আধার নিয়মে পরিবর্তন: আধার কার্ড (Aadhaar) নিয়ে সমস্যায় পড়ার দিন শেষ! এবার সরকারের নতুন ঘোষণায় অনেকের জন্যই স্বস্তির খবর এসেছে। কেন্দ্রীয় সরকার আধার আইন সংশোধন করেছে, যার ফলে শুধু সরকারি নয়, এবার বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিও তাদের পরিষেবা প্রদানের জন্য আধার যাচাইকরণ (প্রমাণীকরণ) ব্যবহার করতে পারবে। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে, যা সাধারণ মানুষের জন্য আরও সুবিধা আনবে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট আধার আইনের ৫৭ ধারাকে ‘অপব্যবহারপ্রবণ’ বলে ঘোষণা করে। এই ধারায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিকে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে আধার যাচাইয়ের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
সুশাসন সংশোধনী বিধিমালা ২০২৫
এখন সরকার ‘সুশাসনের জন্য আধার যাচাইকরণ (সমাজকল্যাণ, উদ্ভাবন, জ্ঞান) সংশোধনী বিধি, ২০২৫’ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। এতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিও আধার যাচাইয়ের সুবিধা পেতে পারে, তবে এর জন্য তাদের পরিকল্পনা অনুমোদিত হতে হবে। এখন অনেকের মনে প্রশ্ন, আধার যাচাইকরণের জন্য অনুমতি কীভাবে পাওয়া যাবে?
প্রস্তাব প্রস্তুতি: যদি কোনও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আধার যাচাইকরণ ব্যবহার করতে চায়, তবে তাদের অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে যে এই পরিষেবা বিধি ৩-এর আওতায় পড়ে এবং এটি “রাজ্যের স্বার্থে” গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ, শুধুমাত্র সরকারি কাজ নয়, সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্য বা জাতীয় স্বার্থে ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনুমতি মিলতে পারে।
পরীক্ষা ও অনুমোদন: প্রস্তাবটি প্রথমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগে জমা দিতে হবে। সেখানে যাচাই করা হবে, এটি সত্যিই “রাজ্যের স্বার্থে” কিনা। যদি মন্ত্রক মনে করে যে প্রস্তাবটি জনগণের সুবিধার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তাহলে তারা সুপারিশসহ এটি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠাবে। এরপর চূড়ান্ত অনুমোদনের পরই প্রতিষ্ঠানটি আধার যাচাইকরণের অনুমতি পাবে।
ইউআইডিএআই ও আইটি মন্ত্রকের পর্যালোচনা: আবেদন জমা দেওয়ার পর, ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অব ইন্ডিয়া (UIDAI) সেটি খতিয়ে দেখবে। UIDAI যদি মনে করে যে আবেদনটি যথাযথ, তাহলে তারা সুপারিশ পাঠাবে ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের (IT মন্ত্রক) কাছে। এরপর IT মন্ত্রক সেই সুপারিশের ভিত্তিতে চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে। অর্থাৎ, পুরো প্রক্রিয়াটি কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হবে, যেখানে প্রতিটি ধাপে নিরীক্ষা করা হবে আবেদনকারীর উদ্দেশ্য ও যোগ্যতা।
চূড়ান্ত অনুমোদন: একবার সব পর্যায়ের পর্যালোচনা সম্পন্ন হলে, কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক বা বিভাগ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে আধার যাচাইয়ের অনুমোদন সম্পর্কে জানিয়ে দেবে। অনুমোদন পাওয়া মানে প্রতিষ্ঠানটি এখন সরকারি নিয়ম মেনে আধার যাচাইকরণ করতে পারবে, যা তাদের পরিষেবাকে আরও সহজ ও নির্ভরযোগ্য করে তুলবে।
বর্তমানে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করা এবং সামাজিক কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলির অপব্যবহার রোধ করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মাধ্যমে আমরা জ্ঞান উদ্ভাবন এবং প্রচারিত করার একটি নতুন সুযোগ পাচ্ছি। তাছাড়া, বিধি ৩ এর অধীনে একটি উপ-বিধি অনুযায়ী, আধার যাচাইকরণ পুরোপুরি স্বেচ্ছাসেবী হবে।
কিন্তু, আধার যাচাইকরণের ফলে যে পরিষেবাগুলি উপকৃত হবে তা কী কী? সরকারের মতে, এই সংশোধনী ই-কমার্স, ভ্রমণ, পর্যটন, হোটেল, স্বাস্থ্যসেবা সহ আরও অনেক ক্ষেত্রের মানুষের জন্য সহায়ক হবে। তাছাড়া, উদ্ভাবন ও ডিজিটাল সেবায় মানুষের প্রবেশাধিকারও বাড়বে। এখন, যেকোনো সংস্থা একটি বিশেষ পোর্টালে আধার যাচাইকরণের অনুমতির জন্য আবেদন করতে পারবে, যেখানে তাদের প্রয়োজনীয়তার বিস্তারিত সরবরাহ করতে হবে। এই পদক্ষেপটি সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য স্বচ্ছতা ও অন্তর্ভুক্তি বাড়ানোর মাধ্যমে জনগণের কাছে নির্ভরযোগ্য সেবা পৌঁছানোর পথে বড় একটি পদক্ষেপ।