ROHAN KHAN, কলকাতা: অসমের জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী জুবিন গর্গ (Zubeen Garg) আর আমাদের মাঝে নেই। ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে স্কুবা ডাইভিং করতে গিয়ে এক আকস্মিক দুর্ঘটনায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তবে তাঁর গান, তাঁর কণ্ঠ আজও ভক্তদের হৃদয়ে অমলিন। অসম থেকে শুরু করে বাংলা—প্রতিটি জায়গায় তাঁর অগণিত শ্রোতা রয়েছে। সেই অমূল্য স্মৃতিকে ধরে রাখতেই পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার শহরে নেওয়া হয়েছে এক বিরাট উদ্যোগ।
জুবিনের নামেই মঞ্চ ও মূর্তি
কোচবিহারের সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক উৎসব রাস মেলা এবার আরও বিশেষ হতে চলেছে। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড় জমে এই মেলায়, আর এ বছর সেই মেলার প্রধান মঞ্চটির নামকরণ করা হচ্ছে প্রয়াত সংগীতশিল্পী জুবিন গর্গের নামে। শুধু তাই নয়, কোচবিহার পৌরসভা শহরে তাঁর একটি মূর্তি নির্মাণেরও পরিকল্পনা করেছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পৌরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ জানান, “জুবিন গর্গ শুধু অসমের শিল্পী নন, তিনি গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতের সংস্কৃতির এক অনন্য মেলবন্ধন। কোচবিহারের সঙ্গেও তাঁর বিশেষ যোগ ছিল—তিনি বহুবার এখানে অনুষ্ঠান করেছেন, সর্বশেষ ২০১৮ সালে এসেছিলেন। তাই আমরা চাই তাঁর স্মৃতিকে এই শহরে ধরে রাখতে।” রাস মেলায় তাঁর ছবি ও কাটআউট থাকছে, পাশাপাশি পরিবারের অনুমতি নিয়ে শহরে তাঁর একটি মূর্তি নির্মাণেরও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, কোচবিহারের সঙ্গে জুবিন গর্গের সম্পর্ক আরও গভীর করে তুলেছে ভাওইয়া গান। সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলের লোকসংগীতকে তিনি নিজের কন্ঠেই তুলে ধরেছিলেন। তাঁর গাওয়া ‘কাঁদে কানাই বাজেয়া রে শানাই’ গানটি আজও সমানভাবে জনপ্রিয়। গানটি লেখা এবং সুর করেছিলেন নজরুল ইসলাম, যিনি বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর।
নজরুল ইসলাম জুবিনের স্মৃতিচারণ করে বলেছেন, ২০০৫ সালে গুয়াহাটির একটি স্টুডিওতে এই গানটি গেছিলেন তিনি। এর ইমাত্র আট দিন আগেই তিনি বলিউড সিনেমা গ্যাংস্টারের জন্য ‘ইয়া আলি’ গান রেকর্ড করেছিলেন। আর তখনই বলেছিলেন যে, কাঁদে কানাই গানও হিট হবে। সত্যি তাই হয়েছিল। তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে আমরা শোকস্তব্ধ।
সব খবর
সীমান্ত পেড়িয়েও জুবিনের সংযোগ(Zubeen Garg)
প্রসঙ্গত, ভাওইয়া গানের মূল উৎস কোচবিহার জেলা, অসমের গোলপাড়া এবং বাংলাদেশের রংপুর—এই তিন অঞ্চলের মাটিতে গড়ে উঠেছিল এই সঙ্গীতধারা। আর সেই ভাওইয়া সুরকে সীমানা পেরিয়ে এক সেতুবন্ধনে বেঁধেছিলেন জুবিন গর্গ। তাই তাঁর চলে যাওয়ায় শোকের আবহ শুধু অসমেই নয়, ছড়িয়ে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশ জুড়েও।


