জাপানি বাবার চমকপ্রদ ভবিষ্যদ্বাণী: এক রহস্যময় মাঙ্গা শিল্পী — যাকে গোটা বিশ্ব চিনে ‘জাপানিজ বাবা ভাঙ্গা’ নামে! তার আসল নাম রিয়ো তাতসুকি। একদিকে যেমন তিনি একজন শিল্পী, অন্যদিকে যেন ভবিষ্যৎদ্রষ্টা। তার রচিত বই “The Future I Saw” (আমি যে ভবিষ্যৎ দেখেছি) আজও পাঠকদের গায়ে কাঁটা দিয়ে দেয়। কারণ, এই বইতে এমন কিছু ভয়াবহ ঘটনার ভবিষ্যৎবাণী করা হয়েছে, যা পরে একেবারে হুবহু বাস্তবে ঘটেছে!
ভাবুন তো, ২০১১ সালের জাপানের বিধ্বংসী সুনামি, কিংবা ২০২০ সালের কোভিড-১৯ মহামারী — সবই আগে থেকেই আঁকা ছিল তার বইয়ের পাতায়! শুধু তাই নয়, এশিয়ার বড় বড় ভূমিকম্প, অগ্ন্যুৎপাত — এমন অনেক ঘটনাই তার আঁকা ছবিতে আগেই উঠে এসেছে। এসব ভবিষ্যদ্বাণী এতটাই নিখুঁতভাবে মিলে গেছে, যে অনেকেই তাকে আজ সত্যিকারের ‘ভবিষ্যৎদ্রষ্টা’ বলে মনে করেন।
জাপানি বাবার চমকপ্রদ ভবিষ্যদ্বাণী
এবার এমন এক ভবিষ্যৎবাণী সামনে এসেছে, যার জেরে রাতের ঘুম উরে গিয়েছে গোটা এশিয়ার। জানা যাচ্ছে, জুলাই 2025-এ নাকি ভয়ংকর সুনামি হতে চলেছে। হ্যাঁ, এমনই লেখা রয়েছে ওই ভবিষ্যৎবাণীতে। আর এই সুনামি জাপান, তাইওয়ান ও ইন্দোনেশিয়া, এই তিনটি দেশের উপর বিপদের ছায়া আনতে চলেছে।
কী বলা হয়েছে বইটিতে?
১৯৯৯ সালে প্রকাশিত হয়েছিল রিয়ো তাতসুকির চমকপ্রদ বই “The Future I Saw”। প্রকাশের সময় অনেকে একে সাধারণ কল্পনাভিত্তিক বা অতিরঞ্জিত গল্প বলেই মনে করেছিলেন। কারণ, কে-ই বা সিরিয়াসলি নেয় এমন বই, যেখানে ভবিষ্যতের ভয়ংকর সব দুর্যোগের কথা বলা আছে?
কিন্তু সবকিছু বদলে যায় ২০১১ সালের সেই বিধ্বংসী সুনামি-র পর। কারণ, তাতসুকির বইতে ঠিক যেমনভাবে ওই সুনামির চিত্র আঁকা ছিল, বাস্তব ঘটনাও ঠিক তেমনই ঘটেছিল — একদম অক্ষরে অক্ষরে! এই ঘটনার পর আর কেউ বইটিকে অবহেলা করেনি। বরং অনেকেই তখন থেকে বইটি নতুন চোখে দেখতে শুরু করেন।
বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যৎবাণী অনুযায়ী, 2025-র জুলাই মাসে জাপানের দক্ষিণ সাগরে জলের তাপমাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে যাবে। আর এর ফলে আন্ডারওয়াটার আগ্নেয়গিরিতে বিস্ফোরণ ঘটবে। যার প্রভাবে সৃষ্টি হবে ভয়ানক সুনামি। আর এই সুনামির কবলে পড়বে জাপানের দক্ষিণ দ্বীপপুঞ্জ, তাইওয়ানের উপকূল অঞ্চল এবং ইন্দোনেশিয়ার কিছু এলাকা। এমনকি এই সুনামি নাকি 2011 সালের ফুকুশিমার বিপর্যয়ের থেকেও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।
আতঙ্কে পর্যটন শিল্প
জুলাই মাসে সম্ভাব্য এই ভয়াবহ সুনামির আশঙ্কায় সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ছে জাপানে ভ্রমণের পরিকল্পনাকারী পর্যটকদের উপর। অনেকেই এখন জাপান সফর নিয়ে দ্বিধায় ভুগছেন। পরিসংখ্যান বলছে, ইতিমধ্যেই বুকিং ৫০% পর্যন্ত কমে গেছে। এমনকি আসন্ন ইস্টার হলিডে নিয়েও কেউ আর আগ্রহ দেখাচ্ছেন না—বুকিং একপ্রকার বন্ধই বলা যায়।
যদিও রিয়ো তাতসুকি ওরফে ‘জাপানিজ বাবা ভাঙ্গা’-র এই ভবিষ্যৎবাণীগুলোর বৈজ্ঞানিক প্রমাণ এখনো স্পষ্ট নয়। তার মাঙ্গা বইয়ের কথাগুলোকে বৈজ্ঞানিকভাবে সত্যি বলা যায় না — কিন্তু বিষয়টা একেবারে উড়িয়ে দেওয়াও যাচ্ছে না।
কারণ, বিজ্ঞানী ও গবেষকরা জানাচ্ছেন, সম্প্রতি জাপান ও তাইওয়ানের আশপাশের অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ চাপ এবং আগ্নেয়গিরির সক্রিয়তা কিছুটা হলেও বাড়ছে। যার ফলে এই এলাকাগুলিকে এখন বিশেষ নজরে রাখা হচ্ছে।