সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকা সফরে গিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সাক্ষাৎ হয় প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে(Pak US Relations)। সেখানেই এক চাঞ্চল্যকর প্রস্তাব রাখেন তিনি। সূত্র অনুযায়ী, পাকিস্তানের ইচ্ছে আরব সাগরে ভারতের কাছাকাছি একটি বন্দর তৈরি করার। এই পরিকল্পনা নিয়ে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে আমেরিকার দ্বারস্থ হয়েছেন। এমনকি পাক সেনা প্রধান আসিম মুনিরও এই বিষয়ে একটি লিখিত প্রস্তাব জমা দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। আমেরিকা সফরের সময় ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেই এই বিষয়টি সামনে আনে পাকিস্তান।
আরব সাগরে বন্দর গড়ার ইচ্ছা পাকিস্তানের
টাইমস গ্রুপের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে পাকিস্তানের নতুন কৌশলগত পরিকল্পনা—আরব সাগরে ভারতের কাছাকাছি নতুন বন্দর গড়ার স্বপ্ন। শুধু ইচ্ছাপ্রকাশই নয়, সূত্রের দাবি, সেই বন্দরের নকশাও ইতিমধ্যেই তৈরি করে ফেলেছে তারা। আশ্চর্যের বিষয়, যে দেশটি এখনও নিজ দেশের মানুষকে পর্যাপ্ত খাবার দিতে পারে না, সেই পাকিস্তান এখন ভারতের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে বালুচিস্তানকে চাপের মুখে ফেলতে চাইছে। এজন্যই তারা আন্তর্জাতিক মঞ্চে আর্থিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে। মুখে জঙ্গিবাদ বিরোধী অবস্থান নিলেও, বাস্তবে পাকিস্তান যে জঙ্গি তৈরির ঘাঁটি—তা বহুবার বিশ্বের সামনে প্রমাণিত। এবারও ‘অপারেশন সিন্দু’-র রিপোর্ট সেই মুখোশ খুলে দিয়েছে। বালুচিস্তানের গ্বোয়াদর জেলার পাসনি শহরের কাছে—যা আফগানিস্তান ও ইরানের সীমান্তবর্তী এলাকা—সেই জায়গাতেই নতুন বন্দর গড়ার পরিকল্পনা করেছে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের আমেরিকা সফর
সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকা সফরে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। আমেরিকা সফরে তাঁর সঙ্গী হন মুনিরও। হোয়াইট হাউসে তাঁদের বৈঠক হয়, যেখানে পাকিস্তানের কৃষি, প্রযুক্তি, খনি ও বিভিন্ন শক্তি প্রকল্পে আমেরিকার সংস্থাগুলির বিনিয়োগ চেয়ে আর্জি জানান শেহবাজ। ট্রাম্প সরকারের আধিকারিকদের সঙ্গেও কথা হয় তাঁদের। তাঁদের হাতেও প্রস্তাবিত বন্দরের নীল নকশা তুলে দেওয়া হয় বলে খবর। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের কাছে এই বিষয়ে মুখ খোলেননি আমেরিকা পাকিস্তান কোনও তরফই মুখ খোলেনি।
পাকিস্তানের সঙ্গে আমেরিকার রেলপথে সংযোগ
তবে জানা গিয়েছে, আরব সাগরে পাকিস্তান যে বন্দর গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়েছে, তা নাকি পুরোপুরি বাণিজ্যিক স্বার্থেই ব্যবহার করা হবে। ওই বন্দরটি সামরিক স্বার্থে ব্যবহার করবে না আমেরিকা। তাই বাণিজ্যিক ব্যবস্থা উন্নত করতেই পাকিস্তানের সঙ্গে রেলপথে সংযোগ গড়ে তোলার কথাও জানিয়েছে আমেরিকা। পাকিস্তানের এই প্রস্তাব ভারতের জন্য যথেষ্ট চিন্তার কারণ হয়ে দাড়াচ্ছে। ট্রাম্প এবং পাকিস্তান সরকার আরব সাগরে বন্দর গড়া নিয়ে কী আবস্থান নেন সেটাই এখন দেখার।
সব খবর
পাকিস্তানের এই প্রস্তাব দিল্লির উদ্বিগ্ন দিল্লি
তবে কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ এই বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখছেন না। ভারতের নাকের ডগায় নতুন বন্দর গড়ার পাকিস্তানের প্রস্তাবকে তারা যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ মনে করছেন। তাঁদের মতে, এ ধরনের কৌশল ভারতের নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক অবস্থার জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। উল্লেখযোগ্য, প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পাকিস্তানের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখার নীতি অবলম্বন করেছিলেন। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফেরার পর থেকে পরিস্থিতি উল্টো হয়ে গেছে। এমনকি মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার ঠিক আগে ট্রাম্প পাকিস্তানের সঙ্গে একটি বিশেষ বৈঠকও করেছিলেন।


