এ মরসুমের আরও এক জমজমাট ডার্বির সাক্ষী রইল যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন । শনিবারের মোহনবাগান বনাম ইস্টবেঙ্গল ম্যাচে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছিল টানটান উত্তেজনা ও আক্রমণাত্মক ফুটবলের লড়াই (East Bengal Vs Mohun Bagan)। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে কোনও দলই গোল করতে না পারায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে, সেখানেও ফলাফল নির্ধারণ না হওয়ায় শেষমেশ টাইব্রেকারে গড়ায় খেলা । আর সেখানেই ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয় সবুজ-মেরুন শিবিরের দিকে । ফলে ডার্বি জিতে ফের হাসলো মোহনবাগান, আর টানা তিন জয়ের হ্যাটট্রিক হাতছাড়া হল ইস্টবেঙ্গলের ।
এগিয়ে থেকেও জিততে পারল না ইস্টবেঙ্গল
গোল না করতে পারলে ম্যাচ জেতা কতটা কঠিন, সেটা আরও একবার বুঝে গেল ইস্টবেঙ্গল । শনিবার যুবভারতীর মাঠে IFA শিল্ডের ফাইনালে শুরু থেকেই দাপট দেখায় লাল-হলুদ ব্রিগেড । প্রথম ১০-১৫ মিনিট মোহনবাগানও ভালো খেললেও ধীরে ধীরে খেলায় নিয়ন্ত্রণ নেয় ইস্টবেঙ্গল । একের পর এক আক্রমণে গোলের সুযোগ তৈরি করতে থাকে তারা । আর সেই ধারাবাহিকতায় ৩৫ মিনিটের মাথায় বাঁ দিক থেকে দারুণ দৌড়ে উঠে আসেন মহেশ, তাঁর নিখুঁত পাসেই গোল করেন হামিদ আহদাদ । তাতেই ১-০ গোলে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল, উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে লাল-হলুদ গ্যালারি ।
প্রতিপক্ষের কাছ থেকে গোল পাওয়ার পর একেবারে হন্যে হয়ে গোলের খোঁজ করতে থাকে মোহনবাগান । এই সময়টা সবুজ মেরুনের রক্ষণভাগ বড্ড হালকা দেখাচ্ছিল । যদিও সেসবের মধ্যেই 45 মিনিট পেরিয়ে যায় প্রথমার্ধের খেলা । এরপর অতিরিক্ত 2 মিনিটের ম্যাচে জোরালো শট টানেন অপুইয়া তা থেকেই জালে বল না জড়ালেও গোল লাইন পার করায় ম্যাচে সমতায় ফেরে মোহনবাগান । বিরতি থেকে ফিরে এসে ঝাঁঝালো আক্রমণ শানায় দুই যুযুধান প্রতিপক্ষ । কিন্তু তাতেও গোলের দেখা পাচ্ছিল না কেউই। এর মাঝে জয় গুপ্তার সাথে বল দখলের লড়াইয়ে কপাল ফাটে সাহলের । বাগান ফুটবলারের চিকিৎসার জন্য বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ ছিল খেলা ।
এরপর ফের ম্যাচ শুরু হলে আগের মতোই একে অপরের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান । দুই দলের ফুটবলারই আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণে ভরিয়ে তোলে মাঠ । খেলার গতি দেখে মনে হচ্ছিল, হয়তো ম্যাচটি ড্র-ই থেকে যাবে । এদিনের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও আক্রমণাত্মক খেলা দেখে অনেক সমর্থকই স্মরণ করছিলেন পুরনো দিনের ক্লাসিক ইস্ট-মোহন ডার্বির লড়াই । এর মধ্যেই কেটে যায় ৯০ মিনিটের নির্ধারিত সময় । বাগানের এক ফুটবলারের ইনজুরির কারণে কিছুটা সময় নষ্ট হওয়ায় অতিরিক্ত ৪ মিনিট যোগ করা হয় । কিন্তু সেই বাড়তি সময়েও গোলের দেখা পায়নি কোনও দল, ফলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে ।
সব খবর
90+4 মিনিটের খেলা শেষে ফয়সলা না হওয়ায় অতিরিক্ত সময়ের ম্যাচ খেলে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী । সেখানেও একে অপরের বিরুদ্ধে সুযোগের সদ্ব্যবহার করে উঠতে পারছিল না ইস্ট, মোহন কেউই । একদিকে মোহনবাগান চাইছিল লাল হলুদকে আটকে রেখে গোল করে অতিরিক্ত সময়ের ম্যাচেই বেরিয়ে যেতে । তবে সেটা কিছুতেই হতে দেয়নি লাল হলুদ । নিজে গোল না করতে পারলেও প্রতিপক্ষকে গোল করতে দেয়নি তারা । ফলে আক্রমণ প্রতি আক্রমণের মধ্য দিয়ে অতিরিক্ত সময়ের খেলা শেষ হলেও নির্ধারণ করা যায়নি ফাইনালের ফলাফল । যার জেরে বাধ্য হয়েই ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে । আর সেখান থেকেই মেহতাব সিংয়ের দুর্দান্ত বলে 5-4 ব্যবধানে শিল্ড চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেল মোহনবাগান দুই দশক পর IFA শিল্ড জিতল মোহনবাগান) । এদিকে বাগানকে হারিয়ে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখার স্বপ্ন চুরমার হল অস্কারের ইস্টবেঙ্গলের ।


