে ৪১০৯.১৯ মার্কিন ডলার প্রতি আউন্স পৌঁছেছে, যেখানে সোমবার সর্বকালের সর্বোচ্চ রেট ছিল ৪৩৮১.২১ মার্কিন ডলার প্রতি আউন্স। এবার প্রশ্ন উঠছে, আগামী দিনে দাম পতন অব্যাহত থাকবে নাকি আবার ঊর্ধ্বমুখী হবে? এই প্রতিবেদনে তাজা তথ্য ও বিশ্লেষণ দিয়ে জানানো হয়েছে বাজারের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা।
দেশীয় সোনার দাম একধাক্কায় তলানিতে
প্রসঙ্গত, ভারতের বাজারে সোনার দাম রেকর্ড স্তর থেকে একদিনের মধ্যে প্রায় ৪২৯৪ টাকা বা প্রায় ৩% পতন হয়েছে। প্রতি ১০ গ্রামে সর্বকালের সর্বোচ্চ দাম ১,৩২,২৯৪ টাকা ছুঁয়ে গেলেও এখন স্থানীয় বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১,২৮,০০০ টাকা প্রতি ১০ গ্রাম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ বছরের রেকর্ড বৃদ্ধির পর বিনিয়োগকারীরা ইতিমধ্যেই মুনাফা তুলেছেন। ২০২৫ সালের হিসাব অনুযায়ী, সোনায় বিনিয়োগকারীরা ৬০ শতাংশ পর্যন্ত রিটার্ন পেয়েছেন, যা অন্যান্য বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্জিত রিটার্নের তুলনায় অনেক বেশি। দাম হঠাৎ কমার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নতি এবং ভারত-মার্কিন বাণিজ্যের প্রভাবকে মূল কারণ হিসেবে দেখছেন।
রুপোর দামেও ভয়াবহ পতন
এদিকে বিশ্বব্যাপী রুপোর দামও অনেকটাই তলানিতে ঠেকেছে। মার্কিন বাজারে ২১ অক্টোবর রুপোর দাম ৮ শতাংশ কমেছে, যা ২০২১ সালের পর একদিনের মধ্যে সবথেকে বড় পতন। আর এখন প্রতি আউন্সে তা বিকোচ্ছে ৪৮.১১ মার্কিন ডলার, যেখানে ১৭ অক্টোবর রেকর্ড করা সর্বোচ্চ ৫৪.৪৭ মার্কিন ডলার প্রতি আউন্স থেকে ১২ শতাংশ কম। এদিকে দেশীয় সোনার বাজারে রুপোর দাম মাত্র দুই দিনের মধ্যেই ৮১০০ টাকা তলানিতে ঠেকেছে এবং প্রতি কেজি রুপো এখন মাত্র ১,৬৩,৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে মার্কিন ডলারের শক্তিশালী হওয়া, মার্কিন ফেডারেল রিজার্ডের সুদের হার কমানো এবং ইলেক্ট্রনিক্স এবং সৌরশক্তি খাত থেকে শিল্প চাহিদা হ্রাসের কারণেই এই পতন বলে ব্যখ্যা করছে বাজার বিশেষজ্ঞরা।
বিনিয়োগকারীদের কী করা উচিত?
বাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সোনা ও রুপোর সাম্প্রতিক দাম সংশোধন স্বল্পমেয়াদি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে। তবে দীর্ঘমেয়াদে সোনা ও রূপোর দাম রেকর্ড স্পর্শ করায়, মুদ্রাস্ফীতি, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং সাম্প্রতিক বাজারের প্রবণতা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অবশ্যই বাজার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়াই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আমরা কাউকে বিনিয়োগের জন্য বাধ্য করি না। আমাদের টিপস শুধুমাত্র বাজারের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ও দিকনির্দেশনা সম্পর্কে সচেতনতা দেওয়ার জন্য।
সব খবর


