মোবাইল টাওয়ারের দিন শেষ: বিগত কিছু সময় ধরে বিশ্বজুড়ে আলোচনা চলছে একটি নাম নিয়ে—ইলন মাস্কের (Elon Musk) স্টারলিংক (Starlink)। প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে, ততই নতুন নতুন চমক আসছে, আর ইলন মাস্ক সেই দুনিয়ায় চমক দেওয়ার ক্ষেত্রে সবসময় এক ধাপ এগিয়ে। সম্প্রতি স্টারলিংক এমন এক পদক্ষেপ নিয়েছে, যা দেখে মনে হচ্ছে মোবাইল টাওয়ারের যুগ শেষ হতে চলেছে। স্যাটেলাইট প্রযুক্তির মাধ্যমে মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবা পৌঁছে দেওয়ার নতুন সম্ভাবনা নিয়ে হাজির হয়েছেন মাস্ক। এই উদ্ভাবন শুধু প্রযুক্তির দিক থেকেই নয়, বরং পরিবেশগত এবং আর্থিক দিক থেকেও এক বিপ্লবের সূচনা করতে চলেছে।
২০২৪ সালের শেষ হওয়ার আগেই ইলন মাস্কের কোম্পানি বড় চমক দিয়েছে। তাদের নতুন উদ্যোগ, ডাইরেক্ট-টু-সেল স্যাটেলাইট প্রযুক্তি চালু করার ঘোষণা, ইতিমধ্যেই প্রযুক্তি জগতে আলোড়ন তুলেছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে, সাধারণ মোবাইল টাওয়ারের উপর নির্ভরতা কমে যাবে, এবং স্মার্টফোন সরাসরি স্যাটেলাইটের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে। বিশেষ করে, যেখানে নিয়মিত নেটওয়ার্ক কভারেজ পৌঁছায় না, সেই দুর্গম অঞ্চলগুলিতেও নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ প্রদানই মাস্কের এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য।
Table of Contents
ফাইবার ইন্টারনেটের চেয়ে দ্রুতগতির স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক?
স্টারলিংক তার স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ককে ক্রমাগত আরও শক্তিশালী করে চলেছে। এক রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে ব্যবহারকারীরা স্টারলিংকের স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক থেকে 250-350 Mbps পর্যন্ত গতি পাচ্ছেন। এটি অনেক ক্ষেত্রে ফাইবার ইন্টারনেটের চেয়েও দ্রুত। উদাহরণস্বরূপ, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায় ফাইবার নেটওয়ার্কের গতি মাত্র 50-60 Mbps, যা স্টারলিংকের তুলনায় অনেকটাই কম।
শুধু তাই নয়, স্টারলিংক আরও বড় চমক দিয়েছে—বিভিন্ন বড় টেলিকম সংস্থার সঙ্গে অংশীদারিত্বের ঘোষণা করেছে। এই উদ্যোগের ফলে স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক আরও বিস্তৃত হবে এবং ব্যবহারকারীরা আরও উন্নত সেবা পাবেন। ইলন মাস্ক নিজেই এই বড় ঘোষণাটি জানিয়েছেন, যা প্রযুক্তি প্রেমীদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়েছে।
Direct-to-Cell প্রযুক্তি কী?
এখন নিশ্চয়ই ভাবছেন, এই Direct-to-Cell প্রযুক্তি কীভাবে কাজ করে? সহজভাবে বললে, এটি এমন একটি প্রযুক্তি যা সেল টাওয়ার ছাড়াই সরাসরি উপগ্রহ ও স্মার্টফোনের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করতে পারে। এর মানে হলো, এই প্রযুক্তির সাহায্যে গ্রামীণ বা পাহাড়ি এলাকা—যেখানে সাধারণত নেটওয়ার্ক থাকে না—সেখানেও আপনি দুর্দান্ত নেটওয়ার্ক সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।
স্পেসএক্স জানিয়েছে, ২০২৫ সালের মধ্যে এই প্রযুক্তি টেক্সটিং, কলিং, এবং ডেটা পরিষেবার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হবে। বিশেষ আকর্ষণ হলো, এই পরিষেবা ব্যবহারের জন্য ব্যবহারকারীদের কোনো অতিরিক্ত হার্ডওয়্যার বা অ্যাপ ডাউনলোড করার প্রয়োজন হবে না। এটি মোবাইল নেটওয়ার্ক এবং স্যাটেলাইট প্রযুক্তির মধ্যে এমন এক মেলবন্ধন তৈরি করবে, যা ভবিষ্যতে পুরো যোগাযোগ ব্যবস্থার ধরণই বদলে দিতে পারে। এককথায়, এটি হতে চলেছে এক গেম-চেঞ্জার।