Teacher Transfer: পশ্চিমবঙ্গ স্কুল শিক্ষা দপ্তর শিক্ষকদের উৎসশ্রী পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইন মিউচুয়াল ট্রান্সফার প্রক্রিয়ার জন্য ১৭ই জুন, ২০২৫-এ একটি গুরুত্বপূর্ণ নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে। এই নির্দেশিকা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক উভয় স্তরের শিক্ষকদের জন্যই প্রযোজ্য এবং এটি বদলির আবেদন প্রক্রিয়া সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে সহায়তা করবে। আসুন, এই নতুন নির্দেশিকাটির মূল বিষয়গুলি বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
আবেদন আনলক করার নতুন নিয়ম:
অনেক সময় দেখা যায়, শিক্ষকরা বদলির জন্য আবেদন করার পর নানা ধরনের প্রযুক্তিগত বা প্রক্রিয়াগত জটিলতায় আটকে যান। এতে অনেকেই চিন্তায় পড়ে যান বা আবেদনটা সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারেন না। সেই সমস্যা মাথায় রেখে, নতুন নির্দেশিকায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
যদি কোনও শিক্ষক মিউচুয়াল ট্রান্সফারের জন্য আবেদন করেন, কিন্তু তাঁর পার্টনার শিক্ষকের পক্ষ থেকে সাড়া না আসে, তাহলে আর চিন্তার কোনো কারণ নেই। এখন থেকে প্রাথমিক শিক্ষকদের ক্ষেত্রে ডিপিএসসি এবং মাধ্যমিক শিক্ষকদের ক্ষেত্রে ডিআই সেই আবেদনটি বাতিল করার সুযোগ পাবেন। পাশাপাশি, আবেদনকারীর প্রোফাইল আনলক করে দেওয়া হবে, যাতে তিনি নতুন করে আবার আবেদন করতে পারেন।
এমনকি, যদি যুগ্মভাবে বদলির আবেদন করার পরও বদলির অর্ডার বা সুপারিশপত্র না জারি হয়, তাহলেও সেই আবেদনটি আনলক করা সম্ভব হবে। এর ফলে শিক্ষকরা বাধাগ্রস্ত না হয়ে আবার নতুন করে তাদের বদলির আবেদন করতে পারবেন।
কোন কর্তৃপক্ষ আনলক করবেন? (Teacher Transfer)
প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য:
একই জেলার মধ্যে বদলির ক্ষেত্রে ডিপিএসসি আবেদন আনলকের দায়িত্ব নেবে। আর যদি বদলি হয় ভিন্ন জেলার মধ্যে, তাহলে সেই কাজ করবে পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।
মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের জন্য:
যদি বদলির সুপারিশপত্র বা অর্ডার এখনো জারি না হয়ে থাকে, তাহলে আবেদন আনলকের দায়িত্ব থাকবে সেন্ট্রাল স্কুল সার্ভিস কমিশনের (CSSC) ওপর।
প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য অতিরিক্ত নিয়ম:
প্রাথমিক শিক্ষকরা মিউচুয়াল ট্রান্সফারের জন্য আবেদন করার সময় এখন থেকে ডিপিএসসি কর্তৃক জারি করা কনফার্মেশন অর্ডারের একটি কপি আপলোড করতে বাধ্য থাকবেন।
শূন্যপদ সংক্রান্ত নতুন সিদ্ধান্ত:
অনেক সময় বদলির অর্ডার জারি হলেও শিক্ষক নতুন পদে যোগ না দেওয়ায় সেই পদটি ব্লক হয়ে যেত। আর তাই সেই শূন্যপদগুলো শূন্য থাকতো, যা অনেক সময় সমস্যা সৃষ্টি করতো। কিন্তু এখন থেকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এসব ব্লক হয়ে থাকা শূন্যপদগুলো আনব্লক করার ক্ষমতা পেয়েছে। অর্থাৎ, এই পদগুলোকে আবার মুক্ত করে নতুন পরিস্থিতির ভিত্তিতে বিবেচনা করা হবে। এতে করে শিক্ষক বদলির প্রক্রিয়া আরও সহজ এবং দ্রুত হবে।
জেনারেল ট্রান্সফার আবেদনকারীদের জন্য সুখবর:
যে সমস্ত শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মী ইতিমধ্যেই জেনারেল ট্রান্সফারের জন্য আবেদন করেছেন, তারা এখন চাইলে সেই আবেদন বাতিল করে মিউচুয়াল ট্রান্সফারের জন্য আবেদন করতে পারবেন, শুধু যদি তাঁদের সুপারিশপত্র বা বদলির অর্ডার এখনও জারি না হয়ে থাকে। এটা একটি বড় সুবিধার খবর, কারণ অনেক শিক্ষক যাঁরা জেনারেল ট্রান্সফারে আটকে ছিলেন, তাঁরা এখন মিউচুয়াল ট্রান্সফারের সুযোগ পাবেন।
এই নতুন নিয়মগুলো নিঃসন্দেহে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক বদলি প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ, সহজ ও দ্রুততর করে তুলবে। শিক্ষকদের হয়রানি কমবে এবং তাঁরা অনেক সহজেই নিজেদের পছন্দ মতো স্কুলে বদলি হতে পারবেন বলে আমরা আশা করতে পারি।