উদয়পুর, 26 ডিসেম্বর: রাতে কোম্পানির সিইও’র জন্মদিনের পার্টি থেকে বাড়ি ফিরছিলেন রাজস্থানের উদয়পুরের এক আইটি কোম্পানির মহিলা ম্যানেজার। পার্টিতে অফিসের সকলেই উপস্থিত ছিলেন এবং পার্টি শেষে সবাই বাড়ি চলে যান। একা বাড়ি ফেরার পথে তাকে লিফট দেওয়ার প্রস্তাব দেন কোম্পানিরই একজন মহিলা এক্সিকিউটিভ। প্রথমে তিনি গাড়িতে উঠতে রাজি হননি, কারণ তার স্বামী আসবেন বলেই তিনি অপেক্ষা করছিলেন। কিছুক্ষণ পরে স্বামী না আসায় তিনি শেষ পর্যন্ত গাড়িতে ওঠেন, কিন্তু রাস্তায় গাড়ির মধ্যেই তাঁর সঙ্গে ঘটে ভয়ঙ্কর ঘটনা।
পুলিশে অভিযোগ দায়েরের পর এই ভয়ঙ্কর ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। অভিযোগ অনুযায়ী, জন্মদিনের পার্টি থেকে ফেরার সময় ওই মহিলা ম্যানেজারকে গাড়ির মধ্যে গণধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত সিইও আগেই ওই মহিলা ম্যানেজারকে নিমন্ত্রণ করেছিলেন এবং তাঁর উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করার চেষ্টা করেছিলেন। ঘটনার পরিকল্পনা আগে থেকেই ছিল। এই ধর্ষণকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত অন্য দুই অভিযুক্ত হলেন কোম্পানির মহিলা এক্সিকিউটিভ এবং তার স্বামী গৌরব সিরোহি।
বৃহস্পতিবার তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে আদালতে পেশ করা হয়েছে। আদালত তাদের চার দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ায় শহরজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার যোগেশ গোয়েল জানিয়েছেন, নির্যাতিতার জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে, শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে এবং ঘটনার পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সুপার যোগেশ গোয়েল বলেন, “নির্যাতিতার অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি আইটি কোম্পানিতে ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ওই কোম্পানির সিইও এবং তার সহযোগীরা তাঁকে ধর্ষণ করেছে। অভিযুক্তরা তাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করত এবং তারপর গণধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ সংঘটিত করেছিল। মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করে। তদন্তের সময় ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে মহিলার বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে এবং মেডিক্যাল পরীক্ষায় তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্নও পাওয়া গেছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, জোর করে ওই মহিলা এক্সিকিউটিভের কথায় তিনি গাড়িতে ওঠেন। প্রথমে তিনি গাড়িতে উঠতে চাইছিলেন না, কিন্তু এক্সিকিউটিভ তাঁকে আশ্বস্ত করেন যে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে তারা চলে যাবে। গাড়ির মধ্যে তখন CEO এবং মহিলা এক্সিকিউটিভের স্বামীও ছিলেন। তরুণী অভিযোগে জানিয়েছেন, রাস্তায় CEO তাঁকে একটি সিগারেট দেন, যা খাওয়ার পরই তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। তাঁর অভিযোগ, রবিবার ভোর পর্যন্ত তাঁকে গাড়িতে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়। পরের দিন সকালে জ্ঞান ফেরার পর তিনি বুঝতে পারেন যে ধর্ষণ ঘটেছে এবং পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন।
মহিলা ম্যানেজারের অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা দায়ের করা হয় এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষার পর তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। মামলাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাধুরী ভার্মার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ এখন সিসিটিভি ফুটেজ এবং গাড়ির মধ্যেকার অডিও-ভিডিও রেকর্ডিং খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।
