অভিনেত্রী সৎ মেয়ে রানিয়া রাও সোনা পাচারকাণ্ডে ধরা পড়েছেন। এতদিন ধরে রানিয়া নিজের নাম ব্যবহার করে বিমানবন্দর দিয়ে পাচার করা সোনা নিয়ে বেরিয়ে যেতেন। সৎ মেয়ে রানিয়ার গ্রেফতারিতে দুঃখ প্রকাশ করেছেন আইপিএস অফিসার রামচন্দ্র রাও। তিনি বর্তমানে কর্ণাটক পুলিশ হাউজিং কর্পোরেশনের ডিজিপি হিসেবে কর্মরত। রানিয়ার গ্রেফতারের পর মর্মাহত রামচন্দ্র রাও জানান, “আমার ক্যারিয়ারে একটাও কালো দাগ নেই। আইন আইনের পথে চলবে।”
বার্তাসংস্থা এএনআইকে আইপিএস রামচন্দ্র রাও বলেন, “এই ঘটনাটি যখন মিডিয়ার মাধ্যমে আমি জানতে পারি, তখন আমি অবাক ও মর্মাহত হয়েছিলাম। আমি এসবের কোনও কথাই জানতাম না এবং অন্য যেকোনও বাবার মতো আমিও অবাক হয়েছি। সে আমাদের সাথে থাকে না, সে তার স্বামীর সাথে আলাদা থাকে। পারিবারিক কিছু সমস্যার কারণে তাদের মধ্যে কিছু সমস্যা থাকতে পারে। যাই হোক, আইন নিজের কাজ করবে, আমার কর্মজীবনে কোনও কলঙ্ক নেই। আমি আর কিছু বলতে চাই না।”
জানা গিয়েছে, গত ১ বছরে রানিয়া ৩০ বার দুবাই গিয়েছেন। তাঁর এত ঘনঘন দুবাই ভ্রমণের জেরে ডিরেক্টরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স বা ডিআরআই-এর সন্দেহ হয়। ‘মাণিক্য’ (২০১৪) সিনেমাতে কন্নড় সুপারস্টার সুদীপের বিপরীতে অভিনয় করার জন্য পরিচিত রানিয়া রাও। এছাড়া আরও কয়েকটি দক্ষিণী চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। যার মধ্যে ১০১৬ সালে তামিল সিনেমা ‘ওয়াঘা’ এবং ২০১৭ সালের কন্নড় সিনেমা ‘পটাকি’ আছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, দুবাই থেকে ফিরতি পথে বিমানবন্দরে বিনা চেকিংয়েই বাইরে বেরোনোর চেষ্টা করছিলেন রানিয়া রাও। সেই সময় ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট পুলিশ স্টেশনের এক কনস্টেবল তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তবে ডিআরআই গোয়েন্দাদের কাছে রানিয়াকে নিয়ে আগের থেকেই খবর ছিল। এই পরিস্থিতিতে তাঁকে ধরে ফেলেন গোয়েন্দারা। জানা যায়, রানিয়া ওই সোনা তাঁর পোশাকের পাশাপাশি শরীরেও লুকিয়ে রেখেছিলেন। পরে রানিয়ার বেঙ্গালুরুর বাড়িতেও ডিআরআই তদন্তকারীরা তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, রানিয়া রাও নাকি তাঁর স্বামীর সঙ্গে প্রায়ই দুবাইতে যেতেন, যদিও দুবাইতে রানিয়ার কোনও পরিবারের সদস্য থাকেন না এবং সেখানে তাঁর কোনও ব্যবসাও নেই। এই পরিস্থিতিতে গোয়েন্দাদের সন্দেহ হয়েছিল। এর আগেও নাকি দুবাই থেকে ফিরে পুলিশ এসকর্ট নিয়ে বিনা বাধায় বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন রানিয়া। এই অবস্থায় রানিয়া একাই সোনা পাচারের সঙ্গে যুক্ত নাকি এর নেপথ্যে আরও কেউ আছে, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত চালাচ্ছেন গোয়েন্দারা। যদিও গোয়েন্দারা রানিয়াকে আদালতে পেশ করে তাঁকে হেফাজতে চাননি। গ্রেফতারির পর রানিয়া দাবি করেন, তাঁকে ব্ল্যাকমেইল করে সোনা পাচার করতে বাধ্য করা হয়েছে। এই বিষয়ে তদন্ত করবেন গোয়েন্দারা। এদিকে, সোনা কেনার অর্থের উৎস কী, তা নিয়েও তদন্ত শুরু হবে। এই পরিস্থিতিতে ইডি তদন্তে নামতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।