রোজা রেখে পর্যাপ্ত না ঘুমালে কী হয়: ঘুম আমাদের মেটাবলিজম সিস্টেম এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। জীবনে স্থিতি নিয়ে আসে এবং ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় রাখে। এর মাধ্যমে হৃদ্রোগের আশঙ্কাও কমে যায়। এছাড়া ঘুম আমাদের লং এবং শর্ট টার্ম মেমোরি গুছিয়ে রাখে। শারীরিক মানসিক এবং মস্তিষ্কের কার্যক্রম সঠিকভাবে কাজ করার জন্য জীবনের মোট সময়ের এক-তৃতীয়াংশ ঘুমে ব্যয় করা অপরিহার্য। আট ঘণ্টা ঘুম মস্তিষ্কের কার্যক্রমকে সবচেয়ে ভালোভাবে পরিচালিত রাখে। যখন আমরা ঘুমাই তখন শরীর ও মনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু কার্যক্রম শুরু হয়। তাই প্রতিদিন আট ঘণ্টা ঘুমানো আমাদের ‘কোয়ালিটি লাইফ’ নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
সাধারণভাবে বলা হয় আট ঘণ্টা ঘুমানো উচিত তবে বয়স অনুযায়ী এর পরিমাণ কমবেশি হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশনের পরামর্শ অনুযায়ী ৬ থেকে ৯ বছর বয়সী শিশুদের রাতে অন্তত ৯-১১ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। তবে নিয়মিত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম হলেই তারা নিজেকে ভালোভাবে চালিয়ে নিতে পারে। ১০ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের ৮-১০ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। তবে কিছু কিছু মানুষের ৭ ঘণ্টা ঘুমেও সেটা চলে যায়। চল্লিশোর্ধ্ব ব্যক্তিরা আবার ৬ ঘণ্টা ঘুমিয়েও দিব্যি চলতে পারেন। তবে এর থেকে কম ঘুম হলে সেটা উদ্বেগজনক এবং শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
রোজা রেখে পর্যাপ্ত না ঘুমালে কী হয়
রমজানে তারাবির নামাজ ও অন্যান্য ইবাদতের জন্য আলাদা সময় বরাদ্দ থাকে, এবং শেষ রাতে উঠে যাওয়ার তাড়াও থাকে, যার ফলে ঘুমের সময় কমে যায়। ঘুম ঠিক রাখতে হলে কিছু আনুষঙ্গিক কাজকর্ম কমিয়ে আনতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সময় কম ব্যয় করুন এতে সময় বাঁচবে এবং ঘুমের জন্য আরও সুযোগ তৈরি হবে। আর পারলে দিনেও খানিকটা ঘুমিয়ে নিন, এতে ক্লান্তি ভাব অনেকটা কমে যাবে এবং শরীরও তাজা থাকবে।
কম ঘুমে শরীরে কী প্রভাব পড়ে?
ঘুমের অভাবে নানা শারীরিক সমস্যা হতে পারে, যেমন হার্ট অ্যাটাক, হার্টের অসুখ, অনিয়মিত হার্টবিট, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, এবং ডায়াবেটিস। ঘুম কম হলে শরীরে “কার্টিসল” নামের এক হরমোন নিঃসৃত হয়, ফলে ত্বক অল্প বয়সেই ঝুলে যেতে পারে। যাঁরা দিনে ছয় ঘণ্টার কম ঘুমান, তাঁদের মুটিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেশি। কম ঘুমের সঙ্গে অবসাদগ্রস্ততা ও মানসিক সমস্যার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। এতে স্মৃতি হারানো স্বাভাবিক জীবনের ছন্দ হারানো, ভুলে যাওয়া রোগ, ইনসোমনিয়া, হ্যালুসিনেশনসহ নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই ঘুমের গুরুত্ব কখনোই অবহেলা করা উচিত নয়।