সঞ্জয়কে সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে চরম পদক্ষেপ,গতকাল শিয়ালদা আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক অনির্বাণ দাস আরজিকর কাণ্ডে দোষী সঞ্জয় রায়ের শাস্তিস্বরূপ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ঘোষণা করার পর খানিক অসন্তুষ্ট হয়ে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি মুর্শিদাবাদে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, “পুরোটা এখনও শুনিনি, তবে জানতে পারলাম যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে। আমরা প্রথম থেকেই ফাঁসির দাবি তুলেছিলাম এবং এখনও সেই দাবিতে অটুট আছি। এটা সিরিয়াস কেস। যদি আমাদের হাতে কেসটা থাকত, অনেকদিন আগে ফাঁসির অর্ডার করিয়ে দিতে পারতাম। এই নরপিশাচদের চরমতম শাস্তি হওয়া উচিত।”
আরজি করের রায়ে অসন্তুষ্ট মমতা
এদিকে, সন্ধ্যা নাগাদ সোশ্যাল মিডিয়ায় এক্স হ্যান্ডেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, “আরজি করে চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনাকে আদালত ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ বলল না। যা দেখে আমি রীতিমত স্তম্ভিত। আমি নিশ্চিত যে এটি সত্যিই একটি বিরলতম ঘটনা, যার জন্য দোষীর মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত। কীভাবে বিচার শেষে একে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ বলে মনে করা হল না? আমরা এই জঘন্য ও সংবেদনশীল ঘটনার মামলায় মৃত্যুদণ্ড চাই।” তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবির সঙ্গে মোটেও সহমত নন নিহত চিকিৎসকের মা-বাবা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় বিস্ফোরক পোস্ট মমতার
আর ঠিক পরের দিন সকালেই, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই, আরজি কর কাণ্ডে দোষী সঞ্জয় রায়ের ফাঁসি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের কাছে এবার দ্বারস্থ হল রাজ্য সরকার। এই মর্মে ডিভিশন বেঞ্চে দোষী সঞ্জয় রায়ের সর্বোচ্চ সাজা চেয়ে মামলা দায়ের করেছেন অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার দায়েরের অনুমতি মিলেছে। এই মামলার দায়ের হওয়ায় রাজ্য রাজনীতি ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে।
প্রসঙ্গত, গত ১১ নভেম্বর থেকে শুরু হয় শিয়ালদা আদালতে আরজি করের ঘটনার বিচারপ্রক্রিয়া, যা টানা ৬০ দিন চলে। আদালতে ধৃতের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেছিল সিবিআই। অবশেষে, ১৬২ দিন পর, গত শনিবার আরজি কর মামলার শুনানিতে দোষী সাব্যস্ত করা হয় সঞ্জয় রায়কে। সেই দিনেই সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ), ৬৬ (ধর্ষণ পরবর্তী মৃত্যু), এবং ১০৩(১) (খুন) ধারায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। তবে শাস্তিস্বরূপ ২০ জানুয়ারি তাঁকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা দেয় আদালত।