রাতে ভাত খাওয়া কি স্বাস্থ্যকর?: আমাদের দেশে প্রায় সবাই ভাতকে প্রধান খাবার হিসেবে খান। আর ভাত দিয়ে বিভিন্ন রকম রান্নাও করা হয়। ভাত রান্না করা খুব সহজ এবং এটি দ্রুত শক্তি যোগায়। কারণ ভাতে থাকে কার্বোহাইড্রেট, যা আমাদের শরীরে শক্তি যোগাতে সাহায্য করে। শুধু কার্বোহাইড্রেটই নয় ভাতে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, পটাশিয়ামও রয়েছে। এত পুষ্টিগুণ থাকা সত্ত্বেও কিছু মানুষকে রাতে সাদা ভাত খাওয়া এড়ানো উচিত। তাহলে কারা রাতে ভাত খাওয়া এড়িয়ে চলবেন? আসুন জেনে নেওয়া যাক।
রাতে ভাত খেলে কি হয়?
ভাতে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট থাকায় এটি শক্তি যোগানোর পাশাপাশি আমাদের শরীরে গ্লুকোজ ভেঙে দেয়। কিন্তু রাতে আমাদের শক্তির তেমন প্রয়োজন হয় না। তাই রাতে ভাত খেলে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং শরীরে চর্বি জমতে শুরু করে। সাদা ভাতের গ্লাইসেমিক ইনডেক্সও বেশি, যার কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ে। তবে বাদামী ভাতে এই পরিমাণ কিছুটা কম থাকে।
রাতে ভাত খাওয়ার ফলে শরীরে কি পরিবর্তন আসে?
কিছু মানুষের জন্য পরিমিত পরিমাণে ভাত খাওয়া ক্ষতিকারক নাও হতে পারে। তবে আগেই বলেছি, সাদা ভাতের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি। এর ফলে শুধু ওজনই বাড়ে না, বরং এটি ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যারও কারণ হতে পারে। তাই যারা স্বাস্থ্য সচেতন তাদের জন্য ভাত খাওয়ার পরিমাণ ও সময় সম্পর্কে সতর্ক থাকা জরুরি।
রাতে ভাত খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত?
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রাতে ভাত খাওয়া এড়িয়ে চলাই ভালো। কারণ এটি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দিতে পারে। বিকল্প হিসেবে বাদামী ভাত খেতে পারেন। তবে সেটাও পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। ওজন কমানোর চেষ্টা করলে রাতে উচ্চ কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার, বিশেষ করে ভাত এড়িয়ে চলুন। এর বদলে প্রোটিন ও ফাইবার সমৃদ্ধ হালকা খাবার খান।
যদি আপনার কাজের ধরন এমন হয় যেখানে সারাদিন বসে বা শুয়ে কাটাতে হয়, তাহলে রাতে ভাত খেলে শরীরে অতিরিক্ত শক্তি জমা হতে পারে, যা চর্বিতে পরিণত হয়। নিয়মিত ব্যায়াম না করলে এই অতিরিক্ত শক্তি ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই সক্রিয় না থাকলে রাতে ভাত এড়িয়ে চলাই ভালো।
কখন ভাত খাওয়া উচিত?
ভাত খাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হল দুপুর বা তার আগে। কারণ এই সময় শরীরের বেশি শক্তির প্রয়োজন হয়। সকালে বা দুপুরে ভাত খেলে শরীর সারাদিন শক্তি পাওয়ার জন্য কার্বোহাইড্রেট ব্যবহার করতে পারে। এ সময় বিপাকও বেশি সক্রিয় থাকে ফলে ক্যালোরি দ্রুত বার্ন হয়। যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন, তাদের শরীরে গ্লাইকোজেনের মাত্রা পুনরায় পূরণ করা প্রয়োজন। এর জন্য ভাত একটি ভালো বিকল্প হতে পারে। বিশেষ করে ব্যায়ামের পর ভাত খেলে শরীর দ্রুত শক্তি পায় এবং ক্লান্তি দূর হয়। তাই সক্রিয় জীবনযাপন করলে দিনের বেলায় ভাত খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী হতে পারে।