High Blood Pressure: উচ্চ রক্তচাপ এখন অনেকের জন্য সাধারণ সমস্যা হয়ে গেছে। খারাপ জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং মানসিক চাপ—এই সব মিলেই রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। আগে রক্তচাপের সমস্যা সাধারণত একটা নির্দিষ্ট বয়স পার হওয়ার পর দেখা যেত, কিন্তু এখন অনেকেই কম বয়সেই এই সমস্যায় ভুগছেন।
আজকাল অনিয়মিত এবং ভারসাম্যহীন জীবনযাপনের কারণে অনেক অল্পবয়সীর মধ্যেও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। উচ্চ রক্তচাপকে ‘নীরব ঘাতক’ বলা হয়, কারণ এটি অনেক সময় কোনো স্পষ্ট লক্ষণ না দিয়ে শরীরে ক্ষতি করে। দীর্ঘদিন উচ্চ রক্তচাপ থাকলে হার্টফেল, হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের মতো মারাত্মক সমস্যা হতে পারে, যা জীবন সংকটময়ও হয়ে উঠতে পারে। তাই এই সমস্যাকে ছোট করে না দেখে সময় মতো সতর্কতা নেওয়া খুব জরুরি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর এক প্রতিবেদনের মতে, বিশ্বে প্রতি তিনজন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজন উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। আর ভারতে এই সংখ্যা প্রায় ২০ কোটি। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল, এর অধিকাংশ মানুষ জানেনই না যে তাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে। যদি সময় মতো এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা না হয়, তাহলে তা শরীরে নানা জটিলতা এবং অসুস্থতার কারণ হতে পারে। তাই নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করানো এবং যত্ন নেওয়া খুবই জরুরি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রক্তচাপের সমস্যায় খাদ্যাভ্যাসের যত্ন নেওয়া খুবই জরুরি। দিনের শুরুটা হয় সকালের জলখাবার দিয়ে, তাই এই সময় যা খাওয়া হয় তার প্রভাব পুরো দিনের রক্তচাপের ওপর পড়ে। আজকের প্রতিবেদনে আমরা এমন কিছু দুর্দান্ত জলখাবারের আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করব, যা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
High Blood Pressure:
ফলমূল শাকসবজি
নিয়মিত ফল এবং সবজি খাওয়া উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে অনেক সাহায্য করে। যেমন, কলা, আপেল, ডালিম, কমলা, আঙ্গুর, লেবু এবং বেরির মতো ফল এবং সবুজ শাকসবজি, ব্রকলি, টমেটো, ফুলকপি এসব সবজিতে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি থাকে। এই পুষ্টিগুলো রক্তচাপ ভারসাম্য বজায় রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
কলায় প্রচুর পটাশিয়াম থাকে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর আঙ্গুর, লেবু, কমলার মতো সাইট্রাস ফলে ভিটামিন সি এবং পটাশিয়ামের ভালো উৎস পাওয়া যায়। ডালিমে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও পলিফেনল থাকে, যা শরীরের জন্য উপকারী। এই সব পুষ্টিগুলো নিয়মিত গ্রহণ করলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য পাওয়া যায়।
তরমুজ
গ্রীষ্মকাল এসে গেছে, আর এই সময় তরমুজ খেলে গরম কমানোর পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতেও সাহায্য পাওয়া যায়। তরমুজে থাকা পটাশিয়াম শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে, যার ফলে রক্তচাপ ভারসাম্যপূর্ণ থাকে। তরমুজের ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টও উচ্চ রক্তচাপ কমাতে কার্যকর। ভিটামিন সি একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা শরীরের প্রদাহ কমায় এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে, ফলে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
ওটস
যদি আপনার উচ্চ রক্তচাপ থাকে, তাহলে সকালের জলখাবারে ওটস যোগ করা খুব ভালো হবে। ওটসে থাকে প্রচুর ফাইবার, পটাশিয়াম এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। ফাইবার খাবার হজমে সাহায্য করে এবং শরীরে চর্বি জমতে দেয় না, ফলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। আর এই কারণেই রক্তচাপও ভারসাম্য বজায় থাকে।
দই
শরীরে অতিরিক্ত সোডিয়াম থাকা উচ্চ রক্তচাপের অন্যতম কারণ। পটাশিয়াম এই সোডিয়ামের প্রভাব কমাতে সাহায্য করে এবং রক্তনালীগুলোকে শিথিল রাখে, যার ফলে রক্তচাপ ভারসাম্য বজায় থাকে। দই হলো পটাশিয়ামের একটি দারুণ উৎস। তাই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে দই খাওয়া খুব উপকারী। এছাড়া দইতে থাকে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম, যা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে আরও সাহায্য করে।