গত বৃহস্পতিবার এক ঐতিহাসিক রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট—যেখানে এক লহমায় বাতিল হয়ে গেল প্রায় ২৬ হাজার সরকারি চাকরি। ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) নিয়োগ প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণভাবে অবৈধ ঘোষণা করে কলকাতা হাই কোর্টের রায় বহাল রাখল দেশের শীর্ষ আদালত।
এই রায়ের জেরে রাজ্যের প্রতিটি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে এক গভীর অনিশ্চয়তা। যাঁরা এতদিন শিক্ষকতার চাকরিতে ছিলেন, তাঁদের সামনে এখন শুধুই ধোঁয়াশা—স্কুলে যাবেন কি যাবেন না, ভবিষ্যৎটা কীভাবে গড়ে উঠবে, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না কেউই।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, বিহারে সরকারি চৌকিদার পদের জন্য এতদিন ধরে চলে আসছিল এক প্রথা—এই পদটি বংশানুক্রমিকভাবে দেওয়া হতো। মানে, কোনও চৌকিদার অবসর নিলে, তাঁর পরিবারের কেউ—প্রধানত ছেলে বা অন্য কোনও নির্ভরশীল উত্তরাধিকারী—চাকরিটি পেয়ে যেতেন।
২০১৪ সালের বিহার চৌকিদার (সংশোধনী) বিধি অনুযায়ী, এই নিয়মকে স্বীকৃতিও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এবার এই নিয়মকেই পুরোপুরি অসাংবিধানিক বলে আখ্যা দিল পাটনা হাইকোর্ট।
এই বিষয়ে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সাফ জানিয়ে দিয়েছে—এই নিয়ম ভারতীয় সংবিধানের ১৪ নম্বর (সমান অধিকার) এবং ১৬ নম্বর (সরকারি চাকরিতে সমান সুযোগ) ধারার পরিপন্থী। অর্থাৎ, একজন নাগরিক কেবলমাত্র কোনও পরিবারের সদস্য বলেই সরকারি চাকরি পেয়ে যাবেন—এটা গণতান্ত্রিক দেশের নীতির বিরোধী।
এদিকে পাটনা হাইকোর্টের দেওয়া রায় মেনে নিতে পারেনি বিহার রাজ্য দফাদার চৌকিদার পঞ্চায়েত। তাই সেই রায়ের বিরুদ্ধে এবার সুপ্রিম কোর্টে ওঠে সেই মামলা। এবং সেখানে মামলাকারীরা অভিযোগ করেন যে, পাটনা হাইকোর্ট বংশাক্রমিক নিয়মের সাংবিধানিক বৈধতা আদালতে চ্যালেঞ্জ না করা সত্ত্বেও এই নিয়মকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে। অর্থাৎ বিষয়ের বাইরে রায় দান করেছে। ফলে এক্ষেত্রে হাইকোর্ট এক্তিয়ার অতিক্রম করেছে। তাই সেই নিয়ে করা হয়েছে মামলা। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সেক্ষেত্রে পাটনা হাইকোর্টের সমর্থন করে। এবং হাইকোর্টের রায়কে বহাল রাখে।