ঋতুস্রাব নিয়ে সঙ্কোচ বা লজ্জা কিছুই নয়। এটি একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, এবং ঋতুকালীন সময়ের পরিচ্ছন্নতা অনেক বড় বড় স্বাস্থ্য সমস্যা প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে। ঋতুস্রাবের সময় ছাই বা কাপড়ের টুকরো ব্যবহার করা অনুচিত, স্যানিটারি প্যাডই সঠিক উপকরণ। এমন বিষয়গুলো নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য সম্প্রতি মুক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্র এবং এইচসিএল ফাউন্ডেশন একটি আলোচনাসভার আয়োজন করে। যেখানে প্রান্তিক মহিলাদের ঋতুকালীন স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা নিয়ে চিকিৎসকরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভাগ করে নিয়েছেন।
সরকারি সমীক্ষা বলছে, ভারতের প্রায় ৭০ শতাংশ মায়েরা তাঁদের মেয়েকে ঋতুস্রাব সংক্রান্ত বিষয়ে নীরব থাকতে বা প্রশ্ন না করতেই শিখিয়ে থাকেন। এর ফলে অনেক মেয়ের কাছে ঋতুস্রাব এখনো অস্বাভাবিক মনে হয়। বিশেষ করে, গ্রামাঞ্চল ও প্রত্যন্ত এলাকায় ঋতুকালীন সুরক্ষা নিয়ে সচেতনতা এখনও অনেকটাই কম। বেশির ভাগ জায়গায় প্রান্তিক মহিলারা স্যানিটারি প্যাডের ব্যবহার সম্পর্কে জানেনই না, কিংবা জানলেও তা ব্যবহারে অভ্যস্ত নন। এর ফলে নানা ধরনের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে এবং কখনো কখনো মারাত্মক রোগের কারণও হতে পারে। এই বিষয়গুলোর দিকে নজর দেওয়ার সময় এসেছে, যাতে স্বাস্থ্যসমস্যা কমানো যায়।
প্রান্তিক মহিলাদের স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য মুক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্র নিয়মিতভাবে শিবির আয়োজন করে থাকে। সম্প্রতি, গুরুকূল লার্নিং সেন্টারের মহিলা এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের জন্য একটি সচেতনতামূলক শিবির অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই শিবিরটির আয়োজন ও পরিচালনার দায়িত্বে ছিল বেঙ্গল অবস্ট্র্যাটিক অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি, যারা ৯০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলার প্রান্তিক মহিলাদের স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করে আসছে। গ্রামীণ মহিলাদের স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা বাড়ানোর জন্য এই শিবিরে যোগ দেন চিকিৎসক জয়িতা চক্রবর্তী, চিকিৎসক অন্বেষা দত্ত এবং চিকিৎসক সুনোভা ঘোষ। তাঁদের মাধ্যমে মহিলারা বিভিন্ন স্বাস্থ্য বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও পরামর্শ পেয়েছেন।
ঋতুকালীন সময়ে সঠিক পরিচ্ছন্নতার অভাব এবং পুষ্টির ঘাটতি শরীরে নানা রোগের প্রকোপ বাড়িয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে, অনেক মহিলাই রক্তাল্পতায় ভোগেন, যা মূলত ঋতুকালীন সময়ের পুষ্টিকর খাবারের অভাবের কারণে হয়। এই বিষয়টি নিয়ে মহিলাদের সচেতন করলেন চিকিৎসকেরা। পাশাপাশি, জরায়ুমুখের ক্যানসার সম্পর্কে সতর্কও করা হয়। মুক্তির কর্ণধার বিদিশা ঘোষ জানান, এই শিবিরের মূল উদ্দেশ্য ছিল সমাজের পিছিয়ে পড়া মেয়েদের ঋতুস্রাব সংক্রান্ত ভ্রান্ত ধারণা ও কুসংস্কার দূর করা এবং জরায়ুমুখের ক্যানসার নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। মহিলাদের মধ্যে ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে সারভিক্যাল ক্যানসারের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ক্যানসার প্রতিরোধের জন্য সময়মতো প্রতিষেধক গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে দেশে কমবয়সি মেয়েদেরও জরায়ুমুখের ক্যানসারের টিকা দেওয়া হচ্ছে এবং প্যাপ স্মিয়ার নামক পরীক্ষাটি করানোও জরুরি।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join JKNEWS24 Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join NEWS24 |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |