ধর্মেন্দ্র সিং দেওল (Dharmendra) হিন্দি চলচ্চিত্র জগতের এক কিংবদন্তি নাম, যিনি তাঁর বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্ব ও নিখুঁত অভিনয় দক্ষতার জন্য আজও ভক্তদের হৃদয়ে জায়গা করে আছেন (Dharmendra Biography in Bengali)। ১৯৬০ সালে ‘দিল ভি তেরা হাম ভি তেরে’ ছবির মাধ্যমে তিনি বলিউডে পা রাখেন। এরপর অনুপমা, সত্যকাম, বন্দনি-র মতো ক্লাসিক ছবিতে অসাধারণ অভিনয় করে দর্শকদের মন জয় করেন। তবে ১৯৭৫ সালের কালজয়ী ছবি শোলে-তে ‘বীরু’-র চরিত্রে তাঁর অভিনয় আজও ভক্তদের কাছে অমর হয়ে আছে। ধর্মেন্দ্র তাঁর স্ত্রী হেমা মালিনীর সঙ্গে একাধিক জনপ্রিয় ছবিতে কাজ করেছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও সক্রিয় ছিলেন এবং ভারতের ১৪তম লোকসভার সদস্য ছিলেন। ভারত সরকার ২০১২ সালে চলচ্চিত্রে তাঁর অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তাঁকে পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত করে।
ভারতের জনপ্রিয় অভিনেতা, প্রযোজক ও রাজনীতিবিদ ধর্মেন্দ্র সিং দেওল (Dharmendra Singh Deol) বলিউডের এক কিংবদন্তি নাম। ১৯৩৫ সালের ৮ ডিসেম্বর পাঞ্জাবের লুধিয়ানায় জন্ম নেওয়া ধর্মেন্দ্র ১৯৬০ সালে দিল ভি তেরা হাম ভি তেরে ছবির মাধ্যমে অভিনয় জগতে পা রাখেন। এরপর বন্দনি, আনুপমা, সত্যকাম, চুপ কে চুপ কে এবং বিশেষ করে শোলে ছবির “বীরু” চরিত্রের মাধ্যমে তিনি দর্শকদের মনে চিরস্থায়ী ছাপ ফেলেন।
তাঁর দুর্দান্ত ব্যক্তিত্ব ও অ্যাকশন দৃশ্য তাঁকে “হেম্যান” খেতাবে ভূষিত করে। শুধু অভিনয় নয়, তিনি ভারতের ১৪তম লোকসভার সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ২০১২ সালে পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত হন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি প্রথমে পৃথম কৌর ও পরে অভিনেত্রী হেমা মালিনীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁর সন্তান সানি ও ববি দেওল বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা। ধর্মেন্দ্রর জীবন কাহিনি এক অনুপ্রেরণার গল্প—যেখানে পরিশ্রম, প্রতিভা ও অধ্যবসায় মিলে তৈরি হয়েছে এক অমর সাফল্যের অধ্যায়।
ধর্মেন্দ্র কে ? Who is Dharmendra ?
ধর্মেন্দ্র সিং দেওল (Dharmendra) একজন প্রখ্যাত ভারতীয় অভিনেতা, প্রযোজক ও রাজনীতিবিদ। বলিউডের “হি-ম্যান” নামে খ্যাত ধর্মেন্দ্র তাঁর পাঁচ দশকের দীর্ঘ অভিনয় জীবনে ৩০০-টিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ১৯৯৭ সালে ফিল্মফেয়ার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট পুরস্কারে সম্মানিত হন তিনি। শুধু পর্দার নায়ক নন, বাস্তব জীবনেও তিনি রাজনৈতিক ময়দানে সক্রিয় ছিলেন — ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রার্থী হিসেবে রাজস্থানের বিকানের আসন থেকে ভারতের ১৫তম লোকসভার সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১২ সালে ধর্মেন্দ্র ভারত সরকারের পক্ষ থেকে দেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মভূষণ লাভ করেন।
সব খবর
ধর্মেন্দ্র এর জীবনী – Dharmendra Biography in Bengali
| নাম (Name) | ধর্মেন্দ্র সিং দেওল (Dharmendra) |
| জন্ম (Birthday) | ৮ ডিসেম্বর ১৯৩৫ (8th December 1935) |
| জন্মস্থান (Birthplace) | পাঞ্জাব, ব্রিটিশ ভারত |
| জাতীয়তা | ভারতীয় |
| পেশা | অভিনেতা, প্রযোজক, রাজনীতিবিদ |
| রাজনৈতিক দল | ভারতীয় জনতা পার্টি |
| দাম্পত্য সঙ্গী | প্রকাশ কর(১৯৫৪–বর্তমান)হেমা মালিনী(১৯৮০–বর্তমান) |
| সন্তান | |
| পুরস্কার | পদ্মভূষণ (২০১২) |
ধর্মেন্দ্র এর জন্ম – Dharmendra Birthday
ধর্মেন্দ্র সিং দেওল (Dharmendra) ১৯৩৫ সালের ৮ ডিসেম্বর ভারতের পাঞ্জাবের ফাগওয়ারায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা কিশন সিং দেওল লুধিয়ানার লালটন গ্রামের এক স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন, আর মা ছিলেন এক সাধারণ গৃহিণী। ছোটবেলা থেকেই ধর্মেন্দ্র সিনেমার প্রতি গভীর অনুরাগী ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে ধর্মেন্দ্র দুটি বিয়ে করেছেন। তাঁর প্রথম স্ত্রী প্রকাশ কৌর, যাঁর সঙ্গে তাঁর তিন সন্তান— সানি দেওল, ববি দেওল এবং অজিতা দেওল। সানি ও ববি দুজনেই বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা, আর অজিতা বিয়ের পর বর্তমানে বিদেশে থাকেন। পরে ধর্মেন্দ্র হিন্দি সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেত্রী ও “ড্রিম গার্ল” হেমা মালিনীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের দুটি কন্যা— ইশা দেওল এবং অহনা দেওল, দুজনেই এখন বিবাহিত ও নিজেদের জীবনে প্রতিষ্ঠিত।
ধর্মেন্দ্র এর ক্যারিয়ার
বলিউডের পথে নিজের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে ধর্মেন্দ্র সিং দেওল (Dharmendra) 1958 সালে ফিল্মফেয়ার ট্যালেন্ট প্রতিযোগিতায় অংশ নেন, আর সেখান থেকেই শুরু হয় তাঁর সাফল্য ও খ্যাতির জগতে প্রবেশের যাত্রা। 1960 সালে অর্জুন হিঙ্গরানির পরিচালনায় দিল ভি তেরা হাম ভি তেরে ছবির মাধ্যমে ধর্মেন্দ্র বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন। শুরুতে তিনি বেশ কিছু রোমান্টিক ছবিতে অভিনয় করে দর্শকদের মন জয় করেন। 1966 সালের ফুল অর পাথর ছবিতে একক নায়ক হিসেবে তাঁর উপস্থিতি তাঁকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে দেয় এবং এই ছবির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পান।
1974 সালের পর থেকে ধর্মেন্দ্রকে দর্শকরা দেখতে পান বলিউডের “অ্যাকশন হিরো” রূপে, যেখানে তাঁর দৃপ্ত উপস্থিতি পর্দা কাঁপিয়ে তোলে। তিনি নূতন, মালা সিনহা, সায়রা বানু প্রমুখ শীর্ষ অভিনেত্রীর সঙ্গে একের পর এক সফল চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন — যেমন সুরাত অর সিরাত (1962), বন্দিনী (1963), অনপধ (1962), পূজা কে ফুল (1964), শাদি (1962) ও আই মিলন কি বেলা (1964)। বিশেষ করে আঁখে ছবিতে সিংহের সঙ্গে লড়াই করার দৃশ্যে দর্শকরা তাঁকে নতুন চোখে দেখেন, আর সেখান থেকেই জন্ম নেয় উপাধি — “সিংহের সিংহ ধর্মেন্দ্র”।
ধর্মেন্দ্র একজন রোমান্টিক হিরো থেকে অ্যাকশন হিরো হওয়ার যাত্রাটি খুব ভালোভাবে কাটিয়েছেন। তিনি তার প্রথম দিনগুলিতে নুতন, মীনা কুমারী, সায়রা বানু ইত্যাদির মতো প্রায় সমস্ত সেরা অভিনেত্রীর সাথে অভিনয় করেছিলেন তবে তিনি তার চলচ্চিত্র জীবনের বেশিরভাগ চলচ্চিত্রই করেছিলেন তার স্ত্রী হেমা মালিনীর সাথে। তারা দুজনেই রাজা জানি, সীতা অর গীতা, তুম হাসেন আমি জওয়ান, দোস্ত, চরস, মা, চাচা ভাতিজা এবং শোলে সহ অনেক সুপারহিট ছবিতে কাজ করেছেন।
ধর্মেন্দ্র সিং দেওল (Dharmendra) আজও ভারতীয় সিনেমাপ্রেমীদের মনে অমর হয়ে আছেন মূলত তাঁর অসাধারণ অভিনয়ের জন্য, বিশেষত “সত্যকাম” এবং “শোলে” ছবিতে। 1975 সালে মুক্তিপ্রাপ্ত রমেশ সিপ্পি পরিচালিত শোলে ধর্মেন্দ্রর জীবনের এক ঐতিহাসিক অধ্যায় — যেখানে তিনি “বীরু” চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকের হৃদয়ে চিরস্থায়ী স্থান করে নেন। এই চলচ্চিত্রটি শুধু ধর্মেন্দ্রর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় হিটই নয়, বরং হিন্দি সিনেমার ইতিহাসে এক অমর সৃষ্টি হিসেবে স্বীকৃত।
এর আগে তিনি দিল ভি তেরা হাম ভি তেরে (1960), অনুপমা, সত্যকাম, বন্দিনী প্রভৃতি ছবিতে দুর্দান্ত অভিনয় করে নিজের প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছিলেন। তবে শোলে-এর পর ধর্মেন্দ্র বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি পান এবং বিশ্বের ২৫ জন শ্রেষ্ঠ অভিনেতার মধ্যে তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত হয়। তাঁর ক্যারিয়ারে রোমান্টিক থেকে কমেডি, অ্যাকশন থেকে সিরিয়াস — প্রায় সব ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। সত্যকাম চলচ্চিত্রের সৎ ও আদর্শবাদী চরিত্র হোক বা চুপকে চুপকে-এর মজার অধ্যাপক কিংবা শোলে-এর বীরু, ধর্মেন্দ্র প্রমাণ করেছেন তিনি কেবল একজন নায়ক নন, বরং ভারতীয় চলচ্চিত্রের এক অনন্য প্রতিভা।
ধর্মেন্দ্র এর পুরস্কার সমুহ
ধর্মেন্দ্র সিং দেওল (Dharmendra) তাঁর অভিনয় জীবনে অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। 1966 সালের ফুল অর পাথর ছবির জন্য তিনি প্রথমবারের মতো ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন। এর পাশাপাশি নৌকর বিবি কা এবং আই মিলন কি বেলা ছবির জন্যও তিনি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন।
পরে 1991 সালে ঘায়েল ছবির প্রযোজক হিসেবে ধর্মেন্দ্র জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। 1997 সালে হিন্দি সিনেমায় অসামান্য অবদানের জন্য তাঁকে ফিল্মফেয়ার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। এরপর 2012 সালে ভারত সরকার তাঁকে দেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পদ্মভূষণ-এ ভূষিত করে।
ধর্মেন্দ্র এর ব্যাক্তিগত জীবন
ধর্মেন্দ্র সিং দেওল (Dharmendra) ও হেমা মালিনীর প্রেমের গল্প বলিউডের ইতিহাসে এক অনন্য অধ্যায়। বলিউডের “ড্রিম গার্ল” হেমা মালিনীকে বিয়ে করার জন্য ধর্মেন্দ্র ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন, কারণ সেই সময়ে তিনি ইতিমধ্যেই প্রথম স্ত্রী প্রকাশ কৌরের সঙ্গে বিবাহিত ছিলেন এবং আইন অনুযায়ী দ্বিতীয় বিয়ে করা সম্ভব ছিল না। ধর্মেন্দ্রর প্রথম বিয়ে হয় 1954 সালে, মাত্র 19 বছর বয়সে প্রকাশ কৌরের সঙ্গে। পরবর্তীতে তিনি হেমা মালিনীকে ভালোবেসে দ্বিতীয়বার বিবাহ করেন।
ধর্মেন্দ্রর জন্মস্থান লুধিয়ানা জেলার সাহনেওয়াল গ্রাম, যা এখন একটি জনপদে রূপ নিয়েছে। তিনি আর্য হাই স্কুল এবং ফাগওয়ারার রামগড়িয়া স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন—এটি ছিল তাঁর খালার শহর। তাঁর খালাতো ভাই বীরেন্দর ছিলেন একজন সফল পাঞ্জাবি চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক। দুঃখজনকভাবে, লুধিয়ানায় খোদ জট তে জমিন ছবির শুটিং চলাকালীন সন্ত্রাসের সময় এক আক্রমণে বীরেন্দরকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
FAQ
প্রশ্ন ১: ধর্মেন্দ্র কে?
উত্তর: ধর্মেন্দ্র একজন ভারতীয় অভিনেতা, প্রযোজক এবং রাজনীতিবিদ, যিনি হিন্দি সিনেমায় তাঁর অসাধারণ কাজের জন্য পরিচিত।
প্রশ্ন ২: ধর্মেন্দ্র এর জন্ম কোথায় হয়?
উত্তর: ধর্মেন্দ্র এর জন্ম হয় পাঞ্জাব, ব্রিটিশ ভারতে।
প্রশ্ন ৩: ধর্মেন্দ্র এর জন্ম কবে হয়?
উত্তর: ধর্মেন্দ্র এর জন্ম হয় ৮ ডিসেম্বর ১৯৩৫ সালে।
প্রশ্ন ৪: ধর্মেন্দ্র এর ছেলের নাম কী?
উত্তর: ধর্মেন্দ্র এর দুই ছেলে—সানি দেওল এবং ববি দেওল, যারা দুজনেই বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা।
প্রশ্ন ৫: ধর্মেন্দ্র এর প্রথম স্ত্রীর নাম কী?
উত্তর: ধর্মেন্দ্র এর প্রথম স্ত্রীর নাম প্রকাশ কৌর।
প্রশ্ন ৬: ধর্মেন্দ্র এর দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম কী?
উত্তর: ধর্মেন্দ্র এর দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম হেমা মালিনী, যিনি বলিউডের “ড্রিম গার্ল” নামে পরিচিত।
প্রশ্ন ৭: ধর্মেন্দ্র এর রাজনৈতিক দলের নাম কী?
উত্তর: ধর্মেন্দ্র ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-র সদস্য ছিলেন।
প্রশ্ন ৮: ধর্মেন্দ্র কবে পদ্মভূষণ পান?
উত্তর: ধর্মেন্দ্র ২০১২ সালে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পদ্মভূষণ পুরস্কারে ভূষিত হন।
🔴 প্রতিনিয়ত সর্বশেষ খবর পেতে এখনই Google-এ সার্চ করুন “JKNEWS24 Bangla”। পাশাপাশি, আরও দ্রুত আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন JKNEWS24 WhatsApp Channel — প্রতিদিনের গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ এক ক্লিকে পৌঁছে যাবে আপনার মোবাইলে!


