JKNews24 Bangla, কলকাতা: রেশনে বিনামূল্যে সামগ্রী দেওয়া বন্ধ, দরিদ্র এবং মধ্যবিত্তদের বাড়তে থাকা মূল্যবৃদ্ধি থেকে রেহাই দিতে এবং তাদের অন্নের যোগান নিশ্চিত করার জন্য সরকারের তরফ থেকে রেশন প্রকল্প চালু করা হয়েছিল। করোনাকালে এই প্রকল্পের আওতায় বিনামূল্যে রেশন সামগ্রী দেওয়া শুরু হয়, যার ফলে ৮০ কোটিরও বেশি মানুষ উপকৃত হয়েছেন। তবে এবার শোনা যাচ্ছে, ফ্রি রেশন পরিষেবা বন্ধ হতে পারে! হ্যাঁ, এমনই এক ইঙ্গিত পাওয়া গেছে নীতি আয়োগের রিপোর্টে।
রেশনে বিনামূল্যে সামগ্রী দেওয়া বন্ধ
নীতি আয়োগের তরফ থেকে প্রকাশিত ‘মাল্টি ডাইমেনশনাল পভার্টি ইন ইন্ডিয়া সিন্স ২০০৫–২০০৬’ রিপোর্টে বলা হয়েছে, নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকে ২৪ কোটি ৮২ লক্ষ মানুষকে দরিদ্রসীমা থেকে উঠিয়ে আনা হয়েছে। এই রিপোর্ট নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় প্রচারও করা হয়েছে। তবে প্রশ্ন উঠছে, কি এবার এই রিপোর্টকেই হাতিয়ার করে বন্ধ করে দেওয়া হবে বিনামূল্যের রেশন? নাকি ৮০ কোটিরও বেশি লোককে দেওয়া রেশন থেকে ২৪ কোটি ৮২ লক্ষ মানুষের নাম বাদ দেওয়া হবে? এটি নিয়ে নানা জল্পনা চলছে।
গতকাল, মঙ্গলবার নীতি আয়োগে ‘ওয়ার্কিং গ্রুপ অফ মডেল ফেয়ার প্রাইস শপ’ নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে রেশন ডিলারদের আয় বৃদ্ধি নিয়ে একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। নীতি আয়োগের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর জানান, “গ্রাহকদের থেকে প্রতি কেজিতে ১ থেকে ১.৫ টাকা নিলে কেমন হয়? তাহলে প্রত্যেক গ্রাহকের থেকে ৫-৭ টাকা অতিরিক্ত আয় করা সম্ভব।” অর্থাৎ, বিনামূল্যে রেশন নয়, কিছু টাকা খরচ করে রেশন নেওয়ার প্রস্তাবই রাখা হয়েছে।
নতুন প্রস্তাবের ভিত্তিতে সরকারের তরফ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হতে পারে, এমনটাই জানা গেছে এদিনের বৈঠক থেকে। বর্তমানে রেশন ডিলাররা প্রতি কেজিতে মাত্র ৯০ পয়সা কমিশন পান, সেটাকেই বাড়ানোর চেষ্টা চলছে এই প্রস্তাবের মাধ্যমে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রস্তাবের মাধ্যমে রেশন ডিলারদের আয় বৃদ্ধির অজুহাতে ফ্রি রেশন দেওয়া বন্ধ করে, ফের টাকা দিয়ে চাল-গম দেওয়া শুরু হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছিলেন যে ১লা জানুয়ারি ২০২৪ থেকে আগামী ৫ বছর ফ্রি রেশন প্রকল্প চালু থাকবে। এই প্রকল্পের জন্য প্রতি বছর কেন্দ্রকে ১১ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি টাকা খরচ করতে হয়, যার ফলে কোষাগারে চাপ বাড়ছে। এর পাশাপাশি, দীর্ঘদিন ধরেই রেশন ডিলাররা কমিশন বৃদ্ধির দাবিতে সরব হচ্ছেন, এবং তাই এমন একটি প্রস্তাব সামনে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।