আজ দেশের প্রখ্যাত শিল্পপতি রতন টাটার (Ratan Tata) প্রয়াণ দিবস। ২০২৪ সালের ৯ অক্টোবর তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন, কিন্তু তাঁর স্মৃতি ও শিক্ষা আজও মানুষের হৃদয়ে অম্লান। ব্যবসার জগতে তাঁর অবদান যেমন অনন্য, তেমনি সমাজসেবার ক্ষেত্রে তিনি যে ছাপ রেখেছেন তা চিরস্মরণীয়। তবে তাঁর মৃত্যুর পর যে উত্তরাধিকার তিনি রেখে গিয়েছিলেন, তা নিয়ে টাটা গ্রুপের ভেতরে নানা বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এক বছর পেরিয়েও টাটা ট্রাস্টের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এখনো সমাধান হয়নি, যা শিল্পপতির দৃষ্টান্তমূলক নেতৃত্বের কথা মনে করিয়ে দেয়।
এক বছর পরেও থামেনি বিতর্ক
প্রসঙ্গত, রতন টাটার মৃত্যুর পর থেকেই টাটা ট্রাস্টের পরিচালনা পরিষদের সদস্যদের মধ্যে ক্ষমতা সংক্রান্ত তীব্র দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। বিশেষ করে রতন টাটার ভাই নোয়েল টাটার নেতৃত্বাধীন এক পক্ষ আরেক পক্ষের সঙ্গে খোলাখুলি মতবিরোধ প্রকাশ করছে, যা বোর্ড গঠন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াতেও জটিলতা সৃষ্টি করছে। আরও জটিলতা তৈরি হয়েছে শাপুরজি পালোনজি পরিবারের সদস্য মেহলি মিস্ট্রির যোগদানের মাধ্যমে, কারণ এই পরিবার টাটা সন্সের ১৮.৩৭ শতাংশ শেয়ারের মালিক। এছাড়া, টাটার মৃত্যুর পর ট্রাস্টের নীতিতেও কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পর কোনও ডিরেক্টরকে প্রতিবছর পুনর্নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যেতে হবে। এর প্রভাব স্বরূপ বোর্ডের সদস্য বিজয় সিং নিজে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এমনকি বিতর্ক এখানেই শেষ নয়। টাটা ট্রাস্ট এবং শাপুরজি পালোনজি গ্রুপের মধ্যে আরও এক বড় ইস্যু তৈরি হয়েছে টাটা সন্সকে সিআইসি হিসেবে তালিকাভুক্ত করা নিয়ে। জানা গেছে, এসপি গ্রুপের ঋণের বোঝা দিন দিন বাড়ছে এবং এ কারণে তারা তাদের শেয়ারের একটি অংশ বিক্রি করতে চাচ্ছে। শোনা যায়, এই ঋণের পরিমাণ প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা, যা ২০% সুদে পুনর্গঠন করা হয়েছে। যদি টাটা ট্রাস্ট এবং টাটা সন্স একসঙ্গে কিছু অংশ কিনতে পারে, তাহলে ঋণের বোঝা অর্ধেক হয়ে যাবে। পাশাপাশি, অভ্যন্তরীণ এই সংকট এতটাই গভীর যে কেন্দ্র সরকারকেও হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে। জানা যায়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজে দুই পক্ষের প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে বসার জন্য অনুরোধ করেছেন।


