বাংলায় শুরু হয়ে গিয়েছে এসআইআর বা ভোটার নিবিড় সংশোধনের প্রস্তুতি, আর এই প্রসঙ্গেই মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি স্পষ্টভাবে সতর্ক করে দেন—“আগুন নিয়ে খেলা করার চেষ্টা করবেন না।
তাঁর অভিযোগ, বর্তমানে রাজ্যে বন্যা ও দুর্যোগের মধ্য দিয়ে এগোচ্ছে। আর এই পরিস্থিতিতে এরকম সংবেদনশীল প্রক্রিয়া শুরু করা মানেই মানুষের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করা। এখন বহু মানুষের ঘরবাড়ি ভেসে গিয়েছে, সব জলের তলায়। ডকুমেন্ট পর্যন্ত নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কেউ কেউ উৎসবের ছুটিতে বাড়ির বাইরে। তারা এখন কীভাবে কাগজ বার করবে?
ক্ষোভে ফাটলেন মুখ্যমন্ত্রী
সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) জানান, রাজ্যের দুই নাগরিক সম্প্রতি এনআরসি নোটিশ পেয়েছেন, যা নিয়ে তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁর কথায়, “এসআইআর-এর নামে কেন এনআরসি নোটিশ পাঠানো হল? কোন অধিকারে বাংলার মানুষকে অসম সরকার এই নোটিশ পাঠাচ্ছে?” মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “সামনে এসআইআর চলছে, আর পিছনে কী চলছে? এনআরসি গায়ের জোরে করবেন? কোনওদিনও পারবেন না।” মমতা অভিযোগ করেন, এটা আসলে ভোট কাড়ার এক পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র, আর কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিই ইচ্ছাকৃতভাবে এইসব করছে—যাতে রাজ্যে অশান্তি তৈরি হয় এবং মানুষের মনে ভয় ঢোকানো যায়।
আগুন নিয়ে খেলার চেষ্টা করবেন না!
রাজ্য প্রশাসনকে কড়া সতর্কবার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এদিন বলেন, “তাড়াহুড়ো করে কাজ করতে গিয়ে যদি কারও নাম ভুলবশত বাদ পড়ে যায়, তাহলে মনে রাখবেন—আগুন নিয়ে খেলবেন না। বাংলার মানুষ এটা কোনওদিন মেনে নেবে না।” মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “বাংলা এখন দুর্যোগের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। বহু মানুষ নিজের বাড়ি হারিয়েছেন, গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র হারিয়ে ফেলেছেন। এই অবস্থায় নাগরিকত্ব যাচাই করার কথা ভাবাটাই অমানবিক।” তাঁর এই মন্তব্য স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, তিনি প্রশাসনকে সতর্ক ও মানবিকভাবে কাজ করার নির্দেশ দিচ্ছেন, যাতে সাধারণ মানুষ কোনও অন্যায়ের শিকার না হন।
সব খবর
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী এদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের সম্প্রতিক বক্তব্য নিয়েও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন—তিনি বলেন, “শান্তনু ঠাকুর যে দাবি করেছেন, প্রায় দেড় কোটি রোহিঙ্গার নাম বাংলার ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়বে, সেটা এসআইআর-এর কাজ শুরুও না হওয়ার আগে কীভাবে বলা হলো?” মমতা প্রশ্ন রেখে বলেন, সবকিছুর পিছনে কি কোন নরকপুরুষের নির্দেশ আছে? আরও সরাসরি অমিত শাহকে মীরজাফর আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “আপনারা বাংলার অধিকার দেন না, ভোট এলেই পয়সা বেরিয়ে যায়”—এমন কৌশল বাংলার মানুষ কৌশলে মেনে নেবে না। তিনি জোর দিয়ে বলেন, প্রতিটি সম্প্রদায়ের মানুষকে লড়াই করতে হবে এবং মানুষ নিজের অধিকার নিজেরা বুঝে নেবে।


