রোজায় ইফতারে কী খাবেন?: বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের জন্য রমজান মাস বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতার এক অনন্য অনুভূতি এনে দেয়। আমরা সাধারণত ইফতার শুরু করি এক গ্লাস পানি বা শরবত দিয়ে। এরপর খেজুর খাওয়া সুন্নত, যা শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগায়। সহজপাচ্য শর্করা যেমন দই-চিড়া, গুড়ের পায়েস, ওটমিল বা চিয়া পুডিংও ইফতারে বেশ ভালো বিকল্প হতে পারে। চাইলে এসব খাবারের সঙ্গে বাদাম ও ফল মিশিয়ে আরও পুষ্টিকর করা যায়। এগুলো শুধু শক্তি জোগায় না, বরং পেটও ঠান্ডা রাখে, যা সারাদিন রোজা রাখার পর শরীরের জন্য বেশ উপকারী।
আমাদের অনেকেরই অভ্যাস ইফতারে এক গ্লাস পানি খেয়েই ছোলা, পিঁয়াজি, বেগুনি আর নানা রকম ভাজাভুজি খাওয়া। সত্যি বলতে, এগুলো খেতে দারুণ লাগে! কিন্তু সারা দিন রোজা রাখার পর এমন তৈলাক্ত খাবার খেলে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। ভাজাভুজি খাওয়ার পর বুকজ্বালা, পেটব্যথা বা বুক ধড়ফড় করা সাধারণ সমস্যা। এছাড়া, অতিরিক্ত তেল ও চর্বিযুক্ত খাবার রক্তে ক্ষতিকর চর্বির পরিমাণ বাড়াতে পারে, যা স্বাস্থ্যের জন্য মোটেই ভালো নয়। আর ওজন বৃদ্ধির কথাতো বলাই বাহুল্য—কারণ এসব খাবারে ক্যালরির পরিমাণ থাকে অনেক বেশি।
ইফতারে পুষ্টি উপাদানগুলো যেন সহজেই পাওয়া যায়, তেমন খাবার খেতে হবে। নমুনা হিসেবে এনার্জি বুস্ট করে এমন কিছু খাবারের কথা বলা যায়। যেমন ইফতারের শুরুতেই খেতে হবে দই, লাল চিড়া, কলা, বাদাম, খেজুর—সবকিছু একসঙ্গে মিশিয়ে অথবা গ্রহণ করতে হবে সহজে হজমযোগ্য, যেমন তরলজাতীয় খাবার বা ফলের জুস বা স্মুদি।
মাগরিবের নামাজের পর বা এক-দুই ঘণ্টা পর
ইফতার মানেই সুস্বাদু খাবার, কিন্তু স্বাস্থ্যকর হওয়াটাও গুরুত্বপূর্ণ! তাই পুষ্টিকর ও পরিমিত খাবার বেছে নেওয়া ভালো।
হালিম খুবই পুষ্টিকর একটি খাবার, যা কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাটের ভালো উৎস। তাই এটি ইফতারে রাখা যেতে পারে।
সেদ্ধ ছোলা, মুড়ি, টমেটো, শসার মতো হালকা খাবার পেটে আরামদায়ক হয়। তবে যদি ভাজাপোড়া খেতেই চান, তাহলে এক-দুটি আইটেম সিলেক্ট করুন—যেমন পিঁয়াজু বা আলুর চপ, যা কম তেলে ভাজা হবে।
সবজি ও ডিম বা চিকেন স্যুপ দারুণ স্বাস্থ্যকর, কারণ এতে প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেলস পাওয়া যায়, যা শরীরকে চাঙ্গা রাখে।
বিভিন্ন ফলের সালাদ শুধু পুষ্টিকরই নয়, এটি শরীরকে হাইড্রেট রাখতেও সাহায্য করে।
অনেকে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগেন, বিশেষ করে রোজার সময় যখন খাবারের রুটিন পরিবর্তন হয়। পেটের সমস্যা এড়াতে তোকমার বীজ, ইসবগুলের ভুষি এবং তাজা ফলের রস খুবই উপকারী হতে পারে। এসব উপাদান হজমে সহায়তা করে এবং শরীরকে ভেতর থেকে সুস্থ রাখে। রোজার সময় শরীরকে যথেষ্ট হাইড্রেট রাখা জরুরি, যেন পানিশূন্যতা না হয়। তাই ইফতার ও সেহরিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও তরল খাবার খাওয়া উচিত। সারা দিন রোজা রাখার পর খুব বেশি খাবার না খেয়ে ধীরে ধীরে ও ভালোভাবে চিবিয়ে খেলে হজমের সমস্যা কম হয়। এতে শরীর সুস্থ থাকে এবং পরের দিনের রোজার জন্য নিজেকে ভালোভাবে প্রস্তুত করা যায়।