সুন্দরবনে আগুন: সুন্দরবনের কলমতেজী এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২২ মার্চ) সকালে আগুন লাগে, তবে পানির উৎস দূরে থাকায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বিকেল ৬টা পর্যন্ত আগুন নেভানোর কাজ শুরু করতে পারেননি। এদিকে, আগুন যাতে বনের আরও বড় অংশে ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য বনরক্ষীরা আগুনের চারপাশে ফায়ার লাইন কাটার কাজ শুরু করেছেন। তবে আগামীকাল রোববার (২৩ মার্চ) আগুন নেভানোর কাজ শুরু হবে বলে কালবেলাকে জানিয়েছেন সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নূরুল করীম।
সকালে বনের টেপারবিল এলাকা থেকে প্রথমে ধোঁয়া উঠতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ধীরে ধীরে ধোঁয়া ঘন হতে থাকলে সবাই বুঝতে পারেন, সেখানে আগুন লেগেছে। পরে বন বিভাগ দুপুরে নিশ্চিত করে যে সত্যিই আগুন লেগেছে এবং দ্রুতই অগ্নিনির্বাপণের কাজ শুরু হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়, যাতে আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।
স্থানীয়দের মতে, এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান বনকর্মীরা। তবে সমস্যাটা হচ্ছে—আগুন লাগার জায়গাটি খাল থেকে অনেকটাই দূরে, ফলে পানির উৎসের অভাবে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে। আগুন যাতে বনের ভেতরে আরও ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য বনরক্ষীরা আগুনের চারপাশে ফায়ারলাইন কাটা শুরু করেছেন, যাতে নিয়ন্ত্রণ দ্রুত সম্ভব হয়।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের শরণখোলা স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা আবতাদ-ই-আলম জানান, সুন্দরবনের ভোলা নদী থেকে আগুন লাগার স্থান প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে। দুর্গম এবং জটিল এলাকা হওয়ায় কার্যক্রম চালানো বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই সাময়িকভাবে অভিযান স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে তিনি আশ্বস্ত করেছেন যে, আগামীকাল ভোর থেকেই নতুন উদ্যমে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ শুরু হবে।
ধানসাগর এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য পান্না মিয়া বলেন, শনিবার সকালে সুন্দরবনের কলমতেজী টহল ফাঁড়ির টেপারবিল এলাকায় বনের মধ্যে আগুনের ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। বিষয়টি ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তাদের জানানো হয়।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা, ফরেস্টার বিপুলেশ্বর দাস জানান, আগুন লাগা স্থানটির আশেপাশে কোনো পানির উৎস নেই, যা নেভানোর কাজে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বনের খাল থেকে আগুনের জায়গা প্রায় দুই থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরে, গভীর জঙ্গলের ভেতর। তিনি আরও জানান, খালে জোয়ার এলে নৌপথে পানির পাম্প নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যাতে আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নূরুল করীম জানান, আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। ইতোমধ্যে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছি এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার লাইন কাটা হয়েছে। তবে ভোলা নদী ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের কার্যক্রম এখনই শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে তিনি আশাবাদী, আগামীকাল সকাল থেকেই ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করতে পারবে।