কাঁথি, 24 অগস্ট: ভিনরাজ্যে রুজিরুটির সন্ধানে গিয়ে চরম দুর্ঘটনার শিকার হলেন এক মা ও ছেলে। কাঁথির বাসিন্দা ওই পরিবার শনিবার সকালে উত্তরপ্রদেশের বরেলিতে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। জানা গেছে, দ্রুত গতির একটি গাড়ি সোজা সামনে থেকে এসে তাদের অটোতে ধাক্কা মারে। এতে মা ও ছেলের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। পরিবারের আরও তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন এবং বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
জানা গেছে, পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির দেশপ্রাণ ব্লকের চলতি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা জাহাঙ্গির সাহা স্ত্রী, দুই ছেলে আর এক ভাগ্নিকে সঙ্গে নিয়ে রোজগারের জন্য উত্তরপ্রদেশের বরেলিতে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়েছিলেন। শুধু কাজই নয়, সেখানে এক আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানেও যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। সেই অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবারই তাঁরা বাড়ি থেকে রওনা দেন। শনিবার ট্রেন থেকে নামার পর অটোয় চেপে আত্মীয়ের বাড়ির উদ্দেশে যাচ্ছিলেন সবাই। ঠিক তখনই ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।
পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, উল্টোদিক থেকে আসা একটি গাড়ি তাঁদের অটোকে সামনে থেকে ধাক্কা মারে ৷ ঘটনায় অটোর চালক-সহ 6 জনকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ হাসপাতালে জাহাঙ্গিরের স্ত্রী ফরিদা বিবি (30) এবং বড় ছেলে নাসিম সাহা (12)-র মৃত্যু হয় ৷ জাহাঙ্গির এবং তাঁর ছোট ছেলে ও ভাগ্নি আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৷
শনিবার বিকেলে দুর্ঘটনার খবর কাঁথির জাহাঙ্গির সাহার বাড়িতে পৌঁছাতেই শোকের ছায়া নেমে আসে। বাড়িতে রয়েছেন তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মা এবং এক ভাই। আকস্মিক এই দুঃসংবাদে এলাকায় নেমে এসেছে গভীর শোক। খবর পেয়ে রাতেই পরিবারের আরও সদস্যরা উত্তরপ্রদেশের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। এদিকে, কাঁথি থানার উদ্যোগে মৃত ফরিদা এবং তাঁর ছেলের দেহ বাড়িতে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য মধুসূদন চক্রবর্তী।
সব খবর
তিনি জানান, “ঘটনার খবর পেয়ে আমরা তৎক্ষণাৎ ওঁদের বাড়িতে ছুটে আসি। গ্রামের সবাই মিলে জাহাঙ্গির এবং বাকিদের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্য করেছি। বাকি ওঁর স্ত্রী এবং ছেলের দেহ বাড়িতে আনার জন্যও স্থানীয়রা উদ্যোগ নিয়েছেন। কাঁথি থানার পুলিশও পাশে দাঁড়িয়েছে।”
এ নিয়ে আহত জাহাঙ্গিরের আত্মীয় শেখ হাবিব আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, “প্রথমে আমি ফোনে বিষয়টি জানতে পারি। এরপর এলাকাবাসীর সহযোগিতায় কয়েকজন উত্তরপ্রদেশের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। আসলে কাজের খোঁজেই ওঁরা উত্তরপ্রদেশ গিয়েছিলেন, কিন্তু এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা হবে তা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি।”


