কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ম্যুরাল কালি দিয়ে ঢেকে বিকৃত করার ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। কে বা কারা এমন কাজ করেছে, তা এখনও স্পষ্ট না হলেও স্থানীয় প্রশাসনের ধারণা—এটা দুর্বৃত্তদেরই কাজ। তাদের শনাক্ত করতে ইতিমধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তৎপরতা শুরু হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার জিলাপিতলা এলাকায় কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি ম্যুরাল নির্মাণ করা হয় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে। সেই সময় ম্যুরালটির উদ্বোধন করেন তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান খান।
সেই ম্যুরালটি দীর্ঘদিন ধরে এলাকার এক সাংস্কৃতিক চিহ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। স্থানীয়রা গর্বের সঙ্গে সেটিকে দেখাতেন বাইরের মানুষদের। কিন্তু হঠাৎ করেই বৃহস্পতিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে সেই ম্যুরাল বিকৃতির ছবি—যেখানে দেখা যায়, কালি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে কবিগুরুর মুখ। মুহূর্তেই ব্যাপারটি ছড়িয়ে পড়ে, আর তা নজরে আসে স্থানীয় প্রশাসনের।
শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান কুমারখালী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিজয় কুমার জোয়ার্দার। তিনি জানান, ‘‘ম্যুরালে থাকা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মুখমণ্ডল কালো রং দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে এবং ‘রবীন্দ্রনাথ’ ও ‘ঠাকুর’ লেখার বানান বিকৃত করা হয়েছে। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। কালি মুছে ফেলা হয়েছে এবং দোষীদের চিহ্নিত করতে প্রশাসন কাজ করছে।”
স্থানীয় কবি ও সাহিত্যিক লিটন আব্বাস এ ঘটনায় গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এ কালি শুধু রবীন্দ্রনাথের মুখে নয়, বরং পুরো বাঙালি জাতির মুখে দেওয়া হয়েছে। যারা এই ন্যক্কারজনক কাজ করেছে, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।’
সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি রফিকুল আলম টুকু বলেন, ‘এর আগে কুমারখালীতে বিপ্লবী বাঘা যতিনের ভাস্কর্য ভাঙচুর এবং রবীন্দ্রনাথের তরবারি চুরির ঘটনাও ঘটেছে। এবার রবীন্দ্রনাথের ম্যুরাল বিকৃত করা হলো। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং উদ্বেগজনক।’