JKNEWS24 BANGLA: বাবার কোটি টাকার সম্পত্তি হাতছাড়া, লরির দালালি করে দিন কাটাচ্ছেন লোকেশ! লোফার, আসল-নকল, রাখী-পূর্ণিমা, শ্রীমান ভূতনাথ—একটা সময় একের পর এক হিট সিনেমা দিয়ে দর্শকদের মন জয় করেছিলেন তিনি। শুধু যে দক্ষ অভিনেতা ছিলেন তা-ই নয়, তাঁর মা ছিলেন একজন বিখ্যাত নায়িকা এবং বাবা সফল প্রযোজক। রঞ্জিত মল্লিক থেকে প্রসেনজিৎ টলিউডের প্রথম সারির তারকাদের সঙ্গে স্ক্রিন ভাগ করেছেন তিনি। আপনাদের কি আন্দাজ হয়েছে, কার কথা বলা হচ্ছে? তিনি হলেন ৯০-এর দশকের জনপ্রিয় অভিনেতা লোকেশ ঘোষ। সেই সময় একের পর এক ছবিতে অভিনয় করে তাঁর অভিনয় প্রতিভা প্রমাণ করেছিলেন। কিন্তু আজ আর স্টুডিয়োপাড়ায় তাঁকে দেখা যায় না।
লোকেশের অভিনয়জীবন শুরু হয়েছিল পরিচালক অঞ্জন চৌধুরীর হাত ধরে। তাঁর প্রথম ছবির নাম ছিল ‘মুখ্যমন্ত্রী’। মজার ব্যাপার, এই ছবিতে প্রথমে অভিনয় করার কথা ছিল প্রসেনজিতের। তবে এই ছবিই লোকেশের জীবনে একটি বড় পরিবর্তন এনে দিয়েছিল। তবে এই জনপ্রিয় অভিনেতার জীবনের শুরুটা মোটেও সহজ ছিল না। অভিনয়ে আসার আগে লোকেশ বহু বছর লরির দালালি করে দিনযাপন করেছেন। তাঁর ছোটবেলাও ছিল ভীষণ কষ্টের। দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে জীবনের প্রতিটি ধাপে এগিয়ে যেতে হয়েছে তাঁকে।
দার্জিলিংয়ের সেন্ট পলস স্কুলে কেটেছে তাঁর শৈশব। তারপর কলকাতার সেন্ট জ়েভিয়ার্স কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। কিন্তু লোকেশ ঘোষের মনে ছিল অন্য স্বপ্ন—অভিনেতা হওয়ার। একদিন বাবাকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি অভিনেতা হবেন, কিন্তু বাবা কোনও সাহায্য করবে না। যা করবেন, করবেন নিজের দমে।
তবে আত্মসম্মানী বাবার কাছে ছেলের এই ‘সাহস’ মেনে নেওয়া সহজ ছিল না। লোকেশ স্মৃতিচারণ করে বলেছেন, “আমার বাবা একটা সময় পরিচালক-প্রযোজকদের জনে জনে বলেছিলেন, ‘আমার ছেলেকে কাজ দেবে না।’” ফলে ইন্ডাস্ট্রিতে পরিচিতি থাকা সত্ত্বেও কোনও ‘কাকু-জেঠু’ তাঁর জন্য দরজা খুলে দেয়নি। অঞ্জন চৌধুরী ছিলেন ব্যতিক্রম। একসময় প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের চিকেন পক্স হওয়ার কারণে ‘মুখ্যমন্ত্রী’ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান লোকেশ। সেই সুযোগই বদলে দেয় তাঁর জীবন। ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায় অভিনেতার। এরপরই অঞ্জন চৌধুরীর আরেকটি জনপ্রিয় ছবি ‘নাচ নাগিনী নাচ’-এ কাজ করার সুযোগও পেয়েছিলেন লোকেশ।